ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করার পর দেশে ওষুধের ঘাটতি না হওয়া নিশ্চিত করতে জরুরি ব্যবস্থা নিয়েছে পাকিস্তান। পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদ বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্য স্থগিত করেছে। জিও নিউজ জানিয়েছে যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ থাকার কারণে পাকিস্তানে ওষুধের ঘাটতি হতে পারে। তবে, চাহিদা মেটাতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। পাকিস্তানের ড্রাগ রেগুলেটরি অথরিটি (DRAP) জানিয়েছে যে ভারত থেকে আসা ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি, তবে একটি জরুরি পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই প্রস্তুত।
পাকিস্তান তার ওষুধ সরবরাহের ৪০% ভারতের উপর নির্ভরশীল
জিও নিউজ একজন ঊর্ধ্বতন DRAP কর্তার বরাত দিয়ে বলেছে, '২০১৯ সালের সঙ্কটের পর আমরা এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছিলাম। এখন আমরা আমাদের ওষুধের চাহিদা মেটানোর বিকল্প উপায় খুঁজছি। বর্তমানে, পাকিস্তানের ওষুধ শিল্প তার কাঁচামালের ৩০% থেকে ৪০% ভারতের উপর নির্ভরশীল, যার মধ্যে রয়েছে ওষুধ তৈরির উপাদান (API) এবং বিভিন্ন উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম।'
পাকিস্তান এখন চিন, রাশিয়া এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ থেকে বিকল্প উৎস খুঁজছে, যার মধ্যে রয়েছে জলাতঙ্কের টিকা, সাপে কামড়ানোর ওষুধ, ক্যান্সারের ওষুধ, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণপণ্য। যদিও পাকিস্তান সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে যে তারা প্রতিটি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। তবে ওষুধ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য স্থগিতের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় যদি তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে একটি বড় চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে।
সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় ওষুধ শিল্প
পাকিস্তানের স্বাস্থ্য বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, 'পাকিস্তান তার ওষুধের কাঁচামালের ৩০-৪০% ভারত থেকে আমদানি করে। আমরা ভারত থেকে তৈরি পণ্য, বিশেষ করে ক্যান্সার প্রতিরোধী চিকিৎসা, জৈবিক পণ্য, ভ্যাকসিন এবং সিরাম, বিশেষ করে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন এবং অ্যান্টি ভেনম করি। ভারতের সঙ্গে সব ধরনের0 বাণিজ্য স্থগিত করার সরকারের স্পষ্ট ঘোষণা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য মন্ত্রক এখনও ওষুধ আমদানি নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেয়নি। ওষুধ শিল্প আশঙ্কা করছে যে সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হলে তীব্র ঘাটতি দেখা দিতে পারে।'