শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানের মঞ্চ। আর সেখান থেকেই লাগাতার বিষোদগার, কুরুচিকর আক্রমণ পাক সেনাকর্তার। ভারত জল বন্ধ করলে, পাকিস্তান পাল্টা শ্বাস বন্ধ করে দেবে বলে হুমকি দিলেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরি। সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হল, তাঁর এই হুমকি একেবারেই জঙ্গিনেতা হাফিজ সঈদের মতো। এই হাফিজ সঈদই মুম্বই জঙ্গি হামলার মূলচক্রী ছিলেন। দু'জনের কথার সুরে এত মিল সত্যিই আশ্চর্যজনক। এটা কি নেহাতই কাকতালীয়? নিজেই দেখুন-
পাক সেনাকর্তা:
🔴#BREAKING Pakistani military spokesperson @OfficialDGISPR is at a university in Pakistan delivering hate and violence-encouraging speeches against India echoing what terrorist Hafiz Saeed said some years ago !
— Taha Siddiqui (@TahaSSiddiqui) May 22, 2025
Shameful! pic.twitter.com/W7ckNPePOH
পাক জঙ্গিনেতা:
Here is Hafiz Saeed saying the same thing : pic.twitter.com/SLBV5ODojR
— Taha Siddiqui (@TahaSSiddiqui) May 22, 2025
কোনও দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে দাঁড়িয়ে যে এভাবে বক্তৃতা দেওয়া যায়, তা বিশ্বাসই করতে পারছেন না অনেকে। লেফটেন্যান্ট জেনারেলের কথায় আন্তর্জাতিক মঞ্চে তীব্র নিন্দার ঝড়। অপারেশন সিঁদুরে নাকাল হওয়া ও ভারতে আক্রমণের ব্যর্থ চেষ্টার পরেও তাঁর দাম্ভিকতা দেখে অবাক হচ্ছেন অনেকেই।
পাকিস্তানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে আহমেদ শরীফ চৌধুরি বলেন, ‘তোমরা যদি আমাদের জল বন্ধ কর, আমরা তোমাদের শ্বাস বন্ধ করে দেব।’ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জল চুক্তি রিনিউ করা হবে না বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি। আর তাতেই মাথায় বজ্রাঘাত পাক প্রশাসনের।
এদিন আহমেদ হাফিজ চৌধুরি আরও বলেন, ভারতের হাতে সিন্ধু, বেয়াস, রাভি, চেনাব, ঝিলম নদীর জল নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, তা যদি ভারত স্থগিত করে দেয়, তাহলে পাকিস্তানও রুখে দাঁড়াবে।
ভারতের অবস্থান অবশ্য খুব স্পষ্ট। বহুবার জানানো হয়েছে যে, ‘রক্ত ও জল একসঙ্গে বইতে পারে না।’ এই নীতির জেরেই ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-এ জঙ্গি হামলার পরদিন, অর্থাৎ ২৩ এপ্রিল, ভারত বেশ কয়েকটি বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখা। সেই সঙ্গে অটারি সীমান্তের ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্টও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর পরে ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করে। এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালানো হয়। ভারতীয় বায়ুসেনার হামলায় বাহাওয়ালপুরে জইশ-এর ও মুরিদকেতে লস্করের সদর দফতর ধ্বংস হয়। প্রায় ১০০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়। উল্লেখ্য, মুরিদকের জঙ্গিদের শেষকৃত্যে আবেগঘনভাবে শ্রদ্ধা জানাতে দেখা গিয়েছে পাকিস্তানের সেনাকর্তাদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ছবি।
জঙ্গিঘাঁটিতে হামলার পাল্টা প্রত্যাঘাত করে পাকিস্তান। কিন্তু ভারতের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেই হামলা ব্যর্থ করে দেয়। শুধু তাই নয়, ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে ২৩ মিনিটের জন্য জ্যাম করে ১১টি এয়ারবেসে বোমা ফেলে। এই তালিকায় রয়েছে সরগোধা, নুর খান, জ্যাকোবাবাদ ও রহরয়ার খান-এর মত গুরুত্বপূর্ণ এয়ারবেস। ভারতের এই হামলা এতটাই কার্যকর হয় যে, মাত্র দু’দিনের মধ্যে পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির আবেদন জানাতে বাধ্য হয়।
সবশেষে একটি বিষয়ই বলা যায় যে, সমগ্র বিশ্ব পাকিস্তানের জঙ্গিবাদের সমালোচনা করলেও তাতে ইসলামাদের ভ্রুক্ষেপ নেই। এতকিছুর পরেও হুমকির রাজনীতিতে অনড় পাকিস্তান।