নতুন পোপ নির্বাচিত হলেন আমেরিকার কার্ডিনাল রবার্ট প্রেভোস্ট। তাঁর নতুন নাম হল ‘লিও XIV(চতুর্দশ)’। এই প্রথম কোনও আমেরিকান পোপ হলেন।
সিস্টিন চ্যাপেলের ছাদ থেকে সাদা ধোঁয়া ওঠার প্রায় ৭০ মিনিট পর, সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার মাঝের মূল ব্যালকনিতে নতুন পোপ লিও চতুর্দশ এসে দাঁড়ান। সূত্রের খবর, সমস্ত রীতি মেনে, ১৩৩ জন কার্ডিনাল সিলেক্টরদের মতামতের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারে নতুন পোপকে অভিবাদন-শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার মানুষ হাজির হন। তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে ফরাসি কার্ডিনাল ডমিনিক ম্যামবার্টি লাতিন ভাষায় ঘোষণা করেন, 'হাবেমুস পাপাম' (আমাদের পোপ নির্বাচিত হয়েছেন)। মুহূর্তের মধ্যেই সকলে উচ্ছাসে মেতে ওঠেন।
পোপ লিও চতুর্দশের বয়স ৬৯। তিনি শিকাগোর বাসিন্দা হলেও জীবনের বেশিরভাগ সময় পেরুতে মিশনারি হিসেবে কাজ করেছেন। ২০২৩ সালেই তিনি কার্ডিনাল হিসেবে নিযুক্ত হন। প্রচারের আলো থেকে বরাবরই নিজেকে দূরে রেখেছেন তিনি। জনসমক্ষে খুব কমই বক্তব্য রেখেছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছেও তাঁর সাক্ষাৎকার হাতে গোনা।
লিও চতুর্দশ ক্যাথলিক চার্চের ২৬৭তম পোপ। গত মাসে পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে এই পদ খালি হয়েছিল। ফ্রান্সিস প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ ছিলেন। টানা ১২ বছর পোপ থাকাকালীন তিনি বিভিন্ন রীতিনীতির সংস্কার করেছিলেন। আধুনিক বিশ্বে চার্চকে আরও যুগের উপযোগী করার পক্ষপাতি ছিলেন তিনি। মহিলাদের উপাসনার অধিকার এবং এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের প্রতি নরম মনোভাব— তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপ চমকে দিয়েছিল বিশ্বকে।
কনক্লেভের আগে, বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল পোপ ফ্রান্সিসের পথেই এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব রাখেন। তাঁদের মতে, খ্রিষ্টান চার্চকে আরও উদার ও আধুনিক করে তোলা দরকার। অন্যদিকে, কেউ কেউ চাইছিলেন পুরনো ঐতিহ্যে ফিরে যেতে।
মাত্র এক বছর আগেই কার্ডিনাল হয়েছিলেন রবার্ট প্রেভোস্ট। প্রায় অজ্ঞাতপরিচিতই বলা চলে। সেই রবার্ট প্রেভোস্টের হঠাৎ নির্বাচিত হওয়া নিঃসন্দেহে সকলকে চমকে দিয়েছে। পোপ লিও চতুর্দশ সংস্কার না ঐতিহ্যের পথে হাঁটেন, এখন সেটাই দেখার।