
মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করে অমিত শাহ বলেন, বাংলার সীমান্ত দিয়ে যে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, তা শুধু রাজ্যের সমস্যা নয়, গোটা দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন। তাঁর বক্তব্য ছিল, বাংলায় এমন শক্ত সরকার দরকার, যারা অনুপ্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে। শাহের এই মন্তব্যের কিছুক্ষণের মধ্যেই বড়জোড়ার সভা থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'শুধু বাংলাতেই কি অনুপ্রবেশ হয়? কাশ্মীরে কি হয় না?' এর পরই তিনি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ তুলে প্রশ্ন তোলেন, 'পহেলগাঁওয়ে কী ঘটল? পহেলগাঁও কি আপনারা করালেন?'
বীরসিংহপুর ময়দানের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'এসআইআর-এর নাম করে গরিব মানুষের উপর অত্যাচার চলছে। তিনি দাবি করেন, গত ১৪ বছরে রাজ্য সরকার যে উন্নয়ন করেছে, তার পূর্ণ হিসেব রয়েছে এবং তা গ্রামে গ্রামে গিয়ে প্রচার করা হবে।' পানীয় জল থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদাহরণ তুলে ধরেন তিনি।
কেন্দ্রকে নিশানা করে মমতা বলেন, ভোট এলেই বাংলায় 'দুঃশাসনরা' আসে। রাজ্যের বিরুদ্ধে একতরফা দোষারোপ করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর প্রশ্ন, 'বাংলায় নাকি দেড় কোটি মানুষের নাম বাদ যাবে, কেন? এরা তো বাংলাতেই থেকেছে, এরা বাংলারই ভোটার।'
জমি দেওয়া নিয়ে ওঠা অভিযোগেরও জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেললাইন, রাণিগঞ্জ ও জামুরিয়ায় কয়লা প্রকল্প, অন্ডাল বিমানবন্দর বা বনগাঁ-পেট্রাপোল, এই সব উন্নয়নমূলক প্রকল্পে জমি কে দিয়েছে, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করে মমতা বলেন, বাংলায় ১০০ দিনের কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে, আবাস যোজনার টাকা আটকে রাখা হয়েছে, গ্রামীণ রাস্তা ও সর্বশিক্ষা অভিযানের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, 'আমাদের টাকা আমাদেরই দেওয়া হচ্ছে না।'
পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় প্রায় দেড় কোটি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন, অথচ অন্য রাজ্যে বাংলায় কথা বললেই অত্যাচার করা হচ্ছে। 'আমরা তো কাউকে হেনস্থা করি না,' বলেন তিনি।
সবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এত কিছুর পরেও বাংলায় এসে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে আতিথেয়তা দেওয়া হচ্ছে। 'এটা আমাদের দুর্বলতা নয়, আমাদের সংস্কৃতি।'