scorecardresearch
 

জামিনে মুক্ত ৪৪ শতাংশ সন্দেহভাজন জঙ্গি, বাংলাদেশে বাড়ছে জেহাদিদের সক্রিয়তা?

এপার বাংলার মত বাংলাদেশেও ক্রমে শিকড় মজবুত করছে জেহাদিরা। মুক্তমনাদের হত্যা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু, বাঘাযতীনের মূর্তি ভাঙার মতো ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উসকে দিল একটি রিপোর্ট। এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে সেদেশে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের প্রায় ৪৪ শতাংশই জামিনে মুক্ত। তাদের চলাচলে কোনও বাধানিষেধ নেই।

Advertisement
প্রতীকি ছবি প্রতীকি ছবি
হাইলাইটস
  • বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যকলাপ নিয়ে বহুবার প্রশ্ন উঠেছে এদেশে
  • তবে এপার বাংলার মত বাংলাদেশেও ক্রমে শিকড় মজবুত করছে জেহাদিরা
  • সম্প্রতি একটি রিপোর্ট জেহাদিদের কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ আরও উসকে দিয়েছে

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠনের কার্যকলাপ নিয়ে আগে বহুবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এদেশের গোয়েন্দারা। পশ্চিমবঙ্গে আল-কায়দার বিস্তারের পিছনে সক্রিয় জেএমবি, এমনি মনে করে এনআইএ। বাংলা তথা ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ বিস্তারে আপাতত পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকদেরই হাতিয়ার করেছে ওই নিষিদ্ধ সংগঠন।

গতবছর সেপ্টেম্বরে মুর্শিদাবাদ থেকে এনআইএ সন্দেহভাজন ছয় আল-কায়দা জঙ্গিকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, বাংলাদেশের  জামাত-উল-মুজাহিদিন (জেএমবি) ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত জেলা পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুর্শিদাবাদকে টার্গেট করছে। এমনিতে ভারতে নিষিদ্ধ জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ। সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই বর্তমানে জেলে। তাই পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে জঙ্গি কার্যকলাপ বিস্তারে আপাতত পরিযায়ী বাঙালি শ্রমিকদেরই হাতিয়ার করেছে এই নিষিদ্ধ সংগঠন। 

ভারতের পথেই বাংলাদেশ, Covishield পেতে সিরামকে অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা

তবে এপার বাংলার মত বাংলাদেশেও ক্রমে শিকড় মজবুত করছে জেহাদিরা। মুক্তমনাদের হত্যা থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু, বাঘাযতীনের মূর্তি ভাঙার মতো ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উসকে দিল একটি রিপোর্ট। এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে সেদেশে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের প্রায় ৪৪ শতাংশই জামিনে মুক্ত। তাদের চলাচলে কোনও বাধানিষেধ নেই। সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ওয়েবিনারে এই  তথ্য তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস। 

জঙ্গিদের পুনর্বাসন এবং সন্ত্রাস দমনে তাঁদের ভূমিকা শীর্ষক গবেষণা প্রবন্ধে নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) থেকে পাওয়া তথ্য তুলে ধরেন। তাঁর  উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী জামাত-উল-মুজাহিদিন (জেএমবি) ও নব্য জেএমবির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার ২ হাজার ১১৩ জনের মধ্যে বর্তমানে ৯১১ জন জামিনে রয়েছে। আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) গ্রেফতার  ৪৯৯ জনের মধ্যে জামিনে আছে ১৪৬ জন। হরকতুল জিহাদের (হুজি) গ্রেফতার ৩৭৯ জনের মধ্যে জামিনে আছে ১৩১ জন। আর হিযবুত তাহরীরের (এইচটি) গ্রেফতার ৯২১ জনের মধ্যে জামিনে আছে ৫৪৫ জন। এই চার সংগঠনের ৭১ জন জঙ্গি জামিনের পর পালিয়ে গিয়েছে। ফলে তারা ফের হামলা চলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। 

Advertisement

রাষ্ট্রসংঘের চাপের পাল্টা জবাব ঢাকার, ভাসানচরে গেল রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল

অধ্যাপক নিলয় রঞ্জন বিশ্বাস জানান, ২০১৯ সাল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ১০৯ জন জঙ্গি জেলে রয়েছে। তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই যুবক বা মধ্যবয়সী। তাদের কারাবাসের মেয়াদ বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, ৩০ শতাংশই খুব শিগগির জেল থেকে মুক্তি পাবে। জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর তারা যাতে আবারও জেহাদি কার্যকলাপে জড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য বিশেষ নজর দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া জরুরি।

দাবি করা হয়, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশে উত্থান হয় মৌলবাদের৷ বিংশ শতকের নয়ের দশকে ও এই শতাব্দীর শুরুতে জন্ম নেয় হরকত-উল-জেহাদি-ইসলামি, ইসলামিক সমাজ, হিজবুত তাওহিদ-এর মতো একাধিক জঙ্গি সংগঠন৷ তারপর থেকেই বাংলাদেশ জুড়ে ক্রমশ বেড়ে চলে সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনা৷ আওয়ামি লিগের আমলেও গুলশন হামলার মতো দেশে একাধিক নাশকতার ঘটনা ঘটিয়েছে জেহাদিরা৷ ‘খালেদা জিয়া বাংলাদেশে মৌলবাদ বাঁচিয়ে রাখার সুগভীর চক্রান্তে সরাসরি লিপ্ত’ বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও ও সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু। তবে শক্ত হাতে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করে চলেছেন বাংলাদেশের বর্তমান  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।


 

Advertisement