ব্লগার অভিজিৎ হত্যায় ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, কেন যাবজ্জীবন প্রধান আসামি ফারাবিকে?

বছর ছয়েক আগে ঢাকার বুকে প্রকাশ্যে খুন হয়েছিলেন ব্লগার অভিজিৎ রায়। তিনি আর নেই , কিন্তু তাঁর লেখা আজও মানুষকে সাহস যোগায়। মানুষ পড়েন এবং পড়বেন। বিভিন্ন যে তথ্যভিত্তিক লেখাগুলো তিনি লিখে গিয়েছেন তা মানুষকে ধর্ম আর কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে সত্য জানতে শেখায়। । ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ এক ট্রাইব্যুনালে অবশেষে মার্কিন নির্বাসী অধ্যাপক অভিজিৎ রায় খুনের রায় দিল। এই মামলায় ছয় অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

Advertisement
ব্লগার অভিজিৎ হত্যায় ৬ জনের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, কেন যাবজ্জীবন প্রধান আসামি ফারাবিকে?শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে
হাইলাইটস
  • একুশের বইমেলা থেকে ফেরার পথে আততায়ীদের হাতে আক্রান্ত হন মুক্তমনা ব্লগার-অধ্যাপক অভিজিৎ রায়
  • স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর ভাবে আহত হয়েছিলেন স্ত্রী রফিদা
  • সেই আঘাতের ক্ষত এখনও স্পষ্ট রফিদার শরীরে

বছর ছয়েক আগে ঢাকার বুকে প্রকাশ্যে খুন হয়েছিলেন ব্লগার অভিজিৎ রায়।  তিনি আর নেই , কিন্তু তাঁর লেখা আজও মানুষকে সাহস যোগায়। মানুষ পড়েন এবং পড়বেন। বিভিন্ন যে তথ্যভিত্তিক লেখাগুলো তিনি লিখে গিয়েছেন তা মানুষকে ধর্ম আর কুসংস্কারের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে সত্য জানতে শেখায়। 

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ এক ট্রাইব্যুনালে অবশেষে মার্কিন নির্বাসী অধ্যাপক অভিজিৎ রায় খুনের রায় দিল। এই মামলায় ছয় অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড ও একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। ১৯১৫ সালের  ২৭ ফেব্রুয়ারি অভিজিতের বাবা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অজয় রায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনসারীর আদালতে ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী আধিকারিক পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।

 

অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড
অভিযুক্তের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান  মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার আগে কাশিমপুর কারাগারে থাকা চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এই মামলায় দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের হাজির করা যায়নি। রায়ে সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক ওরফে জিয়া, আকরাম হোসেন, মোহাম্মদ আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ও মোহাম্মদ আরাফাত রহমান ওরফে সিয়ামকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এদের মধ্যে মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে জিয়া ও আকরাম হোসেন ওরফে আবির শুরু থেকেই পলাতক। অপর আসামি শফিউর রহমান ফারাবিকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। 

India Today Conclave East 2021: ভারতীয় সেনা না থাকলে খুন হতেন হাসিনাও, ঋণ ভুলবে না বাংলাদেশ

আদালত পাঁচ আসামিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯ সালের ৬(২)(অ) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই ধারাতে ফারাবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এই ধারায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পর্কে রায়ে বলা হয়েছে, আসামি শফিউর রহমান ফারাবী  মামলায় কোনো দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। আসামি আবু সিদ্দিক সোহেল, আরাফাত রহমান সিয়াম এবং মোজাম্মেল হুসাইন সায়মন তাদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামি শফিউর রহমান ফারাবীর নাম উল্লেখ করেননি।  ফারাবী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত না থাকলেও ফেইসবুকে পোস্ট দিয়ে অভিজিৎ রায়কে ‘হত্যার প্ররোচনা দিয়েছিলেন’ বলে তাকে এই মামলায় আসামি করা হয়। সেই অপরাধে তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। রায়ে বলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে ৬(২)(আ)  ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরো ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

বাংলাদেশে নতুন বিতর্ক! বাতিল হচ্ছে BNP-র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব

একুশের বইমেলা থেকে ফেরার পথে আততায়ীদের হাতে আক্রান্ত হন মুক্তমনা ব্লগার-অধ্যাপক অভিজিৎ রায় ও তাঁর স্ত্রী রফিদা আহমেদ বন্যা। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন রফিদা। দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন রফিদা। সেই আঘাতের ক্ষত এখনও স্পষ্ট তাঁর শরীরে।

 

স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়াত অভিজিৎ রায়
স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়াত অভিজিৎ রায়

আসামি শফিউর রহমান ফারাবী ফেসবুক অভিজিৎ রায়, তার স্ত্রী ও মেয়ের ছবি আপলোড করে অভিজিৎ রায়কে চিনিয়ে দিয়ে মূল খুনিদের সহায়তা করেছিল।  তাই ফারাবীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(অ) ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিৎকে খুনের  ঘটনা পুরো বাংলাদেশকে নাড়িয়ে দেয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোড়ন সৃষ্টি করে।  হত্যাকাণ্ডের চার বছর পর ২০১৯ সালের ১৩ মার্চ ছয় জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা পড়ে। সেখানে আনসার আল ইসলামের (আগের নাম আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) পাঁচজনের সঙ্গে ফারাবীকেও আসামি করা হয়। এই মামলায় ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ২৮ জন সাক্ষ্য দেন।


 

POST A COMMENT
Advertisement