scorecardresearch
 

Dilip Kumar: সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকেও প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন দিলীপ কুমার! বলেছিলেন, 'The Ultimate Method Actor'

দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন দিলীপ কুমার (Dilip Kumar)। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শুধু বিনোদন জগৎ না, সমগ্র দেশে। চলচ্চিত্র জগতে ‘ট্রাজেডি কিং’ (Tragedy King) নামেই পরিচিত তিনি। তাঁর বাংলার সঙ্গেও যোগ ছিল অনেকদিন ধরেই।

Advertisement
'দেবদাস' ছবির দৃশ্যে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দিলীপ কুমার 'দেবদাস' ছবির দৃশ্যে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে দিলীপ কুমার
হাইলাইটস
  • দিলীপ কুমারের বাংলার সঙ্গেও যোগ ছিল অনেকদিন ধরেই।
  • এমনকি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখাও তিনি খুব পছন্দ করতেন।
  • ঔপন্যাসিক ও চিত্রনাট্য লেখক নবেন্দু ঘোষের থেকে ভাল করে বাংলা উচ্চারণ শিখেছিলেন তিনি।  

বুধবার সকাল ৭.৩০ নাগাদ খর হিন্দুজা হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার (Dilip Kumar)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে শুধু বিনোদন জগৎ না, সমগ্র দেশে। চলচ্চিত্র জগতে ‘ট্রাজেডি কিং’ (Tragedy King) নামেই পরিচিত তিনি। 

মুহাম্মদ ইউসুফ খান (Mohammad Yusuf Khan) ওরফে দিলীপ কুমারের বাংলার সঙ্গেও যোগ ছিল অনেকদিন ধরেই। এমনকি তাঁর অভিনয় দক্ষতার প্রশংসা করেছিলেন খোদ সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray)। তিনি দিলীপ কুমারকে 'দ্য আল্টিমেট মেথড অ্যাক্টর' (The Ultimate Method Actor) বলেছিলেন। 

dilip kumar paari

দিলীপ কুমারের প্রথম বাংলা ছবি 

১৯৬৬ সালে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত 'পাড়ি' (Paari) ছবির মাধ্যমে বাংলা ছবিতে পা রাখেন দিলীপ কুমার। যদিও আন্দামানের একজন কারাধ্যক্ষ বিজয় উপাধ্যায়ের ভূমিকায় অতিথি শিল্পী হিসাবে দেখা গিয়েছিল দিলীপ কুমারকে। মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ধর্মেন্দ্র। এই ছবিতেই প্রথম একসঙ্গে কাজ করেন দিলীপ কুমার ও ধর্মেন্দ্র। সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছিলেন সলিল চৌধুরী (Salil Chowdhury)। পড়ে ১৯৭২ সালে এই ছবিটি হিন্দিতেও বানানো হয় এবং নাম দেওয়া হয় 'আনোখা মিলন' (Anokha Milan)। 
 

আরও পড়ুন:  ৯৮ বছরে প্রয়াত বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার 

dilip kumar in saagina mahato

'সাগিনা মাহাতো'-এ  দিলীপ কুমার

আরও একটি বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার। সেই ছবিতে ছিলেন তাঁর স্ত্রী সায়রা বানুও (Saira Banu)। ১৯৭০ সালে তপন সিনহা (Tapan Sinha) পরিচালিত সেই ছবি 'সাগিনা মাহাতো' (Sagina Mahato)- আজও বাংলা চলচ্চিত্রের উজ্জ্বল নিদর্শন। ছবিটি ১৯৪২-৩৩- সালের শ্রমিক আন্দোলনের সত্য গল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছিল। কাল্পনিক চরিত্র সাগিনা মাহাতো (ছবিতে দিলীপ কুমার) শিলিগুড়ির একটি কারখানার ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। বলা যায় এটি ব্রিটিশ রাজত্বকালে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের এক চা এস্টেট শ্রমিক নেতার গল্প। সাগিনা মাহাতো শ্রমিকদের অধিকারের জন্য লড়াই করে ব্রিটিশদের অত্যাচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন। 

Advertisement

দার্জিলিং ও কার্শিয়ংকে বেছে নেওয়া হয়েছিল শ্যুটিং লোকেশন হিসাবে। চূড়ান্ত প্রশংসা ও জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ১৯৭৪ সালে এই ছবির হিন্দি রিমেক হয় 'সাগিনা' নামে। তপন সিনহা সহ বাকী কলাকুশলী এক থাকলেও এই ছবিটি সাফল্য পায়নি।সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন সঙ্গীত শিল্পী অনুপ ঘোষাল (Anup Ghosal)। 'সাগিনা মাহাতো'-তে দিলীপ কুমার সায়রা বানু ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন অনিল চট্টোপাধ্যায়, রোমি চৌধুরী, স্বরূপ দত্ত, সুমিতা সান্যাল, কল্যান চট্টোপাধ্যায়, ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়য়ের মতো অভিনেতারা। মস্কো ইন্টার ন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল সহ আরও একাধিক চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা ছবি, সেরা অভিনেতা ও আরও অন্যান্য পুরষ্কার জিতেছিল 'সাগিনা মাহাতো'। 

dilip kumar suchitra sen devdas


সুচিত্রা সেনের সঙ্গে  দিলীপ কুমার

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস অবলম্বনে ১৯৫৫ সালে মুক্তি পায় 'দেবদাস' (Devdas)। হিন্দি ভাষায় তৈরি এই ছবির পরিচালনা করেছিলেন বিমল রায় (Bimal Roy)। ছবিতে দেবদাস চরিত্রেই অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার। অন্যদিকে চন্দ্রমুখী হয়েছিলেন বৈজন্তীমালা (Vyjayanthimala) ও পার্বতীর (পারো) ভূমিকায় নজর কেড়েছিলেন সুচিত্রা সেন (Suchitra Sen)। এই ছবিকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সৃষ্টির মধ্যে একটি ধরা হয়। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন সচিন দেব বর্মণ (Sachin Dev Burman)। কিছু গানে রয়েছে বাউলের ছোঁয়া। এমনকি গানগুলি গেয়েছিলেন মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর, মান্না দে, গীতা দত্ত, তালাত মেহমুদ, আশা ভোঁসলের মতো শিল্পীরা। এই 'দেবদাস'-র ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় পুরষ্কার, ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়াডসের মতো একাধিক পুরষ্কার। 

dilip kumar devdas

আরও পড়ুন:  নক্সাল নেতার বোন! অমিতাভ-দিলীপের নায়িকা সুমিতা 

শোনা যায়, দিলীপ কুমারের হৃদয়ে বাংলার জন্য বিশেষ স্থান ছিল বরাবর। নিতিন বসু, বিমল রায়, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের মতো চলচ্চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। এমনকি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখাও তিনি খুব পছন্দ করতেন। ঔপন্যাসিক ও চিত্রনাট্য লেখ নবেন্দু ঘোষের থেকে ভাল করে বাংলা উচ্চারণ শিখেছিলেন দিলীপ কুমার।  

    

Advertisement