Jaysalmer Jomjomat: জয়সলমেরে সব্যসাচী- মেঘলারা, সোনার কেল্লায় শ্যুটিং অভিজ্ঞতা কেমন?

New Bangla Web Series: মরুভূমিতে বেড়াতে গিয়ে, সেখানের এই বিপদ থেকে কি তারা বেঁচে ফিরতে পারবে? এই গল্প নিয়েই নতুন সিরিজ আনছেন রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম 'জয়সলমীর জমজমাট'। 

Advertisement
জয়সলমেরে সব্যসাচী- মেঘলারা, সোনার কেল্লায় শ্যুটিং অভিজ্ঞতা কেমন?সিরিজের লুকে সব্যসাচী ও মেঘলা (ছবি: সংগৃহীত)

সোনার কেল্লা নামটার সঙ্গে বাঙালির আবেগ জড়িয়ে র‍য়েছে। রজতবাবু, একজন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার, 'সোনার কেল্লা'-র মুকুলের বাড়ি দেখতে চান। সেই ইচ্ছে থেকেই, স্ত্রী,  ও ছেলে- মেয়েদের নিয়ে ছুটি কাটাতে যাত্রা করলেন জয়সলমীরের উদ্দেশ্যে। কিন্তু ভাগ্যের চক্রে তাঁদের এই ভ্যাকেশন কাল হয়ে দাঁড়াবে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তারা। ছুটির আনন্দে কালো ছায়া পড়ে - যখন একটি মাদক দ্রব্যের প্যাকেট হারিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে তারা পড়ে যান এক ভয়ঙ্কর চক্রের ফাঁদে। এদিকে যখন পরিবারটি নিজদের বাঁচার জন্য লড়ছে, একের পর এক গোপন রহস্য ফাঁস হতে থাকে। মরুভূমিতে বেড়াতে গিয়ে, সেখানের এই বিপদ থেকে কি তারা বেঁচে ফিরতে পারবে? এই গল্প নিয়েই নতুন সিরিজ আনছেন রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম 'জয়সলমীর জমজমাট'। 

মঙ্গলবার প্রকাশ্যে এসেছে এই রোমাঞ্চকর -থ্রিলার সিরিজের প্রথম চরিত্র লুক। ঐন্দ্রিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে স্ট্রিমিং হবে এই সিরিজ । সত্যজিৎ রায়ের 'সোনার কেল্লা' ছবির ৫০ বছরের পূর্তি উপলক্ষ্যেই এই ধরণের একটা সিরিজ তৈরির পরিকল্পনা করেছেন পরিচালক। সিরিজের কাস্টিংয়ে র‍য়েছে চমক। 'ভাগাড়-র পর ফের 'ক্লিক'-র নতুন সিরিজে মুখ্য চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীকে। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে দেখা যাবে বিরসা দাশগুপ্ত ও বিদীপ্তা চক্রবর্তীর মেয়ে, অভিনেত্রী মেঘলা দাশগুপ্তকে। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন অভিষেক সিংহ, দেবতনু, অমৃতা দেবনাথ, দেবাশীষ নাথ, শাহির রাজ, মৌমিতা পাল, রাজদীপ পাল, সৌমিত্র বসু, সৌম্য মুখোপাধ্যায়, স্বর্ণাভ সাধুখা, প্রতীক রায়, ওঙ্কার ভট্টাচার্যের মতো শিল্পীরা। পরিচালনার পাশাপাশি সিরিজের গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন রিঙ্গো। এছাড়াও চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা এবং সঙ্গীত পরিচালনাও করেছেন তিনি নিজেই।   

 

 Jaysalmer Jomjomat

রিঙ্গো জানালেন, "ছোটোবেলা থেকে যদি কোনও একটি বই, গল্প, চরিত্র, স্থান বা একটি অভিযান আমাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে থাকে, তবে তা হল সত্যজিৎ রায়ের সোনার কেল্লা। আমার মনে হয়, এটি বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ফেলুদা ভক্তদের ক্ষেত্রেও সত্যি। তাই যখন জানতে পারলাম ২০২৫-এ এই ছবির ৫০ বছর পূর্ণ হবে, তখনই বুঝেছিলাম যে, আমাদের তরফ থেকে একটি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতেই হবে। আর সেখান থেকেই জন্ম নিল 'জয়সলমীর জমজমাট'। এই ছবি এক নিখাদ অ্যাডভেঞ্চার।" 

Advertisement

পরিচালক আরও বলেন "শ্যুট হয়েছে বিশাল থর মরুভূমির রুক্ষ প্রান্তরে, কুলধরা-র ভূতুড়ে ধ্বংসাবশেষে, জয়সলমীরের সোনালী দুর্গে এবং ভারত-পাক সীমান্তের সীমাবদ্ধ অঞ্চলে। চোদ্দ দিন যেন গায়ে কাঁটা লাগা, গা ছমছমে অভিজ্ঞতা। আমরা সেই জায়গাগুলিতেই শ্যুট করেছি যেখানে পঞ্চাশ বছর আগে সত্যজিৎ রায় নিজে শ্যুট করেছিলেন। আশ্চর্যের বিষয়, সব কিছু সেই আগের মতোই রয়ে গেছে। বড় ক্যানভাস, বৃহৎ সাউন্ডস্কেপ, দারুণ অভিনেতা, মনোমুগ্ধকর লোকেশন, আর অবশ্যই, জয়সলমীর। এই সব মিলিয়ে 'জয়সলমীর জমজমাট' সিরিজের অন্যতম আকর্ষণ।" 

সব্যসাচী চৌধুরীর কথায়, "একজন অভিনেতা হিসেবে, এত বছর ধরে আমি বহু প্রোজেক্টে কাজ করেছি, কিন্তু তাদের মধ্যে 'জয়সলমীর জমজমাট' নিঃসন্দেহে সবচেয়ে আলাদা ও অত্যন্ত আনন্দদায়ক এক অভিজ্ঞতা। এই সিরিজে আমার চরিত্রের দুটি দিক রয়েছে। প্রথম দিকটা অনেকটাই আমার সঙ্গে মেলে, কিন্তু দ্বিতীয় দিকটা একেবারেই ভিন্ন। চরিত্রটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। বিশেষ করে ভৌগোলিক পরিস্থিতি, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়া ও অন্যান্য বাস্তবিক প্রতিবন্ধকতা মাথায় রেখে। আজও মনে পড়ে, একদিন যখন গোটা ইউনিট ছাদের উপর শ্যুটিং করছিল, ঠিক তখনই সোনার কেল্লার পশ্চিম দিকে সূর্য ডুবছিল — সেই মুহূর্তটাই যেন এক জাদুকরী অভিজ্ঞতা হয়ে রয়ে গেছে মনে।" 

অভিনেতা যোগ করেন, "জয়সলমীরের সোনালি দুর্গ সব সময়ই আমার প্রিয় ছুটি কাটানোর জায়গা। এর আগে আমি বেলুড় মঠ থেকে মোটরবাইকে চেপে সেখানে গিয়েছি। তবে তখন কল্পনাও করিনি যে তিন বছর পর আবার সেখানে ফিরে যাব - টানা ১৬ দিনের জন্য। সোনার কেল্লার ছাদে রাত ৩টেয় শ্যুট করা সত্যিই রোমাঞ্চকর ছিল। তখন জানুয়ারি মাস, আর রাজস্থানের আবহাওয়া ছিল বেশ কঠিন। তবুও, গোটা অভিজ্ঞতা এতটাই  স্মরণীয়, যে তা চিরকাল মনের মধ্যে গেঁথে থাকবে। আপনি ফেলুদার ভক্ত হোন বা না হোন, জয়সলমীরের সোনার কেল্লা আপনার বাকেট লিস্টে অবশ্যই রাখা উচিত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। 'জয়সলমীর জমজমাট' একটি পারিবারিক বিনোদনমূলক সিরিজ, যেখানে এক হাসিখুশি পরিবার জড়িয়ে পড়ে এক ভয়ংকর মাদক পাচার চক্রের চক্রান্তে।" 

মেঘলা দাশগুপ্ত বলেন, "এই প্রথম আমি রাজস্থানে গিয়েছিলাম এবং ভীষণ খুশি যে আমার কাজই আমাকে সেখানে নিয়ে গেছে। এই চরিত্রের জন্য প্রস্তুতি নেওয়াটা একেবারেই আলাদা ছিল। দর্শকেরা সেটার কারণ বুঝবেন যখন সিরিজটি দেখবেন। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি, এরকম চরিত্র আমি আগে কখনও করিনি। এই সিরিজের শ্যুটিং আমার মনে চিরকাল জায়গা করে নেবে, কারণ এর মাধ্যমে আমি কিছু সত্যিকারের বন্ধুত্ব পেয়েছি, আর পেয়েছি একঝাঁক প্রতিভাবান সহ-অভিনেতা। সোনার কেল্লার ভেতরে  শ্যুট করার অভিজ্ঞতা যেন স্বপ্নপূরণের মতো ছিল। হ্যাঁ, প্রতিটি কাজের মতো কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। কিন্তু আমরা খুব পরিশ্রম করেছি এবং নিজেকে ছাপিয়ে যেতে চেয়েছি প্রতিটি পদক্ষেপে। এটি একটি রোমাঞ্চকর গল্প, যেখানে বিনোদনের সঠিক মিশেল রয়েছে।" 

 

POST A COMMENT
Advertisement