বাংলা বিনোদন জগতের বর্তমানে প্রথম সারির চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের (Shiboprosad Mukherjee) নাম আসে। ইন্ডাস্ট্রিতে যদিও সকলের কাছে শিবু নামেই পরিচিত সে দীর্ঘদিন ধরে। এই বছর ২০ মে, শিবপ্রসাদের ৪৭ তম জন্মদিন।
চলচ্চিত্র পরিচালক নন্দিতা রায়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেন শিবপ্রসাদ। প্রায় প্রতিটি ছবিই এক অন্য সুতোয় গাঁথেন এই পরিচালকদ্বয়। মানবিক ছবিতেও উঠে আসে পারিবারিক রোজনামচার খুব চেনা ক্রাইসিস, যা দেখে যেন মনে হয় ঠিক পাশের বাড়ির গল্প। 'ইচ্ছে' ছবির মাধ্যমে পরিচালনায় হাতেখড়ি শিবপ্রসাদের।
এরপর একে একে 'অলিক সুখ', 'অ্যাক্সিডেন্ট', 'রামধনু', 'প্রাক্তন', 'হামি', 'কণ্ঠ', 'গোত্র', 'বেলা শেষে'-তে ঝুলি ভরেছে। গড়েছেন নিজেদের প্রযোজনা সংস্থা উইন্ডোজ প্রোডাকশন হাউজ। একাধিক জাতীয় পুরস্কার সহ আরও বহু স্বীকৃতিও মিলেছে তাঁদের কাজের।
উত্তর কলকাতার ছেলে শিবপ্রসাদ রামকৃষ্ণ মিশন ও হিন্দু স্কুলে পড়ার পর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। যদিও স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পরই থিয়েটার নিয়ে পড়াশোনা শুরু হয় শিবপ্রসাদের।
বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্তের থেকে প্রশিক্ষণ পাওয়ার পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে কাজ করেছেন শিবু। ১৯৯৫ সালে টেলিভিশনে অভিনয়ে পা রাখেন। আর তারপর থেকে 'একুশে পা', 'জন্মভূমি', ঘুম নেই' ইত্যাদি জনপ্রিয় ধারাবাহিকগুলিতে অভিনয় করেন তিনি।
বলা যায় বাংলা টেলিভিশনের দর্শক রিয়্যালিটি শোয়ের স্বাদ প্রথম পায় শিবপ্রসাদের হাত ধরেই। শো-টির নাম ছিল 'ঋতুর মেলা ঝুম তারা রা রা'।
এছাড়াও 'দহন', 'চার অধ্যায়', 'বাড়িওয়ালী', 'জামাই নম্বর ১', 'রামধনু', 'হামি, 'কণ্ঠ'- র মতো একাধিক ছবিতে নিজের অভিনয় দক্ষতা নিয়ে দর্শকদের মন জিতেছেন শিবপ্রসাদ। 'কণ্ঠ' ছবিতে আরজে অর্জুন চরিত্রে শিবপ্রসাদ অভিনয় করেছিলেন, যেখানে এই চরিত্রটি ছিল একজন ল্যারিঞ্জেকটমি রোগীর।
ছবি মুক্তির পর যে সমস্ত মানুষ ল্যারিংক্স (Larynx) বা স্বরযন্ত্র হারিয়েছেন তাঁদের জন্যে তৈরি হয়েছে 'কন্ঠ ক্লাব' (Konttho Club / Laryngectomy Club)। ক্যান্সারে আক্রান্ত যে সমস্ত রোগী নিজেদের 'ভয়েস বক্স' হারিয়েছেন, তাঁদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে সহায়তা করার সঙ্গে সচেতনতা সৃষ্টি করে এই বিশেষ ক্লাব। এমনকি রোগীরা এখানে পান সঠিক দিশা। ২০১৯ সালের ২৮ মে কলকাতায় প্রথম খুলেছিল 'কন্ঠ ক্লাব'। গত ১৪ ডিসেম্বর কর্ণাটক সরকারের উদ্যোগে চালু হয়েছে সর্বভারতীয় 'কন্ঠ ক্লাব' বা ল্যারিঞ্জেকটমি ক্লাব।