কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায়। যিনি দেশকে অস্কারের স্বাদ এনে দিয়েছিলেন। তাঁর পথের পাঁচালি থেকে অপুর সংসার, জয় বাবা ফেলুনাথ থেকে সোনার কেল্লা, নায়ক থেকে গুপি গাইন বাঘা বাইন একের পর এক চিরস্মরণীয় সিনেমা উপহার দিয়ে বাংলা সিনেমার জগতকে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন। পরিচালক হিসাবে খাসা হলেও তিনি কিন্তু আদপে একজন খাঁটি বাঙালি। বাঙালি যে খানিক হলেও ভোজনরসিক—এ কথা অস্বীকার করার জো কোথায়! ঝাঁঝ আর মিষ্টি খাবার তৈরির ঘনঘটা যেখানে, সেখানে খাবারের প্রতি প্রেম থাকবে না তা কী করে হয়? তেমনি কিংবদন্তি সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়, তিনিও এর বাইরে নাকি!
সত্যজিৎ রায় ছিলেন খাদ্যরসিক
একে একে যদি বলি, ফেলুদার গোয়েন্দাগিরির মুরগীর মাংস, কৈলাসে কেলেঙ্কারির রুটি, মাংস, তরকা, মিহিদানা, নতুন গুড়ের সন্দেশ, খিচুড়ি, ইলিশ মাছ ভাজা বা জয় বাবা ফেলুনাথ–এর সেই মাংসের কালিয়া, ডাল, ভাত, মাছের ঝোল, দই, জিলিপি, রাবড়ির কথা—তাও যেন কম হয়ে যায়। আসলে পরিচালক-সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায় খেতে খুবই ভালোবাসতেন। তিনি ছিলেন খাদ্যরসিক। তাঁর সিনেমা ও বইতেই সেই নিদর্শন কিন্তু আমরা দেখতে পাই।
আরও পড়ুন: স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ-চর্চার মাঝেই সোহমের সঙ্গে প্রেম, জবাব দিলেন শোলাঙ্কি
মাছ খেতে অতটা ভালোবাসতেন না
পুরনো এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায় সত্যজিৎ রায়ের প্রিয় খাবার সম্পর্কে। বাড়িতে একটু লুচি, আলুর দম, বেগুন ভাজা আর ডাল হলেই সত্যজিৎ রায় দারুণ খুশি হতেন। মাছ-টাছ অতটা খেতে দেখা যেত না। তবে অভিনেতা অনুপ ঘোষালের বাড়ি গেলে পরিচালক নাকি কবজি ডুবিয়ে খেতেন। অনুপ ঘোষালের বাড়িতে সরষে বাটা, আর কাঁচালঙ্কা দিয়ে যে ইলিশ মাছটা করা হতো, সেটার দুটো পিস তিনি খেতেন।
পাঁঠার মাংস খেতে ভালোবাসতেন
সত্যজিৎ রায় আবার পাঁঠার মাংস খেতে খুব পছন্দ করতেন। বলতেন, মুরগীর মাংসের আবার কোনো স্বাদ আছে নাকি! তবে খাবার–দাবারে যত খুঁতখুঁতেই হোন না কেন কর্মক্ষেত্রে কিন্তু তিনি অন্যরকম। স্টুডিওতে দুটো স্যান্ডউইচ, আর একটু দই হলেই তাঁর হয়ে যেত। এছাড়াও শোনা যায়, সত্যজিৎ রায় বিউলির ডাল বা অড়হর ডাল খেতে খুব ভালোবাসতেন। শ্যুটিংয়ের সময় নাকি সত্যজিৎ রায় মুড়ি, ঘি ও দানা চিনি দিয়ে মেখে খেতে ভালোবাসতেন।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ আগুন স্টুডিও পাড়ায়, দাউ দাউ করে জ্বলছে টালিগঞ্জের NT1
কন্টিনেন্টাল খাবার খেতেও পছন্দ করতেন সত্যজিৎ
বাবার পছন্দের খাবার নিয়ে এক স্মৃতিকথায় সন্দীপ রায় বলেছিলেন, 'ছোটবেলায় আমরা মাঝেমধ্যেই পার্কস্ট্রিটের স্কাইরুমে কন্টিনেন্টাল খাবার খেতে যেতাম। বাড়িতে কখনো-কখনো রয়েলের বিরিয়ানিও আসত। তবে বাবা কিন্তু খুব একটা পাঁচতারা হোটেলে যেতেন না।'