সরু অলি গলি, গায়ে গায়ে ঘর, নোনা ধরা রংচটা দেওয়াল...এরকমই ছিল বেহালার বাগানবাড়ি বস্তি। ছিল? এখন নেই? এই প্রশ্নটা নিশ্চই মনে জাগছে।
তাহলে বলি, না নেই। সেখানে গেলে এখন মনে হবে সদ্য কারও বিয়ে হয়েছে। সেখানে রয়েছে একটা উৎসবের আমেজ। সৌজন্য স্টার জলসার 'গাঁটছড়া' এবং আর্ট ফেস্টের শিল্পীরা। আসুন খুলে বলি তাহলে... গত বছরের শেষেই এই চ্যানেলে শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক 'গাঁটছড়া'। যা ইতিমধ্যেই দর্শকদের মনে বেশ খানিকটা জায়গা করে নিতে পেরেছে।
চ্যানেলের উদ্যোগে এবার 'গাঁটছড়া' থিমে সেজে উঠল এই বস্তি। দেওয়ালগুলি ভরে উঠল এমন ছবিতে যা মানুষের সম্পর্কের কথা বলে। রং ওঠা দেওয়াল রঙিন হল গাছ কৌটো, ঘট, বর-কনে, প্রজাপতি, কুলোর মতো বিয়ের নানা মাঙ্গলিক মোটিফের গ্রাফিটিতে।
শিল্পী সনাতন দিন্দা এবং তার দলবল মিলে জনবসতিপূর্ণ এই এলাকার দেওয়ালকেই ক্যানভাস বানিয়ে সাজিয়ে তুললেন গ্রাফিটিতে, যা পথচারীদের যথেষ্ট নজর কাড়ছে।
এই বিশাল কর্মকাণ্ডকে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই প্রসঙ্গে সনাতন দিন্দা বললেন, "গাঁটছড়া মানে বিয়ে, মূলত নারী-পুরুষের বন্ধন। সেটাকে নিয়ে কাজ করেছি। একটা উৎসব মুখর প্রাঙ্গণ তৈরি করতে পেরে আমরা খুব খুশি।"
শিল্পী যোগ করলেন, "খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। এভাবে বাঙালির বিয়ে নিয়ে ছবি আঁকা, আমার মনে হয় কলকাতা কেন, পশ্চিমবাংলাতেও বোধ হয় এরকম বড় গ্রাফিটি আগে হয়নি।"
গত প্রায় দু'বছর ধরে অতিমারীর জেরে প্রভাব পড়েছে শিল্পীদের জীবনে। তাই এরকম একটা কাজে অর্থনৈতিকভাবেও সুবিধা হয়েছে।
প্রথমে রেইকি করে ভাঙাচোরা, বিবর্ণ দেওয়ালগুলিকে বালি, সিমেন্ট ও সাদা রঙে ঢেকে সাজান হল বাঙালি সংস্কৃতির গ্রাফিটিতে।
'গাঁটছড়া' শব্দের অর্থ, 'বন্ধন'। এমন একটি বন্ধন যা সম্পূর্ণরূপে আমাদের ভাগ্যের উপর ভিত্তি করে, প্রেম এবং প্রতিশ্রুতি দ্বারা গঠিত। আমরা যা ভাবি, তা সব সময় বাস্তবে হয় না। বরং, নিয়তি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্যকিছু লিখে দেয়, আমাদের জীবনে।