বর্তমানে পর্দায় সেভাবে না দেখা গেলেও দর্শকদের মনে এখনও জায়গা করে রেখেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম প্রবীণ অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনীতির ময়দানেও তিনি যথেষ্ট পরিচিত। আজ ১১ এপ্রিল, সন্ধ্যার ৮০ তম জন্মদিনে এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক তাঁর কিছু অজানা তথ্য।
সন্ধ্যা রায়ের জন্ম হয় নবদ্বীপ জেলার পোড়ামাতলায়, তাঁর দিদিমার বাড়িতে। শোনা যায় পোড়ামাতলায় ঢিল বেঁধে মানত করেছিলেন তাঁর মা। পরে কলকাতায় এসে পড়াশোনা ও বড় হওয়া। কিন্তু তবুও ওই মন্দিরের প্রতি তাঁর একটা আলাদা টান আছে। যে কোনও কাজে ওই দিকে গেলেই পোড়ামাতলায় পুজো দেন সন্ধ্যা রায়।
খুব ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারানোর পর থেকেই পরিবারে ছিল অত্যন্ত অভাব। তখন তাঁর বয়স মাত্র বারো বছর। পরিচিত একজনের সঙ্গে কাজের তাগিদে পৌঁছেছিলেন স্টুডিয়ো পাড়ায়। সেখানে তখন চলছিল রাজেন তরফদারের 'অন্তরীক্ষ' ছবির শ্যুটিং। সেখানে প্রয়োজন ছিল বারো-তের বছরের এক মেয়ের চরিত্রের। সেদিন ভাগ্য সঙ্গ দিয়েছিল তাঁর। সেই ছবিতে অভিনয় করে সকলের নজর কেড়েছিলেন সন্ধ্যা।
এরপর রাজেন তরফদারের 'গঙ্গা', 'জীবন কাহিনী', 'পালঙ্ক', 'নাগপাশ'-এ কাজ করেছিলেন সন্ধ্যা রায়। এছাড়া 'মায়া মৃগয়া', 'কঠিন মায়া', 'বন্ধন', 'পলাতক', 'তিন অধ্যায়', 'আলোর পিপাসা', 'ফুলেশ্বরী', 'সংসার সীমান্তে', 'নিমন্ত্রণ', 'দাদার কীর্তি' , 'ছোট বউ'-র মতো একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
চলচ্চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদারের একাধিক ছবিতে মুখ্য চরিত্রে দেখা গেছে সন্ধ্যা রায়কে। তরুণ - সন্ধ্যা দুজনে বিয়ে করলেও পরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়। মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে জিতে ২০১৪- ২০১৯ সালের সাংসদ ছিলেন তিনি।
শোনা যায় মহানায়ক উত্তম কুমার সন্ধ্যা রায়কে ভালবেসে 'সন্ধ্যামণি' ডাকতেন। 'সূর্যতপা', 'তিন অধ্যায়'-র মতো ছবিগুলিতে তাঁরা স্ক্রিন শেয়ার করেছিলেন।
শাড়িতেই সবচেয়ে স্বাচ্ছদ্য তিনি। সত্যজিৎ রায়ের 'অশনি সংকেত' ছবির জন্য একবার বার্লিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে গিয়েছিলেন সন্ধ্যা রায়। সকলে বিদেশী পোশাক পরলেও তিনি সেই চলচ্চিত্র উৎসবের রেড কার্পেটে হেঁটেছিলেন লাল পাড় সাদা সিল্ক শাড়ি ও সঙ্গে মানানসই মুক্তোর সেট পরে।