scorecardresearch
 

Exclusive:'কোয়ালিটি ছাড়া কোথাও টেকা যায় না,'নেপোটিজম থেকে রাজনীতি, অকপট রুদ্রনীল

 সমসাময়িক পরিস্থিতি ও চারিদিকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব কায়দায় সোশাল মিডিয়ায় সরব হন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। লকডাউনের শুরুর দিকে মধ্যবিত্ত বাঙালিদের নিয়ে তাঁর লেখা মনোলগ ভাইরাল হয়েছিল। সম্প্রতি নেটপাড়ার 'সোশালিস্ট'-দের নিয়ে তাঁর পোস্ট  চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজনীতি থেকে স্বজনপোষণ, অভিনয় থেকে টলিউডের গডফাদার নিয়ে বিস্ফোরক রুদ্রনীল ঘোষ। কথা বললেন সৌমিতা চৌধুরীর সঙ্গে।

Advertisement
রুদ্রনীল ঘোষ (ছবি সৌজন্য: ফেসবুক) রুদ্রনীল ঘোষ (ছবি সৌজন্য: ফেসবুক)
হাইলাইটস
  • রাজনীতি থেকে স্বজনপোষণ, বিস্ফোরক রুদ্রনীল ঘোষ।
  • সম্পূর্ণ নিজস্ব কায়দায় সোশাল মিডিয়ায় সরব হন অভিনেতা।
  • টলিউডের 'গডফাদার' প্রসঙ্গেও কথা বললেন তিনি।

সমসাময়িক পরিস্থিতি ও চারিদিকে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে সম্পূর্ণ নিজস্ব কায়দায় সোশাল মিডিয়ায় সরব হন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। লকডাউনের শুরুর দিকে মধ্যবিত্ত বাঙালিদের নিয়ে তাঁর লেখা মনোলগ ভাইরাল হয়েছিল। সম্প্রতি নেটপাড়ার 'সোশালিস্ট'-দের নিয়ে তাঁর পোস্ট  চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। রাজনীতি থেকে স্বজনপোষণ, অভিনয় থেকে টলিউডের গডফাদার নিয়ে বিস্ফোরক রুদ্রনীল ঘোষ। কথা বললেন সৌমিতা চৌধুরীর সঙ্গে।

প্রশ্ন : মধ্যবিত্ত, পুজোর আগে হাইকোর্টের রায়, এখন সোশালিস্টদের নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। লেখার বিষয় হঠাৎ এটা কেন?

রুদ্রনীল : সেই অর্থে তো আমি কবি নই। লোকে আমার লেখাকে কবিতা বলে। আমি নিজে একজন পারফর্মার। আমার মনে হয়েছে এটা আমার কমিউনিকেশনের ধরন। আমি যেটা দেখতে পাই সেটা নিয়ে আমি লিখি। 

প্রশ্ন : এটাই কি তাহলে আপনার প্রতিবাদের ভাষা? 

রুদ্রনীল:  সোশাল মিডিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জীবনে। প্রচুর মানুষ রয়েছেন আমাদের আশেপাশে যারা এত বেশি সোশাল মিডিয়ায় ঢুকে যান যে, পাশের বাড়ির খবর টুকু রাখেন না। সত্য মিথ্যা যাচাই না করে, সোস্যাল মিডিয়ার কিছু আপডেট পড়েই তাঁরা রিঅ্যাক্ট করা শুরু করেন। বিদেশে এই মাধ্যমটা শুরুই হয়েছিল এই কর্মব্যস্ত মানুষদের একটা ভার্চুয়াল বন্ধুত্বের সমাজ তৈরি করার জন্যে। আমার মনে হয় আমাদের এখন সচেতন হওয়ার সময় এসে গেছে। 

 

 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 

A post shared by Rudranil Ghosh (@rudranilrudy)

Advertisement

 

প্রশ্ন : আপনি কি নিজেকে মধ্যবিত্ত বলে মনে করেন? 

রুদ্রনীল : ১০০ শতাংশ! যেদিন আমি আমার বাড়িতে ফিরে জুতোটা ঠিক জায়গায় খুলবোনা, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখবো কিংবা যে ঘরেই পাখা চলুক না কেন সেটা বন্ধ করার জন্যে আমার স্যুইজে হাত যাবে না, সেদিন আমি মধ্যবিত্তপনা থেকে সরে যাব।

প্রশ্ন : আপনি তো কারও ব্যাকআপ ছাড়া এতোটা স্ট্রাগেল করে এই জায়গায় পৌঁছেছেন। আপনার কি মনে হয় স্বজনপোষণ থাকলেও ট্যালেন্ট ছাড়া এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা যায়?

রুদ্রনীল : কোয়ালিটি ছাড়া কেউ কোথাও সারভাইভ করতে পারে না। আর কোনও নামী মানুষের ছেলে বা মেয়ে হওয়ায় কোন অপরাধ নেই। বলিউডে পারিবারিক লোকজনকে বেশি প্রমোট করা হয় কারণ সেখানে অনেক টাকা এবং পরিচিতি। কোনও রকমে একটা ছবিতে নাম হলেই, প্রায় ৫ থেকে ১০ কোটি টাকা করে এক একটা ছবিতে তাঁদের আয় হতে শুরু করে দু-তিন বছর পর থেকেই। সেই তালিকায় আমাদের টলিউড পড়েই না। এখানে যদি কেউ সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পায় সেটা হয়তো মেরেকেটে ৪০ লাখ টাকার আশেপাশে। সেই জন্যেই হয়তো বহু ছেলে-মেয়ের মধ্যে শিল্পীসত্ত্বা থাকলেও, তাদের বাবা-মায়েরা টলিউডের দিকে এগোতে দিতে চান না। বড্ড স্ট্রাগেল তো। সেই আন্দাজে অর্থকরি নেই। আর যদি কথা ওঠে 'স্বজনপোষণের', তাহলে পরিচালক- প্রযোজক তো অবশ্যই তাঁর পছন্দের মানুষকে নিয়ে কাজ করবেন। বলিউডে যে সমস্ত অভিনেতারা রাজত্ব করছেন তার মধ্যে থেকে ৮০ শতাংশ কোনো ব্যাকআপ ছাড়া।তাহলে শুধুমাত্র ২০ শতাংশ কে নিয়ে আমি আলোচনা করব কেন? 

'চ্যাপলিন' ছবিতে রুদ্রনীল ঘোষ (ছবি সৌজন্য:ফেসবুক)

প্রশ্ন : টলিউডের গডফাদার আছে, আপনি সমর্থন করেন? 

রুদ্রনীল : একদম না! যে সমস্ত অভিনেতা শিল্পী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন না, কিভাবে মুভ করা উচিত বা কোথায় যোগাযোগ করা উচিত, এটা কোনো সিনিয়র বুঝিয়ে দিলে, এই গাইডলাইনটা অবশ্যই একটা মানুষের সময় বাঁচায়। যারা এটা করেন না তাঁরা ঠেকে শেখেন কিন্তু দেখা যায় ৩-৪ বছর এক্সট্রা লস্ হয়ে গেল। গডফাদার মানে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কেউ, যাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যাবে কিভাবে সময় বাঁচবে। যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা দুটো সম্পূর্ণ আলাদা জিনিস। অনেক অযোগ্য মানুষকেও অনেকে জনপ্রিয় করেন। 

প্রশ্ন : তার মানে যে ট্যালেন্টেড সে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে যাবে? 

রুদ্রনীল : শুধু যোগ্য নয় তাঁকে বাস্তববাদী হতে হবে। বাড়িতে বা পাড়াতে যে ভাবে বুদ্ধি লাগিয়েছে সেটা এখানে কাজে দেবে না। 'স্টার' বানানোটা হয়তো চেনা জানা থাকলে হয়ে যাবে। কিন্তু আমি টিকবো কিনা সেটা দর্শক ঠিক করেন।

প্রশ্ন : কী কী কাজ করছেন এখন? 

রুদ্রনীল : সায়ন্তন ঘোষালের 'নরক সংকেত' ও সপ্তাশ্ব বসুর পরিচালনা 'প্রতিদ্বন্দ্বী' এই  দুটি ছবির কাজ শেষ করলাম। সব ঠিক থাকলে এই বছরের শেষ কিংবা আগামী বছরের শুরুতে মুক্তি পাবে ছবিটি। এছাড়া ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্যে একটি থ্রিলারধর্মী কলকাতার আন্ডার ওয়ার্ল্ড স্টোরি 'গঙ্গা'- একটি প্রজেক্ট করার কথা ছিল। কিন্তু এই ছবিটিতে আরেকটি চরিত্রে রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ায় আপাতত কাজটি স্থগিত রয়েছে।

রুদ্রনীল ঘোষ (ছবি সৌজন্য:ফেসবুক)

প্রশ্ন : অনেকদিন রাজনৈতিক মঞ্চে সরাসরি আপনাকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। ২০২১-র নির্বাচনের আগে তাহলে কি আপনাকে সামনের সারিতে দেখতে পাওয়া যাবে? 

Advertisement

রুদ্রনীল :  আমি রাজনৈতিক সচেতন মানুষ, রাজনৈতিক কর্মী নই। কর্মীদের, যে যেই দলেই থাকুক না কেন নানা রকমের দায়িত্ব থাকে। আমার যতটুকু ক্ষমতা আছে আমি বিভিন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। রাজনৈতিক প্রভাবে দেশের আর্থসামাজিক যা অবস্থা রয়েছে এবং তার পক্ষে সঠিক দিশা কে এবং কিভাবে দিতে পারবেন জানিনা। মানুষ ভীষণ ভাবে বিপর্যস্ত। প্রচুর লোকের চাকরি গেছে, মাইনে কমেছে, সেক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কারো কাছে স্পষ্ট বার্তা আমি পাইনি। প্রত্যেকেই তাঁদের বিপরীত মেরুর রাজনৈতিক দলকে কাউন্টার করে নিজেদের বক্তব্য রাখছেন।সেই বক্তব্য সামাজিক ও মানবিক হলে, যদি সেটা আমার ভালো লাগে তখন কারো হয়ে কথা বলবো। কিংবা যদি তাঁদের সমর্থন করার জন্যে আমাকে আহ্বান করা হলে তখন আমি যাব। রাজনীতিতে আমার প্রচুর বন্ধু-বান্ধব রয়েছেন, যারা হয়তো শুরু করেছেন ৫-৭ বছর আগে। কিন্তু আমার রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা শুরু ছোটবেলা থেকে ছাত্র রাজনীতি দিয়ে। কাজেই যখন দেখব তাঁরা সত্যি মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে তখন আমার ভালো লাগলে আমিও যুক্ত হবো।

Advertisement