Soukarya Ghosal Exclusive: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কেন ছোটদের ছবি এত কম? টলিউড নিয়ে অকপট সৌকর্য

Tollywood Film Industry: ২০১৮ সালে সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত ছোটদের ছবি 'রেনবো জেলি' সিনেপ্রেমীদের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছিল। মনে দাগ কেটেছিল বহু দর্শকের। এই ছবির প্রায় সাত বছর পর পরিচালক এসেছেন সিক্যুয়েল নিয়ে। মুক্তির আগে বাংলা ডট আজতক ডট ইন-এর সঙ্গে আড্ডায় সৌকর্য ঘোষাল।  

Advertisement
বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কেন ছোটদের ছবি এত কম? টলিউড নিয়ে অকপট সৌকর্যসৌকর্য ঘোষাল (ছবি: সংগৃহীত)

ঘোতন, পপিন্স, গণ্ডারিয়া মামা, পরী পিসির কথা মনে আছে? ২০১৮ সালে সৌকর্য ঘোষাল পরিচালিত ছোটদের ছবি 'রেনবো জেলি' সিনেপ্রেমীদের কাছে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছিল। মনে দাগ কেটেছিল বহু দর্শকের। এই ছবির প্রায় সাত বছর পর পরিচালক এসেছেন সিক্যুয়েল নিয়ে। এসভিএফ ও জিও স্টুডিয়োজের যৌথ প্রযোজনায়, ১৩ জুন মুক্তি পাচ্ছে 'পক্ষীরাজের ডিম' (Pokkhirajer Dim)। এবার পরী পিসি, গণ্ডারিয়া মামারা থাকবে না গল্পে। তবে রয়েছে নতুন চমক।

এবারের গল্প ফুড ফ্যান্টাসি নয়, এটি সায়েন্স ফিকশন। আগের ছবির মতো এবারও ঘোতন ও পপিন্সের চরিত্রে দেখা যাবে মহাব্রত বসু ও অনুমেঘা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য ও শ্যামল চক্রবর্তী। মুক্তির আগে বাংলা ডট আজতক ডট ইন-এর সঙ্গে আড্ডায় সৌকর্য ঘোষাল।  

 

Pokkhirajer Dim

প্রশ্ন: কেমন আছেন? 

সৌকর্য: ভাল আছি। 

প্রশ্ন: নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে। একটু কি টেনশন হচ্ছে? 

সৌকর্য: না টেনশন করে আর কী করব। আগে হত খুব। এরপর এগারো বছর ধরে ছবি বানানোর পরে আমি বুঝেছি, ছবি যদি ভাল হয় দর্শক দেখবে। না ভাল হলে দেখবে না। হাজার চেষ্টা করেও কিছু করতে পারব না। তাই যেটা আমার হাতে নেই, সেটা নিয়ে চিন্তা করে কী করব। 

প্রশ্ন: দর্শক 'রেনবো জেলি' পছন্দ করেছিল। সেই ছবিরই সিক্যুয়েল বানানো মানে তো বাড়তি প্রত্যাশা সকলের। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি কতটা? 

সৌকর্য: আমার কাছে খুব একটা কঠিন ছিল বলব না। আমার যেমন মনে হয়েছিল, আমি লিখেছিলাম। যেহেতু ভাল লাগার জিনিস, তাই ঝুঁকির কোনও ব্যাপার নেই। আমরা ভাল করে কাজ করার চেষ্টা করেছি। যখন 'রেনবো জেলি'-র কাজ করেছিলাম, জানতাম না এতটা সফল হবে। আমার মনে হয়েছিল এভাবে বানাই। এই ছবিটাও আমার মনের মতো করে বানিয়েছি। এরপর পুরোটা দর্শকের সিদ্ধান্ত। 

 

Pokkhirajer Dim

প্রশ্ন: 'রেনবো জেলি'-র প্রায় ৭ বছর পর সিক্যুয়েল। দু'জন শিশু শিল্পীও এখন অনেকটাই পরিণত। কীভাবে সাজালেন এবার গোটা বিষয়টা? 

Advertisement

সৌকর্য: এটা পরের ঘটনা। তখন ঘোতন কোনও স্কুলে পড়ত না, ছোট ছিল। এখন সে স্কুলে পড়ে। ওদের জীবনের পরবর্তী ক্রাইসিস পয়েন্টে এসে অনেক চরিত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ হচ্ছে। সেসব নিয়েই মূলত গল্পটা।  
 

প্রশ্ন: ছবিতে অনির্বাণ ভট্টাচার্য একেবারে ভিন্ন লুকে। এভাবে আগে কখনও দেখা যায়নি...  

সৌকর্য: প্রথমত অনির্বাণ একজন খুব ভাল অভিনেতা। এছাড়া আমার যেটা মনে হয়েছিল, অনির্বাণ বহু ধরণের চরিত্র করার চেষ্টা করে। কিন্তু এত বছর এতগুলো কাজ করা সত্ত্বেও, বাচ্চাদের জন্য কোনও চরিত্র করেনি। এই প্রথম বাচ্চাদের জন্য ও নিজেকে নতুনভাবে তৈরি করেছে, সাজিয়েছে। আমার মনে হয়েছে সেটা খুব ইন্টারেস্টিং হবে। 

 

anirban


প্রশ্ন: অনির্বাণ ভট্টাচার্য অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনাও করেন। একজন পরিচালককে পরিচালনা করতে গেলে কি কোনও সমস্যায় পড়তে হয়?  

সৌকর্য: আমি আগেও পরিচালকদের পরিচালনা করেছি। আমার মনে হয় এখানে সবাই যথেষ্ট পেশাদার। একটা লাইন অফ কন্ট্রোল থাকে। সেটা কেউই খুব একটা অতিক্রম করে না। 


প্রশ্ন: দর্শক কেন 'পক্ষীরাজের ডিম' দেখতে যাবেন? ছবির ইউএসপি কী?  

সৌকর্য: আমি ছবিটা দেখেছি। দর্শক হিসাবে বলতে পারি দেখার তিনটে কারণ আছে। একটা কারণ হল 'রেনবো জেলি' একটা অত্যন্ত আদৃত- সমাদৃত এবং সফল ছবি। বহু দিন ধরে মানুষ অপেক্ষা করে ছিল, এরপর কী হবে। 'রেনবো জেলি'-র পরে কী হচ্ছে, এটা নিয়ে একটা কৌতূহল রয়েছে। দ্বিতীয়ত, কল্পবিজ্ঞানের দুনিয়াটা খুব বেশি বাংলা ছবিতে দেখা যায় না। কী রয়েছে এখানে, সেটা দেখার জন্য দর্শক আসবে। এছাড়া অনির্বাণকে এত ছবিতে আমরা দেখেছি, কিন্তু এই প্রথম বাচ্চাদের জন্য ও নিজেকে তৈরি করেছে।   

 

Pokkhirajer Dim

প্রশ্ন: কল্পবিজ্ঞান নিয়ে ছবি মানে তো, প্রচুর গবেষণা করতে হয়েছে...

সৌকর্য: আসলে এটা আমার খুব পছন্দের একটা বিষয়। পদার্থবিজ্ঞান আমার ভাল লাগার সাবজেক্ট। তাই সব সময় চর্চায় থাকে।

প্রশ্ন: বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে ছোটদের ছবি এখন খুব কম দেখা যায়। এটা কি থ্রিলার ঘরানার ছবির ট্রেন্ডে গা ভাসিয়ে? 

সৌকর্য: এটা আমাদের এখানে কেন হয় জানি না। ছোটদের ছবি চললে, খুব ভাল চলে। হলিউডে যেমন মার্বেল আছে, বলিউডে আমির খান চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এখানে জানি না কেন খুব একটা করার ইচ্ছে প্রকাশ করে না কেউ। যখন ২০১৮ সালে 'রেনবো জেলি' রিলিজ করেছিল, সেসময় একই সঙ্গে 'উমা' আর 'হামি' আরও দুটো ছোটদের ছবি এসেছিল এবং তিনটি ছবিই ভাল চলেছিল।   

 

Pokkhirajer Dim

 

প্রশ্ন: আপনার ছবির মুখ্য চরিত্রে একদম ইয়ং ব্রিগেড রয়েছে। বকাঝকা করতে হয়েছে শ্যুটিংয়ের সময়?

সৌকর্য: না আসলে ওদের সঙ্গে আমার অনেক দিনের সম্পর্ক। আগেও তো কাজ করেছি। ছবি হওয়ার আগে আমাদের ৬-৮ ঘণ্টার রিহার্সাল চলে আমার বাড়িতেই। এই ছবিটার ক্ষেত্রে ফ্লোরে যাওয়ার আগে চার মাস রিহার্সাল করেছি। এর ফলে সেই সময়ই সব সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। বড়দের ক্ষেত্রেও অনেক ওয়ার্কশপ করতে হয়। অভিনেতাদের সমস্ত কিছু আগেই সিদ্ধান্ত হয়ে যায়। এর ফলে ফ্লোরে গিয়ে অভিনয় নিয়ে আর ভাবতে হয় না। সেখানে ফ্রেম, লাইট এসব নিয়ে ভাবতে পারি।  

প্রশ্ন: সৌকর্য ঘোষাল এতটা বিরতি নিয়ে কেন ছবি বানায়? প্রস্তুতি নিতে সময় লাগে, নাকি অন্য কোনও কারণ? 

সৌকর্য: প্রচুর গ্যাপে ছবি বানাই তা ঠিক হয়। হ্যাঁ একথা ঠিক যে দু'বছর অন্তর ছবি করছি। সেটা হয়তো বছরে একটা করে হতে পারে। কিন্তু এর বেশি আমি পারব না। আমি যেহেতু নিজেই গল্প লিখি, সেটা একটা বড় কাজ। অনেকটা সময় যায়। গল্পটা লেখা থাকলে চিত্রনাট্য লিখতে বেশি সময় লাগে না।        

Advertisement

 

Pokkhirajer Dim

প্রশ্ন: ঝুলিতে কি এখন কোনও গল্প রয়েছে?

সৌকর্য: কিছু ভাবনা আছে। এবার দেখা যাক কী হয়। 


প্রশ্ন: ছোটদের নিয়ে কি আরও ছবি বানাবেন এরপর?

সৌকর্য: আমার সব ছবিতেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে শিশুরা থাকে। এই ধরণের কাজ করব কী না এখনই বলতে পারছি না। তবে বাচ্চাদের একটা বড় ভূমিকা থাকবে, এটুকু কথা দিতে পারি। 
 

POST A COMMENT
Advertisement