অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ করোনার ভ্যারিয়ান্টের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানাচ্ছেন যে, অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার প্রায় ৬ মাস পরে আরও একটি ডোজ নিলে শরীরে অ্যান্টিবডির স্তর বেড়ে যায়। ভারতে অ্যাস্ট্রোজেনেকার ভ্যাকসিন হল কোভিশিল্ড।
যদিও অক্সফোর্ডের শীর্ষস্থানীয় গবেষকরা জানাচ্ছেন, করোনার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজই ভাল কাজ করবে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় ডোজের দরকার হয়ত পড়বে না। গবেষণার দেখা গিয়েছে অ্যাস্ট্রোজেনেকা ও ফাইজারের দুটি ডোজ ডেল্টা ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা ৯৬ শতাংশ কমিয়ে দেয়।
অন্য একটি গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে, অ্যাস্ট্রোজেনেকার একটি ডোজে শরীরে একবছর পর্যন্ত অ্যান্টিবডির মাত্রা ভালই থাকে। আর দ্বিতীয় ডোজের পর সেই সুরক্ষা আরও বেড়ে যায়। নয়া এই গবেষণায় অংশ নিয়েছিলেন ৯০ জন স্বেচ্ছাসেবক। তাঁদের প্রত্যেকের বয়সই ৪০ বছরের আশেপাশে। তাঁরা প্রত্যেকেই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ নেন। তারপর অ্যান্টিবডি পরীক্ষার জন্য তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
গবেষকরা দেখেন দ্বিতীয়র তুলনায় তৃতীয় ডোজের পর অ্যান্টিবডির পরিমান অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। অক্সফোর্ডের জেনর ইনস্টিটিউটের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসার তথা এই গবেষণার শীর্ষস্থানীয় লেখক টেরেসা লম্বে বলেন, 'যদি আমরা মনে করি যে তৃতীয় ডোজের দরকার রয়েছে, তাহলে এটা খুবই উৎসাহজনক খবর।' তবে প্রফেসার অ্যান্ড্রু পোলার্ডের মতে, বাস্তবেই অ্যান্টিবডির স্তর কতটা সুরক্ষা দেবে তা এখনই স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকদের টি-সেলও পরীক্ষা করেন দেখেন গবেষকরা। এই টি-সেলই সংক্রমণের থেকে বাঁচতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অধ্যাপক পোলার্ড বলেন, যদি দক্ষিণ আফ্রিকার বিটা ভ্যারিয়ান্ট ব্রিটেনে শুরু হয় তাহলে বুস্টার শট ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রফেসার পোলার্ড ডেইলি মেলকে বলেন, নয়া ট্রায়াল এই কারণেই প্রয়োজন, 'কারণ আমরা জানি যে বিটা এমন একটা ভ্যারিয়ান্ট যা ভ্যাকসিনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার থেকে সহজেই বাঁচতে পারে। সেই কারণে সমস্যা হওয়ার আগেই এর সঙ্গে লড়াই করতে পারে এমন একটি নয়া ভ্যাকসিন তৈরির ভাবনা ভাল।'
তবে প্রফেসার পোলার্ড এটাও বলেন যে, এখনই মানুষকে তৃতীয় ডোজ দেওয়ার দরকার নেই। কারণ ভ্যাকসিনের দুটো ডোজ প্রথম থেকেই ডেল্টা ও আলফার বিরুদ্ধে ভাল কাজ করছে। তিনি বলেন, 'যেখানে অনেক দেশে এখনও ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজই হয়নি সেখানে ইউকে-তে বেশি সুরক্ষার জন্য এখনই তৃতীয় ডোজ দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ অন্যান্য দেশের সুরক্ষার বিষয়েও ভাবতে হবে।'