বিশ্বে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার একের পর এক ভ্যারিয়ান্ট। এবার বেলজিয়ামে এক মহিলার দেহে পাওয়া গেল করোনার পৃথক পৃথক ভ্যারিয়ান্ট। পঞ্চম দিনে মহিলার মৃত্যু হয়। এই ঘটনা সামনে আসার পর উদ্বিগ্ন গবেষকরা। তাঁদের মতে, এই ধরনের ঘটনা করোনার বিরুদ্ধে লড়াইটা আরও কঠিন করে তুলবে।
ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুসারে, ৯০ বছরের ওই মহিলা একই সময় আলফা ও বিটা ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি ভ্যাকসিনও নেননি, এবং বাড়িতেই নিজের চিকিৎসা করাচ্ছিলেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মার্চ মাসে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
করোনা টেস্টে রিপোর্ট পিজিটিভ আসে। প্রথমে তাঁর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা ভালই ছিল। কিন্তু পরে শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয় এবং পঞ্চম দিনে তাঁর মৃত্যু হয়।
হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা যখন জানার চেষ্টা করেন যে ওই মহিলা কোন ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত, তখন তাঁর দেহে আলফা ও বিটা দুটিই পাওয়া যায়। আলফা সবচেয়ে প্রথমে ব্রিটেনে এবং বিটা সবার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া যায়। এই ধরনের ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।
হাসপাতালের আণবিক জীববিজ্ঞানী তথা এই বিষয়ের গবেষক অ্যানি ভেনকিয়ারবার্গেন জানান, বর্তমানে বেলজিয়ামে এই দুটি ভ্যারিয়ান্ট ছড়িয়ে পড়ছে। হতে পারে মহিলার দেহে দুজন পৃথক ব্যক্তির থেকে দুটি ভ্যারিয়ান্ট এসেছে। যদিও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি তিনি কীভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
তবে দুটি ভ্যারিয়ান্টের জন্য, নাকি অন্য কোনও কারণে মহিলার শরীরের দ্রুত অবনতি হল নাকি তা এখনই বলা মুশকিল বলে জানান অ্যানি। এই সমীক্ষা এখনও পর্যন্ত কোথাও প্রকাশিত হয়নি। আপাতত এটিকে, ইউরোপিয়ান কংগ্রেস অফ ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজ-এ পাঠান হয়েছে।
এই বছর ব্রাজিলের বৈজ্ঞানিকেরাও জানিয়েছিলেন, দুজন একই সময় পৃথক দুটি ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সেই বিষয়ে কোনও সমীক্ষা প্রকাশিত হয়নি। একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অ্যানি বলেন,'এর আগে একইসঙ্গে দুটি ভ্যারিয়ান্টে আক্রান্ত হওয়ার খবর কোথাও প্রকাশিত হয়নি। হয়ত এই ধরনের বিষয়গুলি চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে।'
এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে, প্রখ্যাত ভাইরোলজিস্ট লরেন্স ইয়ং বলেন, কোনও ব্যক্তির মধ্যে একাধিক ভ্যারিয়ান্ট পাওয়া গেলে তাতে অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই।