দেশে চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যদিও বিগত কয়েকদিন ধরেই দৈনিক সংক্রমণ অনেকটাই নিম্নমুখী। একই ছবি বাংলাতেও। এরাজ্যেও অনেকটাই কমেছে করোনার (Corona) দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা। তবে করোনার আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই থাবা বসিয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। ইতিমধ্যেই রাজ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের জেরে একাধিক জনের মৃত্যুও হয়েছে। এদিকে এরই মাঝে বাংলা তথা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঢুকে পড়েছে বর্ষা। লাগাতার চলছে বৃষ্টি, সঙ্গে ওঠানামা করছে তাপমাত্রার পারদও। এহেন পরিস্থিত জনমানসে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আবহাওয়ার পরিবর্তনের জেরে এই করোনা ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মারণ থাবা কি আরও চওড়া হবে? নাকি কমবে এদের কার্যক্ষমতা?
এই বিষয়ে বিশিষ্ঠ ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন গবেষণায় যা উঠে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, আবহাওয়া বা তাপমাত্রার তারতম্যের প্রভাব করোনার ওপরে খুব একটা পড়ে না বললেই চলে। বরং ঠাণ্ডাতেই ভাইরাস বেশি বাঁচে বলে জানাচ্ছেন তিনি। তবে ফাঙ্গাস অবশ্য আর্দ্রতা বা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ বেশি পছন্দ করে। এক্ষেত্রে শুধু ব্ল্যাক ফাঙ্গাস (Black Fungus) নয়, যেকোনও ফাঙ্গাসের চরিত্রই একইরকম বলে জানাচ্ছে অমিতাভবাবু। তিনি বলেন, এগুলো সাধারণ মানব শরীরে ঢুকলে খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না, কারণ দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই এগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। তবে যে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আগে থেকেই ভেঙে পড়েছে বা যদি কেউ আগে থেকেই বড়সড় কোনও রোগে ভুগতে থাকেন, তাহলে সেখানে এগুলি খুব সহজেই বাসা বাঁধে।
রাজ্যে ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে কয়েকজন আগে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। কোভিড (Covid 19) থেকে সেরে ওঠার পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তাঁদের দেহে থাবা বসায়। এক্ষেত্রে অভিতাভ নন্দী জানাচ্ছেন, কোভিডের পর এমন অনেক রোগ হচ্ছে যা সাধারণ সময় মানুষের হয় না। এমনকী সেগুলি সারতেও দীর্ঘ সময় লাগছে বলে জানাচ্ছেন তিনি। এক্ষেত্রে রোগী যেখানে রয়েছেন সেই পরিবেশটা এবং খাট বিছানা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত গ্যাজেটস, যেমন অক্সিজেন মাস্ক, অক্সিজেন পাইপ ইত্যাদি নিয়মিতভাবে জীবাণুমুক্ত করার পরামর্শ দিচ্ছেন অমিতভাবাবু।