রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি চিঠি পাঠানোর অভিযোগে KPC মেডিক্যাল কলেজের এক চিকিৎসক-সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। ওই চিকিৎসকের নাম অরিন্দম সেন। তাঁকে জেরা করে পুলিশের দাবি, মানসিকভাবে অসুস্থ ধৃত ওই ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তীকেই নয়, বরং বিগত ৩-৪ বছরে এমন অসংখ্য হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিকে হুমকি চিঠি পাঠিয়েছেন চিকিৎসক অরিন্দম সেন। যার মধ্যে অন্যতম কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে পাঠানো হুমকি চিঠি। যেটি আজতাক বাংলার হাতে এসেছে।
আরও পড়ুন : খোলামেলা পোশাকে মেক-আপ মহম্মদ শামির স্ত্রী'র, VIRAL VIDEO
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই একই দিনে শরৎ বোস রোডের পোস্ট অফিস থেকে এই দুটি আলাদা হুমকি চিঠি পাঠান চিকিৎসক অরিন্দম সেন। NRS মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে পাঠানো ওই চিঠিতে লেখা হয়, 'খুব শীঘ্রই মেডিক্যাল কলেজ ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হবে। কয়েকজন ইন্টার্ন এই পরিকল্পনা করেছে।' এই ঘটনায় দুজন ইন্টার্নের মৃত্যু হবে বলেও জানানো হয় চিঠিতে। একই সঙ্গে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন, লেক গার্ডেন্সের বাসিন্দা প্রফেসর অলোক কুমার-সহ এই হাসপাতালের ৩ জন PGT এই ঘটনায় যুক্ত। এই হুমকি চিঠি কলকাতার অবিনেশ চন্দ্র ব্যানার্জি লেনের বাসিন্দা জনৈক পার্থসারথি মুখার্জির নাম করে পাঠানো হয় NRS মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে। এই হুমকি চিঠি পেয়ে পুলিশে অভিযোগও জানিয়েছিল NRS মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পুলিশ সূত্রে খবর, শরৎ বোস রোডের পোস্ট অফিসের CCTV ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা যায়, ওই ব্যক্তির মারফত আরও বেশ কিছু চিঠি পাঠানো হয় একই পোস্ট অফিস ব্যবহার করে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল রাজ্যের মেডিকেল এডুকেশনের ডিরেক্টর, বিজ্ঞান সচিব, নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল, রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল এবং জুলি ভট্টাচার্যকে।
আরও পড়ুন : পরনে হলুদ শাড়ি-কপালে সিঁদুর, ভাইরাল 'হট' ঝুমা বউদি
পুলিশ সূত্রে খবর পেশায় চিকিৎসক হলেও একাধিক ব্যক্তিগত কারণে ধীরে ধীরে মানসিক অসুখে ভুগতে শুরু করেন চিকিৎসক অরিন্দম সেন। জানা গিয়েছে, এর আগে দু'বার বিয়ে করলেও, দুই স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যান। এরপর রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে চাকরিরতা তাঁর মায়ের মৃত্যু হলে তিনি আরও মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। চিকিৎসক অরিন্দম শীলের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তার প্রতিবেশীরাও। পড়শিদের সঙ্গেও একই কারণে তাঁর বিবাদ লেগে থাকত বলে সূত্রের খবর। অতীতে পাড়ারও একাধিক ব্যক্তির নাম করে বিভিন্ন জনকে চিঠি লিখে গন্ডগোল পাকিয়ে ছিলেন তিনি। ডাক্তার অরিন্দম সেনের এই গোটা কর্মকাণ্ডের সাক্ষী ছিলেন তার গাড়ির চালক রমেশ সাউ।
পুলিশ সূত্রে দাবি তিনি জেনেশুনেই তার লেখা সমস্ত চিঠি আদান-প্রদানের কাজ করতেন। তাই ওই গাড়িচালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকী গ্রেফতার করা হয়েছে রাসবিহারীর বাসিন্দা বিজয় কুমার কায়াল নামের এক টাইপরাইটারকেও। যিনি অরিন্দম সেনের হয়ে চিঠিগুলি টাইপ করে দিতেন।