বীরভূমের রামপুর (Birbhum Rampurhat Violence) হাতে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখের খুনের পর ৮ জনকে জীবন্ত জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় গোটা এলাকায় জুড়ে তৈরি হয়েছে তীবের উত্তেজনা। ঘটনার পর থেকেই গোটা গ্রাম থমথমে। ফের এমন ঘটনার আশঙ্কায় ইতিমধ্যেই ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা।
এদিকে ঘটনার এলাকায় পৌঁছায় আজতক (Ground Report)। এতিমধ্যেই বাড়ি ছেড়েছেন ভাদু শেখের (Bhadu Sheikh Murder) দাদা নূর আলি। ভাদু শেখের খুনের পর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেটি ঠিক নূর আলির বাড়ির সামনে। এই ঘটনায় নূর আলি আজতককে জানান, 'আমার ভাইকে মারা হয়েছে. একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার পরিবারে মহিলারা রয়েছে। আমি এখানে ভয় নিয়ে থাকতে পারবো না। আমি পরিবারের সদস্যদের হারিয়েছি। আমি নিজের পরিবারের লোকেদের নিয়ে বাইরে চলে যাচ্ছি'।
গ্রামে ঠিক কী হয়েছিল?
সেই রাতে গ্রামে ঠিক কী হয়েছিল? উত্তরে নূর আলি জানান, রাতে কী হয়েছে, কীভাবে হয়েছে, সেই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি হাসপাতালে ছিলেন। নূর আলীর পাশাপাশি ভাদু শেখের দূরসম্পর্কের আত্মীয় খায়রুলও পরিবারকে গ্রাম থেকে বের হতে সাহায্য করছেন। নিজের পরিবাজের এই দুরবস্থার জন্য পুলিশকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন খায়রুল। তাঁর দাবি, তিনি ওই গ্রামে থাকেন না। তিনি শুধু মাত্র নিজের পরিবারকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে যেতে এসেছেন।
নিজের পরিবারের জিনিসপত্র কাঁধে তুলতে তুলতে খায়রুল বলেন, 'আমার প্রাণ বাঁচানোর জন্য চলে যাচ্ছি। পুলিশ আমাদের এখান থেকে যেতে বলেছে।' এই সবের নেপথ্যে তৃণমূলেরই অপর একটি গোষ্ঠী রয়েছে বলেই কার্যত জানাচ্ছেন তিনি। এমনকি যে ঘটনা ঘটেছে তা থামানোর জন্য পুলিশ কিছু করথে না বলেও অভিযোগ খায়রুলের।
এদিকে এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি উঠেছে। আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকও (MHA) পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে। এছাড়াও খুব শীঘ্রই একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিমও এলাকা পরিদর্শন করবে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি আবার এই ঘটনায় একটি ৫ সদসযের কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটিও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রিপোর্ট তৈরি করবে, সেই রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে জেপি নাড্ডাকে।
সমালোচনায় রাজ্যপাল
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (Jagdeep Dhankhar)। রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। একটি ট্যুইটে তিনি লেখেন, 'ভয়ানক হিংসা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রাজ্যে হিংসার সংস্কৃতি ও জঙ্গলরাজের সংকেত দিচ্ছে। এই বিষয়ে মুখ্যসচিবের থেকে রিপোর্ট চেয়েছি। পিড়ীতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রয়েছে।'
রাজ্যপালকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
রাজ্যপালের ট্যুইটের পাশাপাশি আবার তাঁকে চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চিঠিতে তিনি লেখেন রাজ্যপাল যেন এমন বয়ান না দেন যাতে অন্যান্য দল সরকারকে ধমকানোর সুযোগ পেয়ে যায়। মমতা লিখেছেন, 'আপনার কথা ও বক্তব্যে রাজনৈতিক সুর আছে, যা অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারকে হুমকি দেওয়ার জন্য সমর্থন দেয়।'
অন্যদিকে আবার এই ঘটনায় বীরভূমের পুলিশ সুপার ও ডিজিপিকে নোটিশ দিয়েছে NCPCR। পাশাপাশি এসপিকে তদন্ত করে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্টও জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন - আজ ফের বাড়ল তেলের দাম, আপনার শহরে কত?