জনগণের টাকা মেরেছে খোদ পুরসভা! পুরাতন মালদায় দায়িত্ব নিয়ে চোখ কপালে আমলার

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জনগণের ট্যাক্সের টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু তা জমা হয়নি। কোথাও প্রচুর টাকা তোলার পর সামান্য টাকা নথিজমা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে রসিদ পেয়েছেন, তাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুয়ো। দায়িত্ব নিয়ে চোখ কপালে আমলার। পুরাতন মালদা পুরসভায় ধুন্ধুমার।

Advertisement
জনগণের টাকা আত্মসাৎ পুরসভার! পুরাতন মালদায় দায়িত্ব নিয়েই চোখ কপালে আমলারওল্ডা মালা পুরসভা
হাইলাইটস
  • ২০ লক্ষ টাকার বেশি নয়ছয়
  • ভুয়ো রসিদ ছাপিয়ে টাকা তোলা হয়েছে
  • টাকা মেরেছে পুরসভার কর্মীরাই

জনগণের জমা দেওয়া পুরকর হরফ করে নিয়েছে খোদ পুরসভাই। প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে চোখ কপালে আমলার। কে বা কারা টাকা জমা নিলেও ভুয়ো রসিদ দিয়েছে মানুষকে। কয়েক বছর ধরে চলেছে এই প্রক্রিয়া। যা দেখে আঁতকে উঠেছেন তিনি। কেঁচো খুড়তে কেউটে বের হবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি। তবে কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।

টাকা উঠেছে কিন্তু জমা হয়নি

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জনগণের ট্যাক্সের টাকা তোলা হয়েছে। কিন্তু তা জমা হয়নি। কোথাও প্রচুর টাকা তোলার পর সামান্য টাকা নথিজমা দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ যে রসিদ পেয়েছেন, তাও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুয়ো। ফলে কে কে জড়িত রয়েছে তা জানার জন্য অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান বশিষ্ঠ ত্রিবেদী।

গুটিয়ে গিয়েছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান

তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই গুটিয়ে গিয়েছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান। তিনি অপরাধের বিরুদ্ধে একটি কথাও না বলে তাকে প্রশ্রয় দিয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি দলকে দেখিয়ে দিয়েছেন। নিজে কিছু বলবেন না বলে জানিয়েছেন। পুরাতন মালদা পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যন তথা পুর প্রশাসক কার্তিক ঘোষ বলেন,কে কখন কি করছে বা করেছে তা বলতে পারবো না। যা বলবে দল বলবে। দলের বাইরে কিছু বলবো না। কেন বলবেন না?  তিনিই তো চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর অধীনেই ছিল গোটা পুরসভা ! সেই সময়কার ঘটনার দায়িত্ব তো তাঁকেই নিতে হবে। আপাতত তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাই সেফ।

তদন্ত কমিটি গঠন পুরসভার

প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকার বেশি ট্যাক্সের জালিয়াতি চক্র ধরল পুরাতন মালদা প্রশাসকমণ্ডলী। যদিও এই ঘটনার পিছনে কারা যুক্ত রয়েছে, তা এখনও পরিষ্কার করে জানতে পারেনি পুর-প্রশাসকমণ্ডলী। তবে পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুরাতন মালদা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারম্যান বশিষ্ঠ ত্রিবেদী ।

কুড়ি লক্ষ চাকার বেশি নয়ছয়

Advertisement

তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে সাধারণ নাগরিকের ট্যাক্সের জমা দেওয়ার টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। যার পরিমাণ প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা বলেই মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্য প্রশাসন আমাকে এই পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর চেয়ারপার্সনের পদের দায়িত্ব দিয়েছে । আর সেই দায়িত্ব পেয়ে এই জালিয়াতি চক্রের বিষয়টি জানতে পেরেছি। এই ঘটনার পিছনে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুয়ো রসিদ ছাপিয়ে টাকা তোলা হয়েছে

এমনকী পুরসভার ট্যাক্সের যে রশিদ বই রয়েছে, সেটিও নাকি বাইরে থেকে ছাপিয়ে নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে কেউ কেউ বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এই বিষয়টি জানতে পেরে বেজায় চটেছেন পুর প্রশাসক। তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারা গিয়েছে, পুরসভার জনৈক এক ট্যাক্স আদায়কারী সেই টাকায় দীর্ঘদিন ধরে নয়ছয় করেছে। যারা ৪ হাজার ৪৫ টাকা করে ট্যাক্স জমা দিয়েছেন পুরসভায়, তাদের রশিদে সেই টাকা উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে ঠিকই । কিন্তু পুরসভার রশিদে ৪ হাজার টাকা বাদ দিয়ে শুধু ৪৫ টাকা ট্যাক্স লেখা হয়েছে। এভাবে কয়েক বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা তছরুপ করা হয়েছে।

 

POST A COMMENT
Advertisement