
তৃণমূল নেতার স্ত্রী'কে ভুলবশত ফোন করেছিলেন এক যুবক। আর তার জেরে সেই যুবককে বেধড়ক মারধর করা হল। তারপরই আত্মঘাতী যুবক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি নদিয়া জেলার স্বরূপগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাগীরথী বিদ্যাপীঠ পাড়া সুকান্ত পল্লি এলাকার। আর এই ঘটনার জেরে ব্যাপক উত্তেজনা এলাকায়।
ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। সেদিন অমিত দেবনাথ নামে বাইশ ওই যুবক এলাকারই দাপুটে তৃণমূল নেতা সঞ্জীব সমাদ্দার ওরফে কালুর স্ত্রী'কে ভুলবশত ফোন করে বসেন। অভিযোগ, এরপরই ওই যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। দলীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
এখানেই থামেনি অত্যাচার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ফের রবিবার সকালে বাড়ি থেকে অমিতকে ডেকে নিয়ে গিয়ে প্রকাশ্যে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওই যুবকের মা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার হাতে পায়ে ধরলেও মারধরের হাত থেকে রেহাই পায়নি অমিত। কে বেধরক মারধর করা হয়। তার মা গিয়ে হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চাইল ও রেহাই মেলে নি পুত্রের। এরপরই বাড়ি ফিরে অপমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই যুবক। মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হলে ওই যুবককে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন : Rantac, Zinetac Medicine : জিনট্যাক-সহ অম্বলের আর কী কী ওষুধ খাওয়া যাবে না?
রবিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ওই হাসপাতাল থেকে দেহটি উদ্ধার করে নবদ্বীপ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সেখানেই সারারাত থাকার পর সোমবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠাবে পুলিশ।
এদিকে ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যপক অশান্তি ছড়িয়েছে। তাদের অভিযোগ, ঘটনার পর পুলিশকে খবর দেওয়া হলেও পুলিশ অনেক দেরিতে আসে এলাকায়। অভিযোগ,কালুকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুলিশ।
যদিও পুলিশের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। নবদ্বীপ থানার আইসি অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন,'মৃত যুবকের পরিবারের তরফে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সঞ্জীব সমাদ্দারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।'
আরও পড়ুন : DA New Updates: দুর্গাপুজোর আগে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ?
কে এই সঞ্জীব সমাদ্দার ওরফে কালু
গ্রামবাসীর দাবি, সঞ্জীব সমাদ্দার ওরফে কালু শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত। তার ভয়ে এলাকার লোকজন কাঁপে। কালুর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সে নানা অসামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের সঙ্গেও তার ওঠা বসা রয়েছে। শাসকদল ও পুলিশের মদতে কালু অসামাজিক কাজকর্ম করে থাকে।
এই বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা কল্লোল কর বলেন, 'অমিত দেবনাথ নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছে। তৃণমূল এর সঙ্গে জড়িত নয়। অনেকেই নিজেকে তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করে। তবে সেটা সত্যি নয়। কালু ২০২১ সালের ভোটের আগে দল করত। তবে তারপর তাকে দলের সঙ্গে সেভাবে দেখিনি। তবে যে ছেলেটি মারা গেছে সে কোনও দলই করত না। ওই ছেলেটি মারা যাওয়ার পর তার বাড়ির লোক এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছে। এটা কাঙ্খিত নয়।'
মৃত যুবকের মায়ের অভিযোগ, তাঁর ছেলে অন্য একজনকে ফোন করতে গিয়ে কালুর বউকে ফোন করে ফেলে। সে ক্ষমাও চেয়ে নেয়। তারপরও মারধর করা হয়। পরপর দুইদিন। তার জেরেই অপমানে আত্মঘাতী হয় সে।