সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক কারণে ভারত বনধের ডাক খুব বেশিবার সম্ভবত দেওয়া হয়নি। তেমনই এক ভারত বনধের ডাক দিলেন কৃষক নেতৃত্ব।কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে ৮ ডিসেম্বর দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিলেন দিল্লিতে আন্দোলনরত কৃষকরা।
কৃষক সংগঠনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্র যে তিনটি কৃষি আইন এনেছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। কৃষক নেতাদের দাবি, বিশেষ সংসদ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হবে সরকারকে।
কৃষকদের বিক্ষোভ-আন্দোলন শনিবার দশম দিনে পড়ল। বৃহস্পতিবার দীর্ঘ বৈঠকের পরও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এই অবস্থায় শনিবার কৃষক নেতাদের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসে কেন্দ্র। তার আগেই অবশ্য দেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দেন কৃষকরা।
দিল্লির বিজ্ঞানভবনে এদিন কেন্দ্র ও কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। তবে কৃষকরা সাফ ঘোষণা করেছেন, কৃষিবিল প্রত্যাহার না করলে, তাঁরা নিজের জায়গা থেকে সরবেন না।
চার দফায় আলোচনার পর কেন্দ্রের মোদী সরকার কিছুটা নমনীয় মনোভাব প্রকাশ করলেও কৃষকরা আর তাতে ভুলছেন না। কৃষি সংক্রান্ত সবক'টি নয়া আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক সংগঠনের নেতারা অনড় রয়েছেন।
কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের জেরে এদিন পিছিয়ে আসে কেন্দ্র। ফার্মার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স আইনের ৬ এবং ১৫নম্বর ধারা সংশোধনে রাজি হয় সরকার। কিন্তু, এদিনের বৈঠকে কৃষক নেতার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, নয়া কৃষি আইনগুলি সরকারকে প্রত্যাহার করতেই হবে।
সরকারের পক্ষে কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর এবং রেল, বাণিজ্য ও খাদ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল উপস্থিত ছিলেন এদিনের বৈঠকে। কৃষকদের কাছে কেন্দ্রের প্রস্তাব লিখিত ভাবে দেওয়া হয়। সরকারের তরফে ওই লিখিত কাগজ পাওয়ার পর ১৫ মিনিটের বিরতি নেওয়া হয়েছিল। তবে কৃষকরা পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা আর কোনও আলোচনা চাইছেন না। এ বার সমাধান চান। সরকার তাঁদের দাবি নিয়ে কী স্থির করেছে, তা জানাতে হবে। এদিনও সরকারের দেওয়া মধ্যাহ্নভোজ প্রত্যাখান করে নিজেরই খাবার নিয়ে এসেছিলেন কৃষকরা।
বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের ৪০ জন প্রতিনিধি শনিবারের এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। এদিন বৈঠকের পরেও আন্দোলনকারী কৃষকরা ভারত বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরছেন না। ৮ ডিসেম্বর ভারত বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে।
বনধের দিন দিল্লিতে টোল প্লাজাগুলি তারা দখল করে নেবেন, সেই হুঁশিয়ারিও অগ্রিম দিয়ে রেখেছেন কৃষকরা।