হাল আছে বলদ নেই। নিদেনপক্ষে মোষ কিংবা গরু, তাও নেই। তার বদলে হাল জুড়ে দেওয়া হয়েছে মহিলাদের কাঁধে। খেতে নেমে লাঙল দিয়ে শক্ত মাটির ঢেলা ভেঙে জমি নিরন্তর চাষযোগ্য করে চলেছেন একদল মহিলা। এমনই দৃশ্য ধরা পড়লেও মধ্যপ্রদেশের মালওয়া গ্রামে।
কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী মন্ডলে ১১ জন মহিলা রয়েছেন। ভারতীয় মহিলাদের একটা অংশ কেউ মহাকাশ যাওয়ার জন্য মনোনীত হচ্ছেন, কেউ খেলার মাঠে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, অন্যদিকে ঠিক বিপরীত চিত্র ধরা পড়ল মধ্যপ্রদেশের ওই গ্রামে। যা প্রকাশ্যে আসতেই গোটা দেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
মধ্যপ্রদেশের মালবা গ্রামের যে এলাকার এই চিত্র, সেখানে মানুষের দারিদ্র চরমে। বেশিরভাগই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষ। তাঁদের পরিবারের কাছে এত টাকা নেই যে তারা বলদ কিংবা গরু কিনে হাল দিতে পারেন।
ফলে উপায় কী! মহিলাদের কাজে লাগিয়ে দিয়ে চলছে লাঙ্গল টানার কাজ। দু বেলা দু মুঠো ভাত কিংবা রুটি জোগাড় করতেই তাদের এই উদয়াস্ত পরিশ্রম। ছবিতে যে মহিলাদের দেখা যাচ্ছে তাঁরা তাদের তিন বিঘা জমিতে সোয়াবিন চাষ করতে লাঙল চালাচ্ছেন।
সামান্য দুটো রুটির পিছনে তাদের এই অমানুষিক পরিশ্রম চোখে জল এনে দেবে যে কোনও সভ্য সুস্থ মানুষের। দারিদ্র্যের সীমা কতটা চরম হলে, মানুষ এই পর্যায়ে যেতে পারে, তা নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্ট। শুধু মহিলারা এই কাজ করছেন তাই নয়, প্রয়োজনে হাত লাগাচ্ছেন।
শুধু ওই মহিলারাই নন, তাঁদের বাড়ির বাচ্চারও ছবিও ধরা পড়েছে আজতক এর ক্যামেরায়। যে সময়ে স্কুলে পড়াশোনার জন্য তারা ভবিষ্যৎ গড়ার জন্য সময় নিয়োগ করবে, তার বদলে তাদের পরিবারের দু'মুঠো ভাতের জন্য তুলে নিতে হয়েছে লাঙল। মায়েদের সঙ্গে লেগে থেকে লড়াই করছেন ফসলের পথ সুগম করতে।
মহিলাদের সাফ জবাব, বলদ কেনার পয়সা নেই। তাই নিজেদের হাত লাগাতে হবে। ভারতের একাধিক এলাকায় এখনও এই পরিস্থিতি গল্পের মতোই মনে হয়। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠতে থাকে, বাড়ির পুরুষরা কী করেন তাহলে এলাকায়।
পাশাপাশি বাড়ির পুরুষরা অন্য জায়গায় বেগার খাটতে যান। তাই তাঁদের কাজ করতেই হয়। খবর প্রকাশ্যে আসার পর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট কতটা কার্যকর ওইসব এলাকায়, তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠে যাচ্ছে।