বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানায় একটি পাথর নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে আদালতে। মামলাকারীর দাবি, সেই পাথর আদতে শিবলিঙ্গ। সেই মামলা দায়েরের পরই আদালতের তরফে মসজিদের ওজুখানা সিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও মুসলিম পক্ষের দাবি, ওই পাথরটি আসলে ওজুখানার ঝরনা।
এখন প্রশ্ন উঠছে, এটি কি সেই প্রাচীন শিবলিঙ্গ যা একসময় পান্নার ছিল? এই বিষয়ে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের (BHU) সংস্কৃতি ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডঃ বিনোদ জয়সওয়াল জানিয়েছেন, শৈব আগম গ্রন্থে বলা হয়েছে, 'সবচেয়ে বিশুদ্ধ শিবলিঙ্গটি স্ফটিকের তৈরি। এই পাথর মানুষের দ্বারা খোদাই করা হয় না। এটি প্রকৃতি দ্বারা তৈরি। কিন্তু আমরা যখন মানুষের তৈরি পাথরের শিবলিঙ্গের কথা বলি, তখন পান্না শিবলিঙ্গের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বারাণসীতে সমীক্ষার সময়ও জ্ঞানব্যাপী মসজিদে পাওয়া শিবলিঙ্গও পান্নার তৈরি বলে জানা যায়।'
আরও পড়ুন : VISA লাগবে না, এই দেশগুলিতে অনায়াসে যেতে পারে ভারতীয়রা
ওই অধ্যাপক আরও জানান, 'ঐতিহাসিক তথ্যের দিকে তাকালে জানা যায় যে, ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে আকবরের ৯টি রত্নের মধ্যে অন্যতম রাজা টোডরমল দক্ষিণ ভারতীয় পণ্ডিত পন্ডিত নারায়ণভট্টের (১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে গ্রন্থ-ত্রিস্থলী সেতু) সহায়তায় বিশ্বনাথ মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। যেহেতু নারায়ণভট্ট দক্ষিণ ভারত থেকে এসেছিলেন এবং পান্না শিবলিঙ্গ দক্ষিণ ভারতে অনেক আগে থেকেই প্রচলিত ছিল, তাই বিশ্বনাথ মন্দিরে তিনি যে শিবলিঙ্গটি স্থাপন করেছিলেন সেটিও পান্না দিয়ে তৈরি হওয়া সম্ভব।'
ডক্টর বিনোদ জয়সওয়াল আরও বলেন, 'এটাও জানা যায় যে দক্ষিণ ভারতের মহারাজা রাজেন্দ্র চোল পূর্ব এশিয়া থেকে নাগাপট্টিনমের কাছে থিরুক্কুভালাইতে অবস্থিত ত্যাগরাজ স্বামী মন্দিরে এক পান্না শিবলিঙ্গ দান করেছিলেন। পান্না শিবলিঙ্গের গুরুত্ব এদিক থেকেও স্পষ্ট। '
এই বিষয়ে আরও তথ্য দিতে গিয়ে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের প্রাক্তন মহন্ত ডক্টর ভিসি তিওয়ারি বলেন, জ্ঞানব্যাপী মসজিদের নিচে যেটিকে বেসমেন্ট বলা হচ্ছে তা আসলে মন্দিরের মণ্ডপ।
সেই সময় অর্থাৎ বারাণসীর DM সৌরভ চন্দ্র শ্রীবাস্তব নয়ের দশকে মণ্ডপমে তালা দিয়েছিলেন। সেখানে ফটোগ্রাফিও করা হয়েছিল। তিনি নিজে এই ঘটনার সাক্ষী ছিলেন এবং তিনিও দেখেছিলেন যে নন্দীর ঠিক সামনে পান্না শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছিল।