ধর্ষককে বিয়ে? বিতর্কে CJI বোবদের সাফাই, 'কখনও একথা কাউকে বলিনি'

চলতি মাসের এক তারিখ ধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের একটি মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মীকে ওই নির্যাতিতাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি। অভিযুক্ত বিবাহিত হলেও নির্যাতিতাকে বিয়ে করতে চাইলে আদালতের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে, এমনই আশ্বাস দিতে দেখা গিয়েছিল প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেকে। দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া তুমুল বিতর্কের মাঝে এবার মুখ খুললেন বোবদে।

Advertisement
ধর্ষককে বিয়ে? বিতর্কে CJI বোবদের সাফাই, 'কখনও একথা কাউকে বলিনি'পয়লা মার্চ বোবদের মন্তব্য নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল
হাইলাইটস
  • ধর্ষককে কখনই বিয়ে করতে বলেননি
  • নারী বিদসে বিতর্কের অবসান টানতে চাইলেন বোবদে
  • পয়লা মার্চ তাঁর মন্তব্য নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল

চলতি মাসের এক তারিখ ধর্ষণ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের একটি মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল গোটা দেশ। নাবালিকা ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত সরকারি কর্মীকে ওই নির্যাতিতাকে বিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছিলেন সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি। অভিযুক্ত বিবাহিত হলেও নির্যাতিতাকে বিয়ে করতে চাইলে আদালতের তরফে সব রকম সাহায্য করা হবে, এমনই আশ্বাস দিতে দেখা গিয়েছিল  প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদেকে। দেশ জুড়ে তৈরি হওয়া তুমুল বিতর্কের মাঝে এবার মুখ খুললেন বোবদে। দাবি করলেন তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 

সরকারি আমলার স্ত্রী নির্বাচনে! সরছেন TMC প্রার্থী লাভলি মৈত্রের IPS স্বামী

নিজের সাফাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবসকেই বেছে নিয়েছিলেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি। বোবদে বলেন, মহিলাদের প্রতি তাঁর পূর্ণ সম্মান ও আস্থা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট নারীত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলেও জানিয়েছেন দেশের প্রধান বিচারপতি। এরপরেই ধর্ষণ মামলায় দেশে ঝড় ওঠা তাঁর মন্তব্য নিয়ে সাফাই দেন বোবদে। বলেন, "আমরা ধর্ষণে অভিযুক্তকে বিয়ে করতে বলিনি। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনি কি বিবাহ করবেন?"

'এই নিয়ে চারবার, ওঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই,' মিঠুনকে নিশানা তৃণমূল নেতাদের

ধর্ষণকারী নাবালিকাকে বিয়ে করলে তাঁর  চাকরি যাতে না যায়, তা দেখবেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন বোবদে। প্রধান বিচারপতির এমন মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল নেটমাধ্যম। নেটাগরিকদের প্রশ্ন ছিল , ধর্ষণের পর বিয়ে করলেই কি অপরাধ মাফ হয়ে যায়? দেশের সর্বোচ্চ আদালত কি তাহলে ধর্ষণকে আর গুরুতর অপরাধ হিসেবে দেখছে না? নাকি ধর্ষণকারীর সঙ্গে সংসার করিয়ে মেয়েটিকেই সাজা দেওয়া হচ্ছে? এদিন অবশ্য প্রধান বিচারপতি দাবি করেন, তাঁর বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপিত করা হয়েছে। 

যে মামলা নিয়ে বিতর্ক
গত পয়লা মার্চ সুপ্রিম কোর্টে মোহিত সুভাষ চবন নামে এক ব্যক্তির জামিনের আবেদনের ওপরে শুনানি ছিল। অভিযুক্ত মোহিত সুভাষ চহ্বাণ মহারাষ্ট্র সরকারের বিদ্যুৎ দফতরের কর্মী। এক স্কুল পড়ুয়াকে ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। যৌন নির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা (পকসো) আইনে মামলা হয়। গ্রেফতারি থেকে সুরক্ষা পেতে শীর্ষ আদালতে দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি।  সেই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বোবদে যে মন্তব্য করেন, তা নিয়েই বিতর্ক শুরু হয় দেশ জুড়ে। শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বোবদে বলেন, ‘‘মেয়েটিকে ফুঁসলেছেন আপনি। ধর্ষণ করেছেন। বিয়ে করতে চাইলে, আমরা সাহায্য করতে পারি। তা না হলে চাকরি তো যাবেই। জেলেও যেতে হবে।’’ জবাবে অভিযুক্তের আইনজীবী জানান, নির্যাতিতা থানায় যাওয়ার পর মোহিতের মা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বিয়েতে রাজি হয়নি ওই কিশোরী। তার পর পুলিশের মধ্যস্থতায় একটি লিখিত নথি তৈরি হয়, যেখানে বলা হয়, মেয়েটির বয়স ১৮ পেরোলে অভিযুক্তের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হবে তার। তার পরেও মেয়েটি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করায় তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি তাঁর মক্কেল। পয়লা মার্চের মন্তব্য  নিয়ে দেশ জুড়ে নারী অধিকার  আন্দোলনকারীদের তীব্র সমালোচনা  মুখে পড়তে হয় বোবদেকে। ধর্ষণের মতো অপরাধকে ‘লঘু’ করার চেষ্টা করেছে সুপ্রিম কোর্ট, এমনই অভিযোগ উঠেছিল দেশের প্রধান বিচারপতি বোবদের বিরুদ্ধে। বিষয়টিকে নারীদের প্রতি অবমাননাকর আখ্যা দেন দেশের বিদ্বজ্জন ও নারীবাদীরা। বোবদের পদত্যাগের দাবিতে সই করেন ৫ হাজারের বেশি মানুষ। মনে করা হচ্ছে, এরই জেরেই নারী দিবসে  ‘সাফাই’ দিলেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বোবদে। এদিন  অন্তঃসত্ত্বা এক নাবালিকার গর্ভপাতের আর্জির শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতি বোবদের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে। সেখানেই  বোবদে দাবি করেন তাঁদের বেঞ্চে নারীত্বের সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করা হয়। 

Advertisement

 

POST A COMMENT
Advertisement