তৃতীয়বার বাংলায় ক্ষমতায় আসার পরেই জাতীয় রাজনীতিতে বিশেষ নজর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তথা তৃণমূলের। আর তার আগে ২০২৩-এ হতে চলা ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করেছে ঘাসফুল শিবির। সেই মতো কর্মসূচিও শুরু হয়ে গিয়েছে। ছকে নেওয়া হচ্ছে রণকৌশল। বাংলার প্রতিবেশী এই রাজ্যে যাতায়াত বেড়েছে তৃণমূল নেতানেত্রীদের। সংগঠন মজবুত করার ওপরে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ জোর। তবে গোটা প্রক্রিয়াটা যে খুব একটা সহজে হচ্ছে, তেমনটা কিন্তু নয়। গত কয়েকদিনে ত্রিপুরায় বেশকয়েকবার আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূল (TMC) নেতৃত্ব। কিন্তু তারপরেও থেমে যায়নি ঘাসফুল ব্রিগেড। কেউ কেউ মনে করছেন আক্রান্ত হওয়ার পর বরং আরও আক্রমণাত্মক মেজাজে ত্রিপুরার লড়াইতে নেমেছে তৃণমূল। যার কিছুট ঝলক রবিবারই দেখা গিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কারও কারও।
থানায় বসেই পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদ
দলীয় কাজে ত্রিপুরায় (Tripura) গিয়ে শনিবার সেখানে আক্রান্ত হন তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্তের মতো নেতানেত্রীরা। পরে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে তাঁদেরকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক সরগরম হয়ে ওঠে ত্রিপুরা ও বাংলার রাজনীতি। রবিবারই তড়িঘড়ি ত্রিপুরায় যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। ছিলেন কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু, দোলা সেনও।
তৃণমূল নেতৃত্ব ত্রিপুরায় পৌঁছানোর পর থেকেই চড়তে শুরু করে রাজনৈতিক পারদ। ওঠে 'গো ব্যাক' স্লোগান। কিন্তু তারপরেও, খোয়াই থানায় বসেই পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে রীতিমতো বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়তে দেখা গেল তৃণমূল নেতৃত্বকে। কখনও ধৃতদের মুক্তি দেওয়া, কখনও আবার জামিন অযোগ্য ধারাগুলি তুলে নেওয়ার দাবিও জানালেন তাঁরা। থানায় বসেই পুলিশের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে দালালি করার অভিযোগ তুললেন অভিষেক-দোলারা। সাম্প্রতিক অতীতে এই ধরনের ঘটনা একপ্রকার নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
পশ্চিমবঙ্গেও রয়েছে অভিযোগ
কারণ পশ্চিমবঙ্গেও পুলিশ তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে বলে প্রায়শই অভিযোগ করতে শোনা যায় বিজেপি (BJP) তথা অন্যান্য় বিরোধীদের। নির্বাচনের আগে কখনও হয়ত পুলিশের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারির সুরেও কথা বলেছেন তাঁরা। কিন্তু থানায় বসেই পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ার মতো ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে বিরোধীদের তেমন করতে দেখা গিয়েছে বলে মনে করছে পারছে না রাজনৈতিকমহল। সেই দিক থেকে এই ঘটনা বিরল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন দেখার, ত্রিপুরার বুকে তৃণমূলের এহেন মানসিকতা আদতে ঘাসফুল শিবিরকে কোনও লাভ এনে দিতে পারে কি না।
আরও পড়ুন - ভোজ্য তেলের আগুন দাম, জাতীয় প্রকল্প ঘোষণা মোদীর