
দশমী মানেই উমার কৈলাসে ফেরার পালা। চারিদিকে বিষাদের সুর। ভারাক্রান্ত মন নিয়েই সকলে ঘরের মেয়েকে বিদায় জানায়। উৎসবপ্রেমী বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ এই দুর্গাপুজো। তাই তো বছরের নতুন পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার হাতে পেলেই বাঙালিরা যেই দিনগুলিতে সবার আগে চোখ বোলায়, তার মধ্যে দুর্গাপুজো (Durga Puja) একটি।
ঢাকের তাল, সিঁদুর খেলা, দেবীর বরণের পর জলাশয়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর কোলাকুলি, শুভেচ্ছা বিনিময়, মিষ্টি মুখ আর একরাশ নতুন আশা নিয়ে শুরু হয় বাঙালির বিজয়া পর্ব। জানুন দেবী বরণের নিয়মকানুন।
দশমীতে দেবী বরণে প্রয়োজনীয় উপকরণ
বরণ ডালায় রাখুন তেল, সিঁদুর, ধান, দুর্বা, ফুল, বেল পাতা, ২টি পান ও মা দুর্গার একটি পানের খিলি, একটি ১ টাকার কয়েন, ধূপকাঠি ও মোমবাতি।
দশমীতে দেবী বরণের নিয়ম
মহাদশমীর দিন স্নান করে শুদ্ধ বস্ত্র পরে, দুই পায়ে আলতা ও সিঁথিতে সিঁদুর পরার নিয়ম। দেবী দুর্গাকে বরণ করার সময় মাথায় ঘোমটা টেনে গায়ে আঁচল দিতে হয়। খেয়াল রাখতে হবে শাড়ির আঁচল বা চুলের ঝাপটা যেন মায়ের গায়ে না লাগে। সবার প্রথমে মা দুর্গার কপালে ও বাম হাতের শাঁখায় সিঁদুর দেবেন। এরপর গালে সামান্য সিঁদুর লাগান। তিনবার পান পাতা দিয়ে মুখ মুছিয়ে, পায়ে ধান-দুর্বা ও ফুল-বেলপাতা অর্পণ করুন ভক্তি মনে। এরপর মাকে মিষ্টি মুখ ও জলপান করিয়ে, সবশেষে হাতে গুঁজে দিন পানের খিলি। দেবী দুর্গার বরণের পর একে একে চার ছেলে-মেয়ে গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতী ও কার্তিককে ব্রণ করে, মিষ্টিমুখ করানো নিয়ম।
দশমীতে সিঁদুর খেলার গুরুত্ব
সনাতন ধর্মে সিঁদুরের গুরুত্ব অনেক। বিবাহিত মহিলারা স্বামীর মঙ্গল কামনা করে সিঁদুর পরেন। সিঁদুরকে মনে করা হয় ব্রহ্মার প্রতীক। এদিকে ব্রহ্মা, জীবনের সমস্ত কষ্ট দূর করে আনন্দে ভরে রাখেন বলেই বিশ্বাস করা হয়। সিঁথিতে সিঁদুর পরলে, কপালে ব্রহ্মা অধিষ্ঠান করেন বলেই মনে করা হয়। এই কারণে দশমীর দিন হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী দেবী বরণের পর, সিঁদুর খেলার নিয়ম রয়েছে। এটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করেন।
অন্যদিকে কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষে কৃষ্ণের মঙ্গল কামনা করে গোপিনীদের সিঁদুর খেলার উল্লেখ পাওয়া যায় শ্রীমৎভাগবতে। দশমীর দিন বিবাহিত মহিলারা আগে দেবীকে বরণ করেন, তাঁর কপালে সিঁদুর ছুঁইয়ে, সেই সিঁদুর একে অন্যের সিঁথিতে দেন। মনে করা হয় এতে সৌভাগ্য পাওয়া যায়।
বিজয় দশমী ২০২৩-র নির্ঘণ্ট
* ৬ কার্তিক ইং ২৪ অক্টোবর বুধবার- বিজয় দশমী
* পূর্বাহ্ণ ঘ ৯।২৮। বিজয়া দশমী দিবা ঘ ১২। ৪২ পর্যন্ত। পূর্বাহ্ণ মধ্যে চরলগ্নে ও চরণেবাংশে (কিন্তু কালবেলানুরোধে দিবা ঘ ৭।৬ মধ্যে পুনঃ দিবা ঘ ৮.৩২ গতে পূর্বাহ্ণ মধ্যে)
শ্রীশ্রীশারদীয়া দুর্গাদেবীর দশমীবিহিত পুজো সমাপনাস্তে বিসর্জন প্রশস্তা (অত্রকৃত্যে বারবেলানুরোধে নিরবকাশে ন বহু সম্মতঃ)।