ফের কালীপুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বালুরঘাট, খ্যাতি বিশ্বজোড়াBollakali Puja 2025: এখানে এখন নতুন করে কালীপুজোর প্রস্তুতি। দীপান্বিতা অমাবস্যার কালীপুজোর সঙ্গে এর কোনও যোগাযোগ নেই।আজ থেকে না এ প্রথা আজ থেকে নয়, শতাব্দীরও বেশি সময় থেকে চলে আসছে এই রীতি। এই বাংলারই দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের এই কালীপুজো রাসপূর্ণিমার পরের শুক্রবার হয়। বিখ্যাত বোল্লাকালী নামে।
ফের মাতৃআরাধনায় মুখর বালুরঘাটের বোল্লা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বোল্লা গ্রামে প্রতিবছর যেমন আয়োজিত হয় উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহ্যবাহী বোল্লাকালী পুজো। তেমনই এবারও প্রস্তুতি তুঙ্গে। চার দিন ধরে চলে পুজো আর বিশাল মেলা। সেই মেলাই যেন এক মিলনমেলা। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে ভক্তদের সমাগমে ভরে ওঠে গোটা গ্রাম।
জেলার সদর শহর বালুরঘাট থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরের এই বোল্লা মন্দির শুধু ধর্মীয় পীঠক্ষেত্রই নয়, উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম কালীপুজোর কেন্দ্রও বটে। কথিত আছে, এক গ্রামবাসী স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে মা কালী মূর্তির শিলাখণ্ড উদ্ধার করে নিত্যপূজা শুরু করেন। পরে ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার মুরারিমোহন চৌধুরীরর ইংরেজবিরোধী বিদ্রোহের সময় মা-র প্রতি তাঁর মানতের ফলেই এই রাসপূর্ণিমা-পরবর্তী শুক্রবারের বাৎসরিক পূজার প্রচলন হয়।
বর্তমানে সাত হাত উঁচু মাতৃমূর্তি সোনার গয়নায় সজ্জিত হয়ে পূজিত হন। প্রায় ১৪ কেজি সোনার অলঙ্কারে সেজে ওঠেন দেবী। গত বছর সেই সাজে নতুন সংযোজন হিরের আংটি। তিন ভরি সোনায় তৈরি আংটিতে বসানো তিনটি বড় মাপের হিরে।
বাতাসা মেলা
পুজোর সঙ্গে সঙ্গে বোল্লা মেলার প্রাণ হল বাতাসা মেলা। ভাইফোঁটার পর থেকেই স্থানীয় ও মালদহ জেলার কারিগররা এসে খাজা-বাতাসা বানানো শুরু করেন। কয়েকদিন ধরে দিনরাত এক করে তৈরি হয় শত শত কুইন্টাল মিষ্টান্ন, যা বিক্রি হয় লক্ষাধিক ভক্তের মধ্যে।
শুধু দক্ষিণ দিনাজপুরই নয়, দুই দিনাজপুর, মালদহ, কোচবিহার, এমনকি বাংলাদেশ থেকেও হাজার হাজার ভক্ত এসে ভিড় জমান বোল্লার মাঠে। ভক্তদের বিশ্বাস, বোল্লা রক্ষা কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করলে সমস্ত দুঃখ, রোগ আর ঋণ থেকে মুক্তি মেলে।
শতাব্দীপ্রাচীন এই পুজোর মহিমা আজও অটুট। ধর্ম, ঐতিহ্য আর ভক্তির এই মেলবন্ধনই বোল্লাকে বারবার পরিণত করে উত্তরবঙ্গের আধ্যাত্মিক রাজধানীতে।