scorecardresearch
 

Bollakali Puja 2024: ফের কালীপুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বালুরঘাট, খ্যাতি বিশ্বজোড়া

Bollakali Puja Of Balurghat: প্রত্যেক বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বালুরঘাটের বোল্লা এলাকায় বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরবঙ্গের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন এই বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো। পুজোর পাশাপাশি চারদিন মেলাও বসে। এবারে ১ ডিসেম্বর বোল্লা রক্ষাকালী মায়ের পুজো অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে এদিন বোল্লায় হল মায়ের কাঠামো পুজো। এরপরই শুরু হবে মায়ের প্রতিমা তৈরির কাজ।

Advertisement
ফের কালীপুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বালুরঘাট, খ্যাতি বিশ্বজোড়া ফের কালীপুজোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বালুরঘাট, খ্যাতি বিশ্বজোড়া

Bollakali Puja Of Balurghat: প্রত্যেক বছর রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার বালুরঘাটের বোল্লা এলাকায় বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। উত্তরবঙ্গের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ এবং প্রাচীন এই বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো। পুজোর পাশাপাশি চারদিন মেলাও বসে। এই পুজো উপলক্ষে বসে বাতাসার মেলা।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। জেলার সদর শহর বালুরঘাট শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে বোল্লা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্য ও মাহাত্ম্য সমৃদ্ধ রক্ষা কালী মাতা মন্দির। যা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বোল্লা কালী পুজো ও মন্দির। এই মাতা বোল্লা কালী মাতা বলেই সুপ্রসিদ্ধ।

রাসপূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের বাৎসরিক পুজো অনুষ্ঠিত হয় ও সোমবারে মায়ের বিসর্জন হয়। এই কয়েকদিন যাবত মায়ের পুজোকে ঘিরে বিশাল মেলা হয়। এছাড়াও প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও মঙ্গলবারে মায়ের পুজো হয়। এই মেলা উত্তরবঙ্গের দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ঐতিহ্যপূর্ণ। দুই দিনাজপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা ও রাজ্য, এমনকি বাংলাদেশ থেকেও বহু মানুষ এই মেলা দেখতে আসেন। 

আরও পড়ুন

বোল্লা পুজোর অন্যতম ভোগ বাতাসা বা মিষ্টান্ন ভোগ। তাই পুজোয় বাতাসার জোগান স্বাভাবিক রাখতে প্রায় এক মাস আগে থেকেই বানানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। নিজ জেলার বিভিন্ন প্রান্ত সহ পার্শ্ববর্তী জেলা মালদহ থেকে এসেছেন মিষ্টান্ন গড়ার কারিগরেরা। বাতাসার কারিগর জানান, “সারা বছরে তাঁরা একটাই বড় মেলা করে। ভাইফোঁটার পর পরেই বোল্লা মেলা চত্বরে আসেন। এরপরেই জায়গা ও বাড়ি ভাড়া নিয়ে জোরকদমে কাজ চলতে থাকে বাতাসা তৈরির”।

সঙ্গে থাকে বেশ কয়েকজন কর্মচারী। তাঁরা সকলে মিলে কয়েকদিন লাগাতার নাওয়া খাওয়া ভুলে খাজা-বাতাসা বানাতে লেগে পড়ে। তৈরি হয় কুইন্টাল কুইন্টাল খাজা-বাতাসা।” রাস পূর্ণিমার পরের শুক্রবার পুজো হয় মা বোল্লার। প্রতি বছর বোল্লা মায়ের পুজো ও মেলায় লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয়। পুজোর কয়েক দিনে কয়েক হাজার কুইন্টাল বাতাসা বিক্রি হয়। জেলা সহ বাইরে থেকে বাতাসা বিক্রেতারা বোল্লা মেলায় পসরা সাজিয়ে বসেন।

Advertisement

কথিত আছে, জনৈক এক ব্যক্তি মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে পুকুর থেকে মায়ের শিলাময় রূপটি উদ্ধার করেন ও প্রতিষ্ঠা করে নিত্য পূজা শুরু করেন। এই সময়ে মাকে ‘মরকা কালী’ বলে অভিহিত করা হত। প্রতি জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যায় হত মায়ের বিশেষ পূজা। এরপর ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার মুরারিমোহন চৌধুরী ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ঘটনাক্রমে বহু গ্রামবাসী সহ তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তখন তিনি মড়কা কালী মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন। তিনি বেকসুর খালাস পান। জ্যৈষ্ঠ মাস আসতে দেরি থাকায়; সেই সময় তিনি ধার্য করেন যে, রাস পূর্ণিমার পরবর্তী শুক্রবারে মায়ের পুজো করবেন। সেই থেকে দেবীর বাৎসরিক পুজো ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বর্তমানে সাড়ে সাত হাত মাতৃমূর্তি পূজিত হন। কয়েক হাজার পাঁঠাবলি ও একটি মহিষ বলি হয়। প্রায় ১৪ কেজি সোনার গহনায় মায়ের প্রতিমা সজ্জিত হয়। বহু ভক্ত মানত করা ছোট ছোট কালী মূর্তিতে পূজা দেন ও বাতাসা নৈবেদ্য অর্পণ করেন। স্থানীয় মুসলিমরাও হিন্দুদের সাথে মায়ের উদ্দ্যেশ্যে পুজো দেন। বল্লভ মুখোপাধ্যায় বলে কোনো জমিদারের নাম থেকে অঞ্চলটির নাম হয় বোল্লা।  বোল্লা গ্রামে অবস্থিত রক্ষা কালী মাতা ‘বোল্লা রক্ষা কালী’ বা ‘বোল্লা কালী’ নামে ভক্ত মহলে সুপ্রসিদ্ধ। আর সে থেকেই বোল্লা কালী মাতার পুজো হয়ে আসছে ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহ। 

এবার শতাব্দী প্রাচীন বালুরঘাটের বোল্লা কালী সাজবেন হিরের অলংকারে। মায়ের হাতের খড়গ থেকে পুরো শরীর পর্যন্ত সোনার গয়নায় মোড়া থাকে। কিন্তু এবার তার হাতে হিরের আংটিও থাকবে। জানা গিয়েছে, প্রায় তিন ভরি সোনা দিয়ে তৈরি ওই আংটিতে তিনটি বড় মাপের হিরে বসানো থাকবে। বালুরঘাটর এক ব্যাবসায়ীর তৎপরতায় প্রথম ওই হিরের আংটি আনা হচ্ছে। ১ ডিসেম্বর মায়ের পুজোর আগেই ওই আংটি আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

Advertisement