Charak Puja 2025 Rituals: পতিত ব্রাহ্মণেরা পৌরোহিত্য করেন চড়ক পুজোর! প্রচলিত লোক সংস্কৃতির অজানা কাহিনি

Charak Puja 2025 Rituals: যুগ যুগ ধরে প্রচলিত থাকলেও, এই পুজোর সূচনা নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলায় একেক নামে চড়ক পুজো-আচার পালন করা হয়।

Advertisement
পতিত ব্রাহ্মণেরা পৌরোহিত্য করেন চড়ক পুজোর! প্রচলিত লোক সংস্কৃতির অজানা কাহিনি

বাঙালির নানা পার্বণের মধ্যে নববর্ষ গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। বছরের শুরুতে যেমন উৎসব, সেরকম বছরের শেষ দিনের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে নানা রীতিনীতি- আচার (Rituals)। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তিতে (Chaitra Sankranti) পালিত হয় বাঙালি হিন্দুদের আরও এক  অনুষ্ঠান, চড়ক পুজো (Charak Puja)। যুগ যুগ ধরে প্রচলিত থাকলেও, এই পুজোর সূচনা নিয়ে নানা মতভেদ রয়েছে। পশ্চিমবাংলার বিভিন্ন জেলায় একেক নামে চড়ক পুজো-আচার পালন করা হয়। গম্ভীরা পুজো, শিবের গাজন, নীল পুজো ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন নামে চড়ক পুজো করা হয়। 

চড়ক পুজোর প্রচলন 

লোককথা অনুযায়ী প্রচলিত যে,  ১৪৮৫ সালে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা চড়কের পুজোর প্রচলন করেন। যদিও রাজ পরিবারের লোকেরা এই পুজো শুরু করলেও, চড়ক পুজো কখনও রাজবাড়ির পুজো ছিল না। এটি ছিল হিন্দু সমাজের এক প্রচলিত লোক সংস্কৃতি।  সাধারণত সব পুজোয় ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের লোকের প্রয়োজন হলেও, এক্ষেত্রে কিন্তু নিয়ম একটু আলাদা। শোনা যায়,  যেহেতু চড়ক পুজোর সন্ন্যাসীরা ছিলেন হিন্দু ধর্মের তথা কথিত নীচু সম্প্রদায়ের লোক। তাই এই পুজোয় এখনও কোনও ব্রাহ্মণ লাগে না। 

 

Charak Puja 2025

চড়ক পুজোর নিয়মকানুন- রীতিনীতি

চড়ক পুজোর আগের দিন চড়ক গাছকে পরিষ্কার করে, জলভরা একটি পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ রাখা হয় সেখানে। এই প্রতীক শিবলিঙ্গটি 'বুড়ো শিব' নামে পরিচিত। এই পুজোর পৌরোহিত্য করেন পতিত ব্রাহ্মণেরা। এই প্রচলিত লোক সংস্কৃতির বিশেষ কিছু রীতি রয়েছে। যা শুনে অনেকের গায়ে কাঁটা দিতে পারে। কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত ছাইয়ের ওপর হাঁটা, কাঁটা, ছুরি বা ধারালো কিছুর ওপর লাফানো, শিবের বিয়ে,অগ্নিনৃত্য ইত্যাদি এই পুজোর বিশেষ অঙ্গ হিসাবে মনে করা হয়। যদিও বর্তমানে এই সব ঝুঁকিপূর্ণ নিয়ম অনেকটাই কমে গেছে।

 

Charak Puja 2025

চড়ক পুজোর সঙ্গে জড়িত বিশ্বাস

গ্রাম বাংলায় এই সব পুজোর সঙ্গে রয়েছে ভূতপ্রেত বা পুনর্জন্মবাদের ওপর বিশ্বাস। মনে করা হয়, নানা রকমের দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ। চড়কগাছের সঙ্গে ভক্তদের লোহার হুড়কো দিয়ে বেঁধে দ্রুতবেগে ঘোরানোর রীতি আছে। সেই সঙ্গে পিঠে, হাতে, পায়ে, জিভে এবং শরীরের অঙ্গে লোহা গেঁথে দেওয়া হয়। যদিও ১৮৬৫ সালে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এটি বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে আজও গ্রামবাংলার অনেক স্থানে এই ভাবে চড়ক পুজো পালন করা হয়। মূলত কৃষিপ্রধান অঞ্চলগুলিতে চড়ক উৎসব বেশি করে পালিত হয়। 

Advertisement

Charak Puja 2025

পশ্চিমবাংলার ভিন্ন স্থানে চড়ক 

নদীয়া জেলার শান্তিপুরের জলশ্বর শিবের গাজন উপলক্ষে শত বছরের পুরনো মেলা বসে। তারকেশ্বর ধামেও গাজনের মেলা বসে। এছাড়াও বাঁকুড়া জেলার খামারবেড়ে গ্রামে, হুগলীর চণ্ডীপুর গ্রাম সহ আরও একাধিক স্থানে শিবের গাজন ও চড়কের জন্য বিশেষ মেলা বসে।   

 

POST A COMMENT
Advertisement