
বছরের নতুন পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার হাতে পেলেই বাঙালি যে দিনগুলিতে সবার আগে চোখ রাখে, তার মধ্যে দুর্গা পুজো অন্যতম। উৎসবপ্রেমী বাঙালির সবচেয়ে বড় পার্বণ দুর্গা পুজো (Durga Puja)। গোটা বিশ্বের বাঙালিরা জাকজমকপূর্ণ উদযাপন করেন এই উৎসবের। দেবী দুর্গা, মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন, এই জন্যেই বিশ্বাস করা হয় যে, এই উৎসব খারাপ শক্তির বিনাশ করে শুভশক্তির বিজয়।
এক বছরের দুর্গাপুজোর সমাপ্তি হতে না হতেই, সকলের প্ল্যানিং শুরু হয় পরের বছরের। বড় পুজো প্যান্ডেলগুলিতে বৈঠক বসে, পরের বছরের থিম নিয়ে। কলকাতা ও জেলার পুজোর পাশাপাশি বেলুড় মঠের পুজো বাংলার দুর্গোৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ১৯০১ সালে বেলুড় মঠে প্রথম দুর্গাপুজো হয়। মঠে প্রথম দুর্গাপুজো শুরু করেন স্বামী বিবেকানন্দ।
স্বামীজি মাতৃত্বের দেবত্ব এবং নারীত্বের পবিত্রতাকে মাতৃপুজোর মধ্যে দিয়ে একটা সংহত রূপ দিতে চেয়েছিলেন। সাধারণত, জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজো দিয়ে শুরু হয় দুর্গাপুজোর তোরজোর। জেনে নিন বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, এ বছর ১২, ১৩ ও ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ (২৯ সেপ্টেম্বর, ৩০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর) পুজো হবে। বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পুজো ইউটিউবে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।
বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর নির্ঘণ্ট
মহাসপ্তমী (সোমবার)- ২৯ সেপ্টেম্বর (১২ আশ্বিন)
* পূজারম্ভ সকাল ৫.৪০ মিনিটে
মহাষ্টমী (মঙ্গলবার)- ৩০ সেপ্টেম্বর (১২ আশ্বিন)
* পূজারম্ভ সকাল ৫.৪০ মিনিটে
* কুমারী পুজো- পূজারম্ভ সকাল ৯টা
* সন্ধিপুজো- সন্ধ্যা ৫.৪৩ থেকে ৬.৩১ মিনিট
মহানবমী (বুধবার) - ১ অক্টোবর (১২ আশ্বিন)
* পূজারম্ভ সকাল ৫.৪০ মিনিটে
* হোম- দেবীর ভোগারতির পরে
পুষ্পাঞ্জলি
রোজ দেবীর ভোগারতির পরে
সন্ধ্যারতি
রোজ শ্রীশ্রীঠাকুরের আরতির পরে
বেলুড় মঠের দুর্গাপুজোর সঙ্গে জড়িত কাহিনি
বেলুড় মঠে দুর্গাপুজোর পিছনে রয়েছে এক অলৌকিক দর্শন। জানা জায়, ১৯০১ সালে দুর্গা পুজোর কয়েকদিন আগে, বেলুড় মঠে পুজো করার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বয়ং স্বামীজি। আর কম-বেশি ঠিক সেই সময়েই, স্বামী ব্রহ্মানন্দজী মহারাজেরও একটি আশ্চর্য দর্শন হয়েছিল। তিনি মা দুর্গাকে দক্ষিণেশ্বর থেকে গঙ্গা পেরিয়ে বেলুড় মঠে আসতে দেখেছিলেন। এটা শুনে স্বামী বিবেকানন্দ ব্রহ্মানন্দজি মহারাজকে অবিলম্বে দুর্গা পুজোর প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন।
যদিও সেসময় হাতে ছিল খুব অল্প সময়। মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়াল প্রতিমা পাওয়া। কুমারটুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, একটি জায়গায় দুর্গার একটি মাত্র মূর্তি আছে। যাঁরা বায়না দিয়ে গিয়েছিলেন, তাঁরা নিতে আসেননি। সেটিই ওই মৃৎশিল্পী সন্ন্যাসীদের বিক্রি করে দিতে সম্মত হলেন। এরপরই শুরু হল দেবীর পুজো।