এবার জন্মাষ্টমী ১৬ অগাস্ট (Janmashtami 2025) পালিত হবে। এই দিনে ভগবান কৃষ্ণকে বিভিন্ন ধরনের খাবার নিবেদন করা হয়। এর মধ্যে একটি হল ৫৬ ভোগ (56 Bhog Thali on Janmashtami)। অর্থাৎ, একটি থালা, যাতে ৫৬ ধরনের ভোগ থাকে। এটি কেবল প্রসাদই নয়, বরং এটি প্রেম এবং ভক্তির প্রতীকও বিবেচিত হয়। কিন্তু এতে কী কী সব থাকে। আসুন, এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই। আসুন জেনে নেওয়া যাক এই ৫৬ ভোগে (৫৬ ভোগের তালিকা) কোন কোন খাবার আসে এবং এর ঐতিহ্য কীভাবে শুরু হয়েছিল। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কেন এই সংখ্যাটি ৫৬ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল? কমও নয়, বেশিও নয়, এর পিছনে লুকিয়ে আছে একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় পৌরাণিক কাহিনী, যা ঈশ্বরের ভক্তি, প্রেম এবং অলৌকিক কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।
৫৬ ভোগ কী?
'ছাপান্ন ভোগ' অর্থ ৫৬ ধরনের সাত্ত্বিক খাবার। এতে রয়েছে নানা ধরনের মিষ্টি, নানা ধরনের নোনতা, ফল, শস্য এবং দুধ থেকে তৈরি বিশেষ জিনিস। বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই ছাপান্ন ভোগ খুব পছন্দ করেন।
কেন ছাপান্ন ভোগ দেওয়া হয়? (What is the religious and mythological significance of 56 Bhog?)
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ব্রজের লোকেরা প্রতি বছর দেবরাজ ইন্দ্রকে খুশি করার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করত, যাতে সারা বছর ভাল বৃষ্টিপাত হয়। শৈশবে একবার শ্রীকৃষ্ণ নন্দ বাবাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন। নন্দ বাবা বলেছিলেন যে এই পুজো ইন্দ্রদেবের জন্য করা হয়। তখন শ্রীকৃষ্ণ জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেবল বৃষ্টির জন্য কেন ইন্দ্রের পুজো করা হয়? আমাদের গোবর্ধন পর্বতেরও পুজো করা উচিত, যা আমাদের খাদ্যশস্য, ফলমূল, শাকসবজি এবং পশুদের জন্য খাদ্য সরবরাহ করে।
শ্রীকৃষ্ণের এই কথা শুনে ইন্দ্রদেব রেগে যান এবং ব্রজে প্রবল বৃষ্টিপাত শুরু করেন, যার ফলে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এমন পরিস্থিতিতে, মানুষকে রক্ষা করার জন্য, শ্রীকৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতকে তাঁর কনিষ্ঠ আঙুলে তুলে নেন এবং তার নীচে থাকা সকলকে আশ্রয় দেন। কথিত আছে যে সাত দিন ধরে পর্বতটি তুলে রাখার ফলে, শ্রীকৃষ্ণ কিছুই খাননি। বৃষ্টি থামার পর, ব্রজের লোকেরা ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সাত দিনের উপবাসের ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫৬ ধরনের খাবার প্রস্তুত করে উৎসর্গ করেন। তারপর থেকে জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে ৫৬ ধরনের ভোগ নিবেদনের রীতি প্রচলিত হয়ে ওঠে।
ছাপান্ন ভোগে কী কী থাকে? (What are the key dishes included in the 56 Bhog Thali?)
মাখন, চিনির মিছরি, পেড়া, লাড্ডু, রাবড়ি, পুরি, কচুরি, হালুয়া, খিচুড়ি, ফল, দই-পাকওয়ান, ঠান্ডা পানীয় এবং বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি, নোনতা এবং ফলমূল অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই সমস্ত খাবার সাত্ত্বিক এবং ঈশ্বরের কাছে প্রিয় বলে বিবেচিত হয়।