scorecardresearch
 

Nil Shasthi 2024 Puja Timing- Mantra: আজ নীলষষ্ঠীর ব্রত, কখন পুজো করলে সন্তানের মঙ্গল হবে? জানুন শিবের পুজোর মন্ত্র

Nil Shasthi 2024 Vrat: প্রায় প্রতি বাড়ির মহিলারাই এদিন সন্তানের মঙ্গল কামনায় ব্রত পালন করেন। বিশেষত মায়েরা সন্তানের কল্যাণ কিংবা সন্তান লাভের বাধা থেকে মুক্তি পেতে এই ব্রত পালন করেন। শিব মন্দিরগুলিতে ভিড় জমান ভক্তেরা।

Advertisement
নীলষষ্ঠীর পুজো নীলষষ্ঠীর পুজো

আজ (শুক্রবার) নীলপুজো বা নীলষষ্ঠী (Nil Sasthi)। নীলকণ্ঠ মহাদেব ও দেবী নীলচণ্ডিকা এবং মা ষষ্ঠীর কৃপা লাভ হয়, এদিন নিষ্ঠা করে পুজো করলে। প্রায় প্রতি বাড়ির মহিলারাই এদিন সন্তানের মঙ্গল কামনায় ব্রত পালন করেন। বিশেষত মায়েরা সন্তানের কল্যাণ কিংবা সন্তান লাভের বাধা থেকে মুক্তি পেতে এই ব্রত পালন করেন। শিব (Lora Shiva) মন্দিরগুলিতে ভিড় জমান ভক্তেরা। যাদের বাড়িতে শিবলিঙ্গ আছে, তারা বাড়িতেই আয়োজন করেন পুজোর। 
    
নীলষষ্ঠী ২০২৪-র দিনক্ষণ (Nil Sasthi Date & Time)

সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তির আগে অর্থাৎ চড়ক উৎসবের আগের দিন নীলপুজো পালিত হয়। এই বছর ১২ এপ্রিল অর্থাৎ ২৯ চৈত্র পড়েছে নীল পুজোর তারিখ। এই পুজোর কোন বিশেষ মুহূর্ত আলাদা করে থাকে না। তবে নীলপুজোর দিন সন্ধ্যেবেলা শিবলিঙ্গে জল ঢেলে, সন্তানের নামে প্রদীপ বা মোম জ্বালানো সবচেয়ে শুভ।   

 

Nil Shasthi

ব্রতের নিয়ম (Nil Sasthi Puja Rules) 

নীলষষ্ঠীর দিন সারা দিন উপোস করে সন্ধ্যাবেলা শিবের মাথায় জল ঢালতে হয়। এরপর শিবের মাথায় বেলপাতা, ফুল ও একটি ফল ছুঁয়ে রাখতে হয়। এরপর  বা অপরাজিতার মালা পড়িয়ে, সন্তানের নামে একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রার্থনা করতে হয়। উপোস ভাঙার পরও এদিন ফল,সাবু ইত্যাদি ছাড়া ময়দার তৈরি খাবারই খেতে হয়। এমনকী সন্দক লবণ দিয়ে খাবার খেতে হয়। মনে করা হয় ব্রতের দিন উপোস করে নিষ্ঠা করে কিছু নিয়ম মানলে ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেন দেবাদিদেব।  

নীলপুজোর ব্রত পালনের উপকরণ (Ingredients For Nil Pujo) 

গঙ্গামাটি বা শুদ্ধ মাটি, বেল পাতা, গঙ্গা জল, দুধ, দই, ঘি, মধু, কলা, বেল, বেলের কাঁটা ও মহাদেবের পছন্দের কোনও ফুল। 

Advertisement

 

Nil Shasthi

কোনও শিব বিগ্রহের সামনে প্রার্থনা করুন এই মন্ত্র পাঠ করে (Shiva Mantra) 

ওঁ নমো নমঃ তৎসদস্য চৈত্র মাসে শুক্ল পক্ষে প্রতীপদ্যান্তিথৌ (নিজের গোত্র বলুন) গোত্রঃ শ্রী/ শ্রীমতী (নিজের নাম বলুন) শিব শক্তি ষষ্ঠী প্রীতিকামঃ দেবরস্যোক্ত নীলষষ্ঠী ব্রতমহং করিশ্যে।। 

ওঁ য়া গুঙ্গূরশয্যা সিনীবালী যা রাকা যা সরস্বতী। 
ইন্দ্রাণীমহ্ব উতয়ে বরুণানীং স্বস্তয়ে।। 

নীলষষ্ঠীব্রতং হ্যেতৎ কৃরিশ্যেইহং মহাফলম। 

নির্বিঘ্ন মে চাত্র ত্বৎ প্রসাদাজগৎপতে।। 

প্রতিপদ্যাং নিরাহারো ভূত্বা চৈবাপরেইহনি। 

ভোক্ষ্যেইহং ভুক্তিমুক্ত্যর্থং শরণং মে ভবেশ্বর।। 

Nil Shasthi

পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্র (Shiv Puja Pushpanjali Mantra) 

* প্রথমবার - 'ওঁ নমো শিবায় 

এষ সচন্দন পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি নমো নীলকণ্ঠায় নমঃ'

* দ্বিতীয়বার - 'ওঁ এষ সচন্দন পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি নমো নীলচণ্ডীকায় নমঃ' 

* তৃতীয়বার - 'ওঁ এষ সচন্দন পুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি নমো ষষ্ঠীদেবীয় নমঃ' 

Nil Shasthi

প্রণাম মন্ত্র ( Nil Shasthi Puja Pranam Mantra)

ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় পঞ্চবক্ত্রায় নীলকণ্ঠায় শূলিনে। 

নন্দি ভৃঙ্গি মহাব্যালগণ যুক্তায় শম্ভবে।।  

শিবায়ৈ হরকান্তায়ৈ প্রকৃত্যৈ সৃষ্টিহেতবে। 

নমস্তে ব্রহ্মচারিণ্যৈ নীলচণ্ডিত্র্যৈ নমো নমঃ ।। 

সংসারভয় সন্তাপাৎ পাহি মাং সিংহবাহিনি। 

রাজ্য সৌভাগ্য সম্পত্তিং দেহি মাম।। 

জয় দেবী জগন্মাত জগতানন্দকারী। 

প্রসীদ মম কল্যাণী নমস্তে ষষ্ঠী দেবীতে।। 

Nil Shasthi

কেন নীলষষ্ঠীর ব্রত পালন করা হয়? (Why Nil Shasthi Vrat is kept)  

শিবের অপর নাম নীলকণ্ঠ বা নীল। অনেকে মনে করেন, শিবের সঙ্গে নীলচণ্ডিকা বা নীলাবতী পরমেশ্বরীর বিয়ে উপলক্ষ্যে লৌকিক আচার-অনুষ্ঠান সংঘটিত হয় এদিন। শোনা যায়, দক্ষযজ্ঞে দেহত্যাগের পর সতী পুনরায় নীলধ্বজ রাজার বিল্ববনে আবির্ভূত হন ৷ এরপর রাজা তাকে নিজের মেয়ের মতো করে বড় করে শিবের সঙ্গে ফের বিয়ে দেন ৷ বাসর ঘরে মক্ষিপারূপ ধরে মৃত্যুবরণ করেন তিনি ৷ তা দেখে শোকে রাজা- রানিও প্রাণ বিসর্জন দেন ৷ তাই অনেকেই মনে করেন শিব ও নীলাবতীর বিবাহের স্মারক হল 'নীল পুজো৷' 

নীলষষ্ঠীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আরও একটি লোক কথা। পুরাকালে এক বামুন আর বামুনী ছিলেন। যারা অতি ভক্তি ভরে নানা ব্রত পালন করলেও তাদের সন্তান বেশিদিন বাঁচত না। এরকম ভাবে দিন কাটানোর সময়ে একদিন কাশীর গঙ্গা ঘাটের ওপর বসে দুঃখে দুজনে কাঁদছিলেন তারা। এই দেখে মা ষষ্ঠী, বুড়ি বামনীর বেশ ধরে এসে তাদের জিজ্ঞাসা করেন, "তোরা কাঁদছিস কেন?" 

বামুনী তার দুঃখের কথা জানালে, মা ষষ্ঠী প্রশ্ন করেন, "তোরা কি নীল ষষ্ঠী করেছিস?" বামনী উত্তর দেয়, "সে কী মা? কই ও ব্রত তো আমরা জানি না।" তখন মা তাদের বলেন, "সমস্ত চৈত্র মাস সন্ন্যাস করে শিব পুজো করবে, তারপর সংক্রান্তির আগের দিন, সমস্ত দিন উপোষ করে সন্ধে নাগাদ নীলাবতীর পুজো করে নীলকণ্ঠ শিবের ঘরে বাতি জ্বেলে দিয়ে, মা ষষ্ঠীকে প্রণাম করে তবে জল খাবে। ঐ দিনকে ষষ্ঠীর দিন বলে। যারা নীলষষ্ঠী করে তাঁদের ছেলে মেয়ে কখনও অল্প বয়সে মরে না।" একথা বলেই বামনী বেশে মা ষষ্ঠী অদৃশ্য হয়ে যায়। এরপর বামুন ও বামনী  ভক্তি ভরে নীলষষ্ঠীর পুজো করেন। এরপর থেকে তাদের ছেলেমেয়ের কোনও অঘটন ঘটেনি। তারা সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকে। এভাবেই শুরু হয় নীলষষ্ঠীর পুজো। 

Advertisement

 

Advertisement