বিশ্বব্যাপী ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা (Islam) এই রোজার মাসকে কোরবানি বা ত্যাগের মাস হিসাবে বিবেচনা করেন। ইসলামী ক্যালান্ডারের (Islamic Calender) নবম মাস রমজান (Ramadan)। ১২ মাস থাকলেও এই ক্যালেন্ডারে ৩৫৪ দিন রয়েছে। তাই প্রতি বছর রমজান মাস গ্রেগরীয়ন ক্যালেন্ডারের তুলনায় ১১ দিন এগিয়ে আসে। চাঁদ দেখার উপরই রমজানের শুরু এবং শেষ নির্ভরশীল। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে, রমজান মাস (Ramzan Month) কখনও ২৯ দিন তো কখনও ৩০ দিন হয়। এরপর চাঁদ দেখে পালন নয় খুশীর ইদ।
রমজান শব্দের অর্থ
'রমজান' একটি আরবি শব্দ। এই মাসেই রোজার পালন করা হয়। রোজাকে আরবি ভাষায় ''সাওম' অর্থ বিরত থাকা; এর বহুবচন হলো 'সিয়াম'। ফারসি, উর্দু, হিন্দি ও বাংলায় সাওমকে 'রোজা' বলা হয়। যার অর্থ বিরত থাকা বা নিজেকে থামানো এবং নিয়ন্ত্রণ করা। একই সাথে উপবাসকে পারসি ভাষায় 'রোজা' বলা হয়। ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর পারসি প্রভাব বেশি হওয়ার কারণে রোজা শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
২০২৫ সালের রমজান কবে থেকে শুরু? (Ramadan 2025 Starting Date)
এই বছর ভারতে রমজান মাস শুরু হচ্ছে ২ মার্চ থেকে। তবে চাঁদ দেখার পরই রমজান মাসের তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এই রমজান মাস শেষ হতে পারে ২১ এপ্রিল।
ইদ -উল -ফিতর ২০২৫-এর তারিখ (Eid ul Fitr 2025 Date)
গ্রেগোরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ইদ-উল-ফিতর-র কোনও নির্দিষ্ট দিন নেই। দশম মাসের আগে আকাশে চাঁদ দেখা যাওয়ার পরেই ইদ পালিত হয়। সুতরাং, রমজানের শেষ দিনে চাঁদ দেখার পরের দিন খুশীর ইদ পালন হয়। শাওয়ালের চাঁদটি সৌদি আরবে প্রথম দেখা যায়। আর সেই অনুযায়ী অন্যান্য দেশে ইদ পালনের তারিখটি নিশ্চিত হয়। মনে করা হচ্ছে এই বছর, ইদ-উল-ফিতর পড়বে ৩১ মার্চ।
রমজান মাস অত্যন্ত পবিত্র
মুসলমানদের জন্য রমজান এমন একটি মাস যেখানে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরানের প্রথম শ্লোক হজরত মুহাম্মদের কাছে আজ থেকে প্রায় ১,৪০০ বছর পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল। তাই এই মাসে, মুসলমানরা ফজরের নামাজের মাধ্যমে রোজা শুরু করেন এবং সূর্যাস্তের পর উপবাস ভঙ্গ করেন।
নামাজ পড়া, দান ধ্যান করা,বিশ্বাস রাখা, মক্কায় হজযাত্রা এবং সেই সঙ্গে রোজা রাখাও ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হিসাবে বিবেচিত হয়। অনেক মুসলমান দেশে রমজান মাসে কাজের সময় কমিয়ে দেওয়া হয়। বেশিরভাগ জায়গায়, রোজার সময়ে রেস্তোরাঁগুলি বন্ধ থাকে। পবিত্র রমজান মাসে সকলে একে অপরকে 'রমজান মোবারক' বা 'রমজান 'রমজান করিম' বলে শুভেচ্ছা জানান এবং একে অপরের জন্য শুভ কামনা করেন।
রোজা রাখার রীতি
ভোরবেলায় সূর্য ওঠার আগে নামাজের পর 'সেহরি' খেয়ে উপবাস শুরু করতে হয়। সারাদিন নির্জলা উপবাস রেখে সন্ধ্যাবেলার সূর্য ডুবলে আজানের পর ইফতারের মাধ্যমে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। এই এক মাস যতটা সম্ভব দান-ধ্যান করতে হয়। মিথ্যা কথা বা কোনও কুকথা বলতে নেই। রোজা চলাকালীন কোনও খারাপ কাজ করতে নেই। সেই সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়াও এই সময়ে বারণ।
ইসলামে বিশ্বাসী প্রত্যেক ব্যক্তিকে রোজা রাখতে বলা হয়। তবে শিশু, গর্ভবতী মহিলা এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের রোজা রাখার অনুমতি নেই। যারা সফরে আছেন, তারাও রোজায় ছাড় পান। পিরিয়ড চলাকালীন মহিলাদের রোজা রাখতে নেই। পরে একই সংখ্যক রোজা রাখতে হয় তাদের। অসুস্থ ব্যক্তি রোজা রাখলে সেহরি ও ইফতারের সময় ওষুধ খেতে পারেন।