
'ধর্ম হোক যার যার, বড়মা সবার'। নৈহাটির বড়মা গত কয়েক বছরে বাংলার ঘরে ঘরে বিরাজ করছেন। এক অমোঘ টানে প্রতি বছর হাজার হাজার ভক্ত মানত করেন, পুজো দেন, ভিড় করেন একঝলক শুধু দেখার জন্য। নৈহাটির অরবিন্দ রোডের ধর্মশালা বড় কালী ঠাকুরকেই স্থানীয়রা বড়মা বলে ডাকেন। আর সেখান থেকেই মা সকলের কাছে বড়মা হয়ে গিয়েছেন। কালীপুজো তো বটেই এছাড়াও একাধিক পুজো-পার্বনে বড়মার কাছে পুজো দেওয়ার জন্য মানুষ ভিড় করে থাকেন। তবে কেউ যদি প্রথমবার বড়মার মন্দিরে যান তাহলে যাওয়ার আগে জেনে নিন পুজো দেওয়ার সময় কখন।
৩০ ডিসেম্বর এমনিতেও পৌষ অমাবস্যা। আর এইদিন বড়মার মন্দিরে মানুষ ভিড় জমাবেন এটা তো খুবই স্বাভাবিক। অনেকে দণ্ডি কাটেন, মনোবাসনা পূরণ করার জন্য গঙ্গাস্নান করে দণ্ডি কাটেন। এই বছর বড়মার পুজো ১০০ বছরে পা দিয়েছে তাই মায়ের মাহাত্ম্য আরও বেড়ে গিয়েছে এটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এবার দেখে নেওয়া যাক পুজোর সময়সূচি।
৩০ ডিসেম্বরের পুজোর সময়সূচি
বড়মার অমাবস্যা পুজো শুরু হবে ৩০ ডিসেম্বর সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে। অনলাইনেও পুজো পাঠানো যাবে। সেটা ২৯ ডিসেম্বর রবিবার রাত ১০টার মধ্যে। এছাড়াও জয় বড়মা অ্যাপের মাধ্যমেও পুজো পাঠানো যাবে।
বড়মার পুজোর সময়সূচি
মাতৃদর্শন ও পুজো গ্রহণ
সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা
দুপুর ১.৩০ মিনিট থেকে দুপুর ২টো ৩০ মিনিট
বিকেল ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
তবে যাঁরা অঞ্জলি দিতে চান তাঁরা ১টার মধ্যে আসতে পারেন। এই সময় অবশ্য মাঝে মধ্যেই বদলে যায়।
বড়মার সন্ধ্যারতি
সন্ধ্যারতি যদি দেখতে চান তাহলে সন্ধ্যা ৬টার পর সেটা হয়। তবে যে কোনও মানসিক পুজো দিতে চাইলে আপনাকে মন্দিরের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
বড়মার ইতিহাস
আজ থেকে প্রায় ১০০ বছর আগে, ভবেশ চক্রবর্তী ও তাঁর চার বন্ধু মিলে নবদ্বীপে ভাঙা রাস দেখতে যান। সেখানে গিয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে চোখ ওঠে কপালে। বিস্মিত হয়ে বড় বড় মূর্তি দেখে নৈহাটিতে একটি রক্ষাকালী মূর্তিকে বিশালাকার মূর্তি গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কথিত আছে, এই পুজো ভবেশ চক্রবর্তী স্থাপন করেছিলেন, তাই এই দেবীকে ভবেশ কালীও বলা হয়। প্রথমে সকলে ভবেশ কালীই বলে ডাকতেন, তারপর বিশালাকার মূর্তিকে বড়মা বলে অভিহিত করেন। নৈহাটিতে বড়মায়ের একটি স্থায়ী মন্দির রয়েছে। সেখানে নিয়মিত পুজো হলেও পূর্বে যে জায়গায় রক্ষাকালী পুজো করা হত কালীপুজোয়, সেখানেই প্রতিবছর মৃন্ময়ী রূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেখানেই পুজো করা হয়।
বড়মার কাছে সাধারণ মানুষ যেমন আসেন তেমনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সুপারস্টার দেব, সৌমিতৃষা, জুন বন্দ্যোপাধ্যায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ টলিউডের একাধিক তারকাকে প্রায়ই এখানে পুজো দিতে আসতে দেখা যায়। খুবই জাগ্রত এই বড়মা। বিশ্বাস রয়েছে, মা-এর কাছে যা চাওয়া হয় তাই নাকি পাওয়া যায়।