
Jagannath Rath Yatra 2022: জগন্নাথের রথযাত্রা শুরু হচ্ছে পয়লা জুলাই থেকে। ভগবান জগন্নাথের পুরী রথযাত্রা ৯ দিন ধরে চলে। ভগবান জগন্নাথ একটি বিশাল রথ নন্দীঘোষে করে ভ্রমণে যাবেন। তিনি তার বড় ভাই বলরাম ও বোন সুভদ্রা সহ তিনটি ভিন্ন রথে চড়ে তার মাসির বাড়ি গুন্ডিচা দেবীর মন্দিরে যাবেন। বলরাম ও সুভদ্রার সঙ্গে ভগবান জগন্নাথ তাঁর মাসির বাড়িতে ৭ দিন বিশ্রাম নেবেন। তার পর পুরীতে ফিরবেন। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, প্রতি বছর ভগবান জগন্নাথ পুরীর বাসিন্দাদের মঙ্গল জানতে শহর ভ্রমণে বের হন। এবার ভগবান জগন্নাথ নন্দীঘোষ রথে চড়ে যাত্রা করবেন। আসুন জেনে নেই এই রথের বৈশিষ্ট্য।
জগন্নাথের রথযাত্রার অংশ নন্দীঘোষ, তালধ্বজ ও দর্পদলন রথের বিশেষত্ব
যে রথে চড়ে ভগবান জগন্নাথ শহর ভ্রমণ করবেন, তার নাম নন্দীঘোষ। এই রথে ত্রৈলোক্যমোহিনী পতাকা উত্তোলন করা হয়। এতে কপিরাজ হনুমানের ছবি আঁকা থাকে। পাশাপাশি এই রথকে গরুধ্বজও বলা হয়। রথযাত্রায় মোট তিনটি রথ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে দ্বিতীয় বড় রথ নন্দীঘোষ। এই রথের উচ্চতা ৪২.৬৫ ফুট। এই রথে ৪টি ঘোড়া থাকে। জগন্নাথের রথের রশির নাম ‘শঙ্খচূড়া নাগুনি’। এই রথে পার্শ্বদেবতার সংখ্যা ৯। তাঁদের মধ্যে আছেন গোবর্ধন, কৃষ্ণ, নরসিংহ, রাম, নারায়ণ, হনুমান, রুদ্র। রথে থাকেন এক জন রক্ষী। রক্ষীর নাম গারুদা।
নন্দীঘোষ রথের সারথি দারুকা। ভগবান জগন্নাথকে শহরে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব তার উপর বর্তায়। মোটা দড়ির সাহায্যে এই রথগুলো টানা হয়। জগন্নাথের রথ লাল ও হলুদ কাপড়ে সাজানো হয়। রথে চাকার সংখ্যা ১৬টি। প্রত্যেকটির ব্যাস ৭ ফুট। এই ১৬ টি চাকার এক একটি দশ ইন্দ্রিয় ও ছয় রিপুর প্রতিনিধিত্ব করে। রথে জগন্নাথের সঙ্গী হন মদনমোহন। জগন্নাথদেবের রথ নন্দীঘোষ সবার শেষে মন্দির থেকে মাসির বাড়ির দিকে অগ্রসর হয়।
ভগবান বলরামের রথের নাম তালধ্বজ। এই রথের উচ্চতা ৪৩.৩০ ফুট। এই রথটি ভগবান জগন্নাথের রথের চেয়ে কিছুটা বড়। তালধ্বজের সারথি মাতালি। এই রথটি লাল এবং সবুজ রঙের, যাতে ১৪টি চাকা থাকে।
ভগিনী সুভদ্রা দর্পদলন নামে রথে চড়েন। এই রথটি দুই ভাইয়ের রথের চেয়ে কিছুটা ছোট। যার উচ্চতা ৪২.৩২ফুট। এই রথের সারথি অর্জুন। এছাড়াও দর্পদলান রথ লাল ও কালো রঙের। যার মধ্যে ১২টি চাকা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিষ্ণুর অন্যতম অবতার জগন্নাথ। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকেই রথের নির্মাণ শুরু হয়ে যায় পুরীতে। রথ তৈরি করতে প্রায় ২ মাস সময় লাগে। প্রতি বছর বসন্ত পঞ্চমীর দিনে দশপল্লার জঙ্গল থেকে কাঠ একত্রিত করা শুরু হয়। ২০০-র বেশি সেবায়েত মিলে বলরাম, সুভদ্রা ও জগন্নাথের জন্য তিনটি পৃথক রথ নির্মাণ করেন। প্রতি বছর রথযাত্রার জন্য নতুন রথ তৈরি করা হয়। তখন পুরনো রথ ভেঙে দেওয়া হয়। এই সমস্ত রথ নিম কাঠ দিয়ে তৈরি, একে দারু বলা হয়। ভালো ও শুভ নিম কাঠ দিয়ে রথ নির্মিত হয়। নিম কাঠ নির্বাচনের দায়িত্ব রয়েছে জগন্নাথ মন্দিরের এক সমিতির ওপর। রথ তৈরির সময় কোনও ধরনের পেরেক বা কাঁটার ব্যবহার করা হয় না। তিনটি রথ তৈরি হয়ে গেলে ছর পহনরা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। এ সময় পুরীর রাজা পালকী করে এখানে আসেন। নিয়ম মেনে তিনটি রথের পুজো করার পর সোনার ঝাটা দিয়ে মণ্ডপ ও পথ পরিষ্কার করেন রাজা স্বয়ং। জগন্নাথ মন্দির থেকে রথযাত্রা শুরু হয়। সমস্ত নগর ঘোরার পর গুন্ডিচা মন্দিরে যায়। এখানে জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা সাত দিনের জন্য বিশ্রাম করেন। গুন্ডিচা মন্দিরে জগন্নাথের দর্শন আড়প দর্শন নামে পরিচিত।
(Disclaimer: এখানে দেওয়া তথ্য সাধারণ অনুমান এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে। আজতক বাংলা এটি নিশ্চিত করে না।)