Radha Ashtami 2022: হিন্দু ধর্মে ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষে অষ্টমী তিথিতে রাধাষ্টমী পালন করা হয়। এদিন শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধারানির ভক্তরা, রাধারানির বন্দনায় মেতে ওঠেন। রাধাষ্টমী ভগবান এবং মানুষের মধ্যে একটি অদ্বিতীয় সম্পর্কের প্রতীক।যা শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধারানীর নিঃস্বার্থ প্রেম দেখায়। আজ রবিবার ৪ সেপ্টেম্বর দিনটি পালন করা হচ্ছে। রাধারানি কে এবং শ্রীকৃষ্ণ কে বৃন্দাবন থেকে যাওয়ার পর তাঁর কী হয়েছিল?
আরও পড়ুনঃ Radha Ashtami 2022: রাধাষ্টমী কবে? এভাবে পুজো করলে আসবে সমৃদ্ধি
কে এই রাধারানি?
রাধার জন্ম ভাদ্র মাসের শুক্ল অষ্টমীতে হয়েছিল। এদিনটি রাধাষ্টমী নামে পালন করা হয়। কিছু লোক মনে করেন যে, এই রাধা আসলে একটা ভাব। যা কৃষ্ণের দেখানো পথে চললে প্রাপ্ত হয়। হিন্দু ধর্মমতে শ্রীকৃষ্ণের প্রেমিকা এবং সঙ্গিনী রূপে রাধাকে গরিমান্বিত করা হয়েছে। পদ্মপুরাণে একে বৃষভানু রাজার মেয়ে এবং মা লক্ষ্মীর অবতার বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
কৃষ্ণ বৃন্দাবনে থেকে চলে যাওয়ার পর রাধার কী অবস্থা হয়?
কৃষ্ণ বৃন্দাবন ছেড়ে চলে যাওয়ার পর, রাধার কী হয়েছিল, তার বর্ণনা খুব কম পাওয়া যায়। পৌরাণিক কথা অনুসারে শ্রীকৃষ্ণ যখন রাধা সঙ্গে শেষ বার দেখা করেছিলেন, তখন কৃষ্ণ রাধাকে বলেন যে. তিনি সবসময়ই রাধার মনের মধ্যে থাকবেন। কৃষ্ণ মথুরায় গিয়ে কংস এবং বাকি রাক্ষসদের বধ করেন এবং প্রজাদের রক্ষার জন্য দ্বারকা নগরে থেকে যান।
রাধার জীবন কীভাবে বদলে যায়?
কৃষ্ণ বৃন্দাবন থেকে চলে যাওয়ার পর রাধার জীবন একেবারেই বদলে যায়। তার বিবাহ আয়ান ঘোষের সঙ্গে হয়ে যায়। রাধা তার দাম্পত্য জীবনের সমস্ত আচার-আচরণ পালন করেন এবং বৃদ্ধ অবস্থায় উপনীত হন। কিন্তু সেই সময়েও রাধার মনে কৃষ্ণ প্রেম জীবিত ছিল। রাধা একজন স্ত্রী হিসেবে তার সমস্ত কর্তব্য পূরণ করেন। অন্যদিকে শ্রীকৃষ্ণ নিজের দৈবীয় কর্তব্য পালন করেন।
রাধা দ্বারকা যান
রাধা যখন শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শেষবার দেখা করতে দ্বারকা পৌঁছন, তখন তিনি জানতে পারেন কৃষ্ণের বিবাহ রুক্মিনী এবং এবং সত্যভামার সঙ্গে হয়ে গিয়েছে। তার মন তখন দুঃখে ভরে ওঠে। কিন্তু রাধাকে দেখে শ্রীকৃষ্ণ খুব খুশি হন। রাধাকে কৃষ্ণের নগরী দ্বারকাতে কেউ চিনতেন না। এ কারণেই রাধার অনুরোধে কৃষ্ণ তাকে মহলের একজন সেবিকা রূপে নিযুক্ত করে দেন।রাধা মহলের কাজকর্ম দেখতেন এবং সুযোগ পেলে কৃষ্ণ দর্শন করতেন। কিন্তু রাধার ওই মহলে থেকে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগাযোগ আর অনুভব হয়নি। এ কারণে তিনি মহল ছেড়ে চলে যান।
রাধার মৃত্যু
ধীরে ধীরে সময়ে পার হতে থাকে। রাধা একা হয়ে যান এবং দুর্বল হতে শুরু করেন। এই সময়ে তার শ্রীকৃষ্ণের প্রয়োজন অনুভব হয়। শেষ সময় শ্রীকৃষ্ণ তার সঙ্গে দেখা করতে যান। কৃষ্ণ রাধাকে কিছু চাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু রাধা অস্বীকার করেন. কৃষ্ণের বারবার অনুরোধ করায় রাধা তাঁর কাছে বাঁশি বাজাতে অনুরোধ করেন। শ্রীকৃষ্ণ এরপরে বাঁশি নেন এবং অত্যন্ত সুরেলা ধুন বাজানো শুরু করেন। শুনতে শুনতেই রাধা নিজের দেহত্যাগ করেন বলে জানা যায়। কৃষ্ণ জানতেন যে তাঁদের প্রেম অমর। তা সত্ত্বেও তিনি এটা মেনে নিতে পারেননি। কৃষ্ণ তাঁদের প্রেমের প্রতীক ওই বাঁশি ভেঙে টুকরো করে ফেলে দেন। বলা হয় যে এরপরে কৃষ্ণ আর জীবনে কখনো বাঁশি বাজাননি।