ভাদ্র ও মাঘমাসের শুক্লাচতুর্থীকে গণেশ চতুর্থী বলা হয়। হিন্দু বিশ্বাসে এই দিনটি গণেশের জন্মদিন। এই বছর গণেশ চতুর্থী শুরু হবে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে। গণেশ উত্সব প্রায় ১০দিন ধরে চলে। রঙ ও আনন্দের এক মহামিলনের উত্সব। এই ১০দিনের উত্সব জুড়ে মোদকের সুস্বাদু স্বাদ না নিলে তা অসম্পূর্ণ হয়ে থাকে। হিন্দু পৌরাণিত কাহিনি অনুসারে, গণেশ লাড্ডু , মোদক ও অন্যান্য সব মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন। তার মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় হল মোদক। কিন্তু জানেন, বিঘ্নহর্তাকে ঠিক কটা মোদক দিয়ে পুজো করতে হয়? যাতে আপনার ওপর গণেশজির কৃপা থাকবে সবসময়।
নারকেল এবং চিনি দিয়ে তৈরি মোদক হল গণেশ ঠাকুরের বেজায় পছন্দের মিষ্টি। তাই তো বাপ্পার পুজো করার সময় এই মিষ্টিটি পরিবেশন করা হয়ে থাকে। কিন্তু জানেন কি কতগুলি মোদক পরিবেশন করলে গণেশ ঠাকুর বেজায় খুশি হন? শাস্ত্র মতে গণেশ ঠাকুরের পুজো করার সময় বিজোড় সংখ্যায় মিষ্টি পরিবেশন করতে হবে। এমনটা করলে দেখবেন উপকার পাবেন একেবারে হাতে-নাতে।
গণেশজির পুজোয় তাই ৩, ৭, ১৩, বা ২১টি মোদকের ভোগ চড়াবেন। তবে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন যদি গণেশজিকে ২১টি মোদকের ভোগ অর্পণ করতে পারেন। তবে জানেন কী, গণেশ পুজোর সময় কেন ২১টি মোদক ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়? এর পিছনে রয়েছে পৌরানিক কাহিনি।
পৌরানিক কাহিনি অনুযায়ী, একদিন ঋষি অত্রি গণেশকে ভোজনের জন্য আমন্ত্রিত করেন। ঋষি অত্রির স্ত্রী অনুসূয়া আহার পরিবেশন করলে ভোজন শুরু করেন গণেশ। কিন্তু কিছুতেই গণেশের ক্ষুধা নিবৃত্তি হয় না। তাই দেখে অনুসূয়া চিন্তিত হয়ে পড়েন। বাড়িতে কোনও অতিথি তিনি নারায়ণ স্বরূপ। তাঁকে অতৃপ্ত অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া অপরাধ। তখন অনুসূয়া ভাবেন গণেশকে তৃপ্ত করতে কিছু মিষ্টি দেন। সেই সময় অনুসূয়ার কাছে অনেকগুলি মোদক প্রস্তুত করা ছিল। সুস্বাদু মোদক খেয়ে গণেশের মন ও পেট দুই-ই ভরে যায়। তিনি প্রসন্ন হয়েছেন তা হাবেভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ও গণেশকে শান্ত করতে শিব ২১ বার ঢেকুর দিয়েছিলেন। কাহিনি অনুসারে, যখন ভগবান শিব ২১ বার ঢেকুর তোলেন এবং দেবী পার্বতী জানতে পারলেন যে মোদক তাঁদের দুজনকে সন্তুষ্ট করেছে, তখনই তিনি একটি ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে গণপতির ভক্তরা সর্বদা তাঁকে ২১ টি মোদকের ভোগ চরান। তারপর থেকে গণেশ পুজোয় মোট ২১টি মোদক সাজিয়ে ভোগ হিসেবে অর্পন করা হয়।