নয়া GST রেটে স্বাস্থ্য জীবনবিমার প্রিমিয়ামকে শূন্য GST র আওতায় আনা হয়েছে। অর্থাত্ পলিসি হোল্ডারদের প্রিমিয়ামের অঙ্ক কমতে পারে। এখন প্রশ্ন হল, ঠিক কত টাকা প্রিমিয়াম কমতে পারে। ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত যাঁরা স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমার প্রিমিয়াম দেন, তাঁদের প্রিমিয়াম কত কমতে পারে, জেনে নেওয়া যাক।
Next Generation GST তে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে নতুন হার লাগু হওয়ায়, দাম কছে। নতুন স্ল্যাবে ৫ ও ১৮ শতাংশ জিএসটি রাখা হয়েছে। এছাড়াও লাক্সারি গাড়ি ও পাপী পণ্য (সিগারেট, তামাকজাত পণ্য) ৪০ শতাংশ জিএসটি র আওতায় রাখা হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিমা ও জীবনবিমার প্রিমিয়ামে কীভাবে ছাড় মিলবে। এ ক্ষেত্রে তো GST শূন্য।
ধরা যাক, আপনার প্রিমিয়াম ছিল ৩০,০০০ টাকা। আগে ১৮ শতাংশ জিএসটি মিলিয়ে আপনাকে মোট ৩৫ হাজার ৪০০ টাকা দিতে হতো। কিন্তু এখন শুধু বেস প্রিমিয়াম দিতে হবে, অর্থাৎ আপনি মাসে ৫ হাজার ৪০০ সাশ্রয় করবেন। একইভাবে, যদি প্রিমিয়াম ১০,০০০ টাকা হয়, তাহলে ১৮ শতাংশ হিসেব অনুযায়ী ১হাজার ৮০০ টাকা সাশ্রয় হবে।
মেয়াদী বিমা বা টার্ম লাইফ ইন্সিওরেন্সের ক্ষেত্রেও সুবিধা। ধরুন, আপনি ৩০ বছর বয়সে ১ কোটি টাকার জীবনবিমা কিনলেন। আগে বার্ষিক প্রিমিয়াম ছিল প্রায় ১৫,০০০ হাজার টাকা। যার ওপর ১৮ শতাংশ জিএসটি থাকায় মোট খরচ দাঁড়াত ১৭,৭০০ টাকা। এখন জিএসটি শূন্য হওয়ায় খরচ কেবল ১৫,০০০ টাকা। অর্থাৎ বছরে ২ হাজার ৭০০ টাকা সাশ্রয় হল।
পারিবারিক স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রেও সাশ্রয় কম নয়। ধরুন, আপনার বয়স ৩৫, স্ত্রীর ৩৩, এবং দুই সন্তান আছে। পুরো পরিবারের জন্য ১০ লক্ষ টাকার কভারেজের গড় বার্ষিক প্রিমিয়াম ২৫,০০০ টাকা। আগে জিএসটি ১৮ শতাংশ থাকায় মোট খরচ ২৯ হাজার ৫০০ টাকা হত। নতুন নিয়মে জিএসটি শূন্য হওয়ায় ৪ হাজার ৫০০ টাকা সাশ্রয় হবে।
সরকারের এই পদক্ষেপ দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে। দীর্ঘদিন ধরেই পলিসি হোল্ডাররা জীবন ও স্বাস্থ্যবিমার ওপর অতিরিক্ত কর নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন। এবার সেই বোঝা কমানো হল, যা তাদের প্রিমিয়াম প্রদানের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য স্বস্তি আনতে পারে।
তবে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। বিমা কোম্পানিগুলি এখন আর স্বাস্থ্য ও জীবনবিমা সম্পর্কিত কমিশন বা ব্রোকারেজের জন্য প্রদত্ত জিএসটিতে ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (ITC) দাবি করতে পারবে না।
আগে কোম্পানিগুলি গ্রাহকদের কাছ থেকে বেস প্রিমিয়ামের ওপর জিএসটি আদায় করত এবং মার্কেটিং, অফিস ভাড়া ও অন্যান্য খরচের জন্য এই করের ক্রেডিট ব্যবহার করত। নতুন নিয়মে এই সুবিধা নেই, ফলে কিছু কোম্পানি তাদের অতিরিক্ত খরচ বেস প্রিমিয়ামে যোগ করতে পারে।
ফলে গ্রাহকরা অবশ্যই খেয়াল করবেন যে, যদিও জিএসটি শূন্য হয়েছে, কোম্পানির অতিরিক্ত খরচের কারণে প্রিমিয়ামে সামান্য পরিবর্তন আসতে পারে। তবে সাধারণভাবে, এই পরিবর্তন সব ধরনের জীবন ও স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রে বড় সাশ্রয় নিশ্চিত করেছে।
দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও সুবিধা প্রযোজ্য। সমস্ত ব্যক্তিগত ইউলিপ প্ল্যান, পারিবারিক ফ্লোটিং প্ল্যান, প্রবীণ নাগরিক পরিকল্পনা এবং টার্ম প্ল্যান জিএসটি শূন্য হয়েছে। অর্থাৎ একেবারে নতুন নিয়ম অনুযায়ী এখন পলিসিধারীরা শুধু বেস প্রিমিয়ামই দিতে হবে, অতিরিক্ত করের কোনও বোঝা নেই।