Gratuity Rules: গ্র্যাচুইটি হল সেই টাকা যা কোনও কোম্পানি আপনাকে দীর্ঘ সময়ে চাকরির পর চমৎকার পরিষেবা প্রদানের জন্য দিয়ে থাকে। সাধারনত, যদি কোনও কর্মচারী কোম্পানিতে ৫ বছর ধরে তার পরিষেবা প্রদান করে থাকেন, তাহলে তাকে গ্র্যাচুইটি পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করা হয়। অবসর গ্রহণের সময় বা চাকরি ছাড়ার সময় গ্র্যাচুইটির টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু ধরুন, গ্র্যাচুইটি পাওয়ার অধিকারী থাকা সত্ত্বেও কোনও কোম্পানি কর্মচারীর গ্র্যাচুইটির টাকা আত্মসাৎ করে, তাহলে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়? জেনে নিন...
আইনি নোটিশ পাঠানোর অধিকার
৫ বছর চাকরি করার পরেও, যদি কোম্পানি কর্মচারিকে গ্র্যাচুইটির টাকা না দেয়, তাহলে কর্মচারী এই বিষয়ে কোম্পানিকে আইনি নোটিশ পাঠাতে পারেন। এর পরেও যদি তার সমস্যার সমাধান না হয় এবং তাকে টাকা না দেওয়া হয়, তাহলে কর্মচারীরা কোম্পানির বিরুদ্ধে জেলা শ্রম কমিশনারের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে কোম্পানিকে জরিমানা ও সুদ সহ গ্র্যাচুইটির টাকা দিতে হবে।
গ্রাচুইটি পাওয়ার নিয়ম
যদি ১০ বা তার বেশি কর্মচারী একটি বেসরকারী বা সরকারী কোম্পানিতে কাজ করেন, তবে সেই কোম্পানির সমস্ত কর্মচারীকে গ্র্যাচুইটির সুবিধা দেওয়া উচিত। কোম্পানি ছাড়াও দোকান, খনি ও কারখানাও এই নিয়মের আওতায় আসে।
একজন কর্মচারী যদি কোম্পানিতে ৪ বছর ৮ মাস কাজ করে থাকেন, তাহলে তার চাকরি পূর্ণ ৫ বছর ধরা হবে এবং তিনি ৫ বছর অনুযায়ী গ্র্যাচুইটির টাকা পাবেন। যদি তিনি ৪ বছর এবং ৮ মাসের কম সময় ধরে কাজ করেন তবে তার চাকরির সময়কাল ৪ বছর হিসাবে গণনা করা হবে এবং এই ক্ষেত্রে তিনি গ্র্যাচুইটি পাবেন না।
চাকরি চলাকালীন কোনও কর্মচারীর মৃত্যু হলে, তার গ্র্যাচুইটি অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া সম্পূর্ণ অর্থ তার মনোনীত ব্যক্তিকে দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫ বছরের চাকরির শর্ত প্রযোজ্য নয়।
কর্মচারীর নোটিশের সময়কালও গ্র্যাচুইটির সময়ের মধ্যে গণনা করা হয়। ধরুন আপনি সাড়ে চার বছর কাজ করার পর একটি কোম্পানি থেকে পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু পদত্যাগ করার পর আপনি দুই মাসের নোটিশ পিরিয়ড দিয়েছেন। এই ক্ষেত্রে, আপনার চাকরির সময়কাল ৪ বছর এবং ৮ মাস হিসাবে গণনা করা হবে। আর ৫ বছর বিবেচনা করে গ্র্যাচুইটির টাকা দেওয়া হবে।
যে কোনও কোম্পানি তার কর্মীকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা গ্র্যাচুইটি হিসেবে দিতে পারে। গ্র্যাচুইটি হিসাবে প্রাপ্ত টাকা সম্পূর্ণ করমুক্ত। এই নিয়ম সরকারি চাকরি এবং বেসরকারি চাকরি উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
এই সব পরিস্থিতিতে কোম্পানি গ্র্যাচুইটির টাকা দেবে না
যদি কোনও কর্মচারীর বিরুদ্ধে অনৈতিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয় এবং তার অবহেলার কারণে কোম্পানির বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে থাকে, তাহলে কোম্পানির তার গ্র্যাচুইটির টাকা পরিশোধ না করার অধিকার রয়েছে। তবে গ্র্যাচুইটি বন্ধ করতে কোম্পানিকে প্রথমে প্রমাণ ও তার কারণ উপস্থাপন করতে হবে। কোম্পানি যে কারণেই দিচ্ছে না কেন, কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে হবে।
এর পর উভয় পক্ষের কথা শোনা হয়। কর্মচারী দোষী সাব্যস্ত হলেই গ্র্যাচুইটির টাকা বন্ধ করা হবে। তবে এমন ক্ষেত্রেও, কোম্পানিটি কেবলমাত্র তার ক্ষতির পরিমাণ কেটে নেবে। এছাড়াও, যখন কোম্পানি বা সংস্থা গ্র্যাচুইটি আইনের অধীনে নিবন্ধিত নয়, তখন কর্মচারীরা গ্র্যাচুইটি আইনের আওতায় আসে না। এ ক্ষেত্রে গ্র্যাচুইটি দেবে কি দেবে না তা কোম্পানির বিবেচনার বিষয়।