scorecardresearch
 

Adani Group Controversy: শূন্য থেকে শিখরে, মাত্র ৯ দিনে কীভাবে সাম্রাজ্য নড়ে গেল ধনকুবের আদানির?

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের আগে বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন গৌতম আদানি। মাত্র ৯ দিনে তিনি ১৬ নম্বরে নেমে গিয়েছেন। এখন এই গোষ্ঠী নিয়ে সবার মনে দুটি প্রশ্ন ঘুরছে। 

Advertisement
গৌতম আদানি গৌতম আদানি
হাইলাইটস
  • আদানি গোষ্ঠীর শঙ্কিত লগ্নিকারীরা 
  • বিজেপি সরকারকে নিশানা কংগ্রেসের
  • এলআইসি-র (LIC) সাফাই

এই মুহূর্তে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে চর্চিত নামটি হল গৌতম আদানি (Gautam Adani)। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির ব্যবসার সাম্রাজ্য নড়ে গেল মাত্র ৯ দিনে। ভারতের শেয়ারবাজারে (Share Market)  ধসের আঁচ পড়ল সংসদেও। বাজেট অধিবেশনেই বিরোধীরা এককাট্টা হয়ে আদানি ইস্যুতে কেন্দ্রকে কোণঠাসা করতে শুরু করে দিয়েছেন। বিরোধীদের দাবি, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারদরে জালিয়াতির অভিযোগ নিয়ে সংসদে বিতর্ক হোক। যৌথ সংসদীয় কমিটি বসানো হোক তদন্তে। এখন প্রশ্ন হল, শূন্য থেকে শুরু করে শিখরে পৌঁছনো আদানি গোষ্ঠীর ভবিষ্যত্‍ কী? লগ্নিকারী থেকে আদানি গোষ্ঠীকে ঋণ দেওয়া ব্যাঙ্কগুলিরই বা কী নিয়তি?

আদানি গোষ্ঠীর শঙ্কিত লগ্নিকারীরা 

আপাতত, আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) শেয়ারে পতন দেখে রীতিমতো শঙ্কিত লগ্নিকারীরা। আর গোটা সঙ্কটের পিছনে যে সংস্থা রয়েছে, তা হল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ রিপোর্ট (Hindenburg Research Report)। আমেরিকার মার্কেট রিসার্চ সংস্থা হিন্ডেনবার্গের অভিযোগ, জালিয়াতি করে শেয়ারের দাম বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। রিপোর্ট সামনে আসার পর থেকেই আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ারদর পড়তে শুরু করে দিয়েছে। এমনকী, আদানি এন্টারপ্রাইজের FPO এনে বাজার থেকে ২০ হাজার কোটি টাকা তোলার যে ঘোষণা করেছিল আদানি গোষ্ঠী, তাও তুলে নেওয়া হয়েছে। সংস্থার কর্ণধার গৌতম আদানি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, লগ্নিকারীদের সব টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: আদানি-হিন্ডেনবার্গ প্রভাব; LIC-র মূলধন কমেছে ৬৫,৪০০ কোটি টাকারও বেশি

হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশের আগে বিশ্বের দ্বিতীয় সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ছিলেন গৌতম আদানি। মাত্র ৯ দিনে তিনি ১৬ নম্বরে নেমে গিয়েছেন। এখন এই গোষ্ঠী নিয়ে সবার মনে দুটি প্রশ্ন ঘুরছে। 

১. প্রতিদিন দুর্বল হতে থাকা আদানি গোষ্ঠীর ভবিষ্যত্‍ কী?
২. আদানি গোষ্ঠী কি ফের আগের বৃদ্ধির হারে ফিরতে পারবে?

Advertisement

শূন্য থেকে শিখরে পৌঁছনো গৌতম আদানি যতটা রোমাঞ্চকর, শিখর থেকে পতনের সফরটিও ততটাই বিস্ময়ের। 

গৌতম আদানির পরিবার
গৌতম আদানির পরিবার

বিজেপি সরকারকে নিশানা কংগ্রেসের

হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশিত হতেই আদানি গোষ্ঠী ৮ লক্ষ কোটি টাকার লোকসানের মুখে। বড় ক্ষতির সম্মুখীন আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে টাকা নিবেশ করা লগ্নিকারীরাও। কংগ্রেস এই রিপোর্টকেই সংসদে হাতিয়ার করছে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। বস্তুত, আদানি নিয়ে মোদী সরকারকে কংগ্রেসের নিশানা নতুন নয়। অতীতে বারবারই রাহুল গান্ধীকে দেখা গিয়েছে, আদানি-মোদী সখ্যের প্রসঙ্গ তুলে কেন্দ্রকে আক্রমণ করছেন।

আরও পড়ুন: 'কাল তো সরকারটাই পড়ে যাচ্ছিল,' শেয়ারবাজারে ধস নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি মমতার

পিছিয়ে নেই তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার বর্ধমানের জনসভায় গুরুতর দাবি করেন মমতা। বলেন, 'বাজেটের দিন তো সরকার পড়ে যাচ্ছিল। কেন পড়ে যাচ্ছিল? শেয়ার বাজারে ধস নেমেছিল। এ বার কাউকে কাউকে রিকোয়েস্ট করে, আমরা জানি তারা কারা। নামগুলি বলে আর তাঁদের অবস্থা দুর্বিষহ করতে চাই না। ৬-৮ জনকে ফোন করে বলেছে, কাউকে ২০ হাজার কোটি টাকা দাও। মানে যাদের শেয়ার পড়ে যাচ্ছিল তাদেরকে দাও। কাউকে বলেছে ৩০ হাজার কোটি টাকা দাও। কাউকে বলেছে ১০ হাজার কোটি টাকা দাও। এই দিয়ে সরকার চলে যদি পরিকল্পনা না থাকে?'

এলআইসি-র (LIC) সাফাই

বিরোধীদের অভিযোগ, এলআইসি (LIC) থেকে এসবিআই (SBI), সাধারণ মানুষের টাকা লুঠ করতে সাহায্য করেছে মোদী সরকার। গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলিতে নগদরে পরিমাণ শেষের পথে। এখন প্রশ্ন হল, এই অভিযোগগুলিতে, কতটা রাজনীতি রয়েছে, কতটা সত্যি। আদানি গোষ্ঠীর রিপোর্ট সামনে আসতেই এলআইসি বিবৃতি জারি করে লগ্নিকারী আশ্বস্ত করেছে। 

এলআইসির দাবি, ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরের হিসাবে তাঁদের মোট সম্পত্তির মূল্য ৪১ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। আর ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের হিসাবে আদানি গোষ্ঠীর সবক’টি সংস্থা মিলিয়ে এলআইসির কেনা শেয়ারের মূল্য ৩৫ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি। অর্থাৎ, সংস্থার মোট সম্পদের ১ শতাংশও নয়। ফলে তর্কের খাতিরে আদানি গোষ্ঠীর ভরাডুবির সম্ভাবনা মেনে নিলেও তাতে এলআইসির ‘বিপুল ক্ষতির’ কোনও সম্ভবনা নেই। এলআইসির ব্যবসা এবং লগ্নি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য আদানিদের হাতে রয়েছে বলে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরকেও ‘অসত্য’ বলেছেন এলআইসি কর্তৃপক্ষ।

একবার দেখে নেওয়া যাক, ভারত সহ গোটা বিশ্বে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে কী কী চর্চা চলছে।

১. গত ৯ দিনে আদানি গোষ্ঠীর লোকসানের পরিমাণ আনুমানিক ৮ লক্ষ কোটি টাকা।

২. বিশ্বের ধনকুবের তালিকায় ২ নম্বর থেকে নেমে প্রথম ২০-র বাইরে গৌতম আদানি

৩. আদানি এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া ঋণের বিষয়ে সব ব্যাঙ্কের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে আরবিআই।

৪. আদানি গোষ্ঠীর ১০টির মধ্যে ৯টি শেয়ারদরে ধস।

৫. আদানি এন্টারপ্রাইজের ২০ হাজার কোটি টাকার FPO বাতিল।

গৌতম আদানি সম্পর্কে কিছু তথ্য

গৌতম আদানির জন্ম গুজরাতের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে। বাবার নাম শান্তিলাল আদানি ও সান্তা বেন। বাবার ছিল কাপড়ের ছোট ব্যবসা। গৌতম আদানিরা ৭ ভাইবোন। ১৭ বছর বয়সেই ব্যবসায় ভাগ্য ফেরাতে মুম্বই পাড়ি দেন গৌতম আদানি। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে বিশ্বের সর্বোচ্চ ধনী হয়েছেন আদানি। তাঁর স্ত্রী প্রীতি আদানি দাঁতের চিকিত্‍সক। গৌতম ও প্রীতির দুই ছেলে, করণ আদানি ও জিত্‍ আদানি।


 

Advertisement
Advertisement