মোদী সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদ ঘিরে অগ্নিগর্ভ দেশের একাংশ। প্রতিবাদ জোরালো হয়েছে বিহারে। বৃহস্পতিবার থেকে দফায় দফায় অশান্তির খবর মিলেছে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক ট্রেন। ভাঙচুর করা হয়েছে স্টেশন। বহু বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও অগ্নিগর্ভ বিহার। বিহিয়া স্টেশনে বিক্ষোভ চলে। ভাঙচুর করা হয়েছে কুলহারিয়া স্টেশনে। সমস্তিপুরে একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বেগুসরাই স্টেশনে ইটবৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল নওয়াদা জেলায় বিজেপির কার্যালয় জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। এ দিন মাধেপুরাতেও একইভাবে আগুন ধরানো হয় বিজেপির অফিসে।
বিহার ছাড়াও মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, জম্মু এবং পশ্চিমবঙ্গে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। গ্বয়ালিয়র রেলস্টেশনে ভাঙচুর চালান প্রায় হাজার চাকরিপ্রার্থী। গুরুগ্রামে রাস্তা অবরোধ করে চলে বিক্ষোভ।
কেন এই বিক্ষোভ? বিহারের অধিকাংশ পড়ুয়াই সরকারি চাকরির জন্য পড়াশুনো করেন। আর সরকারি চাকরির বড় নিয়োগক্ষেত্র হল রেল বা সেনা। গরিব ও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত বেকার যুবকরা সেনায় কাজ করতেই স্বচ্ছন্দ। সেই সেনা চাকরিই চুক্তিভিত্তিক হওয়ায় বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তাঁরা।
কোথায় আপত্তি? অগ্নিপথ প্রকল্পে চারবছর পর প্রশিক্ষিতদের মধ্যে ২৫ শতাংশ পাবেন সেনায় চাকরি। বাকিরা যোগ্য হলেও কেন পাবেন না? তাহলে তো ৪ বছর পণ্ড হবে তাঁদের।
নিয়োগের বয়স করা হয়েছে ১৭ থেকে ২৩। আগে ২১ ছিল। পরে বাড়ানো হয়। কিন্তু ভারতীয় সেনায় নিয়োগের বয়সসীমা তো ১৮ থেকে ২৫। এক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হবে না কেন? উঠছে প্রশ্ন। করোনাকালে নিয়োগ স্থগিত ছিল। ফলে ২৩-র উপরে বয়সরা আর সুযোগ পাবেন না!
অবসরকালীন ১১ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পাবেন অগ্নিবীররা। কোনও গ্র্যাচুইটি, পেনশন নেই। অথচ স্থায়ী সেনাবাহিনীর সমান ঝুঁকি নিতে হবে এই ৪ বছরে। মৃত্যুও হতে পারে। কিন্তু সেনার সমান ভাতা পাবেন না অগ্নিবীররা।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্থায়ী সেনার সঙ্গে কাজ করবেন অগ্নিবীররা। অথচ বেতন থেকে অন্যান্য সুযোগসুবিধা নেই। আর ৪ বছর কর্মজীবন হলে কি আদৌ পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন অগ্নিবীররা। ৪ বছর পর কী হবে? নতুন করে চাকরি খুঁজতে হবে অগ্নিবীরদের। তার মানে দাঁড়াচ্ছে ৪ বছরে যা শেখা হল তা আর কাজে লাগবে না।