রাজ্যে বাতিল হয়েছে ২৫৩টি বিএড কলেজের অনুমোদন। কেন্দ্রের নির্দিষ্ট নিয়ম না-মানার অভিযোগ রয়েছে এই সব বেসরকারি কলেজের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে রাজ্যের বিআর আম্বেদকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে আগাম সতর্ক করা হলেও তা মানেনি বেসরকারি কলেজগুলির একাংশ। ফলে এবার তাদের অনুমোদন বাতিল হয়েছে। আর তার জেরে প্রশ্নের মুখে একাধিক পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন (অ্যাফিলিয়েশন) পেতে আবশ্যিকভাবে পূরণ করতে হবে এনসিটিই-র (NCTE) নির্ধারিত মানদণ্ড। তা নইলে এবছর কড়া অবস্থান গ্রহণ করেছে বাবাসাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটি তথা রাজ্য বিএড (B.Ed) বিশ্ববিদ্যালয়। যার জেরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সাপেক্ষে মোট ২৫৩ টি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়েছে। কারণ, মানদণ্ড পূরণ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে অনুমোদন তথা স্বীকৃতির পুনর্নবীকরণ পায়নি এই কলেজগুলি।
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ৬২৪টি কলেজ রয়েছে। যার মধ্যে ৬০৩টি কলেজই বেসরকারি। যাদের অনুমোদন তথা স্বীকৃতির পুনর্নবীকরণের (Renew)জন্য আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল এবছর ৫ অগাস্ট থেকে। ৩১ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতেই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, কোন কোন মানদণ্ড পূরণ করা আবশ্যিক। গত ৩০ অক্টোবর অনুমোদন পুনর্নবীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য-সহ অনলাইনে আবেদনের শেষ দিন ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এদিন সকাল পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন পেয়েছে ৩৫০টির মতো কলেজ। অর্থাৎ, বাকি প্রায় ২৫০টি বেসরকারি বিএড কলেজের ভবিষ্যৎ ছিল অনিশ্চিত। শুক্রবার তা স্পষ্ট হয়ে যায়। মোট ২৩২ কলেজের অনুমোদন বাতিল হয়েছে।
এদিকে রাজ্যের ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজের অনুমোদন কেন ‘বাতিল’ হল, রাজ্য শিক্ষা দফতর তা তদন্ত করবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁর কথায়, ‘‘কী হয়েছে, কেন হয়েছে জানি না। তবে আমি দফতর থেকে নিয়ম মেনে একটা তদন্ত করে দেখব।’’
বাকি ২৫৩টি কলেজ সেই নিয়ম মানেনি। ওই কলেজগুলোর মালিকেরা শনিবার মলয়ের মেডিক্যাল কলেজে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। মালিকেরা সরাসরি, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলেছেন। এর আগে সোমা বলেছিলেন, ‘‘পুনর্নবীকরণের জন্য ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনটিসিই) যে শর্ত দিয়েছে, সেই শর্ত পূরণ না হলে পুনর্নবীকরণের জন্য লিঙ্ক খুলে ফর্ম ফিলাপ করতে গিয়ে আটকে যাবে কলেজগুলি। শর্তগুলির মধ্যে অন্যতম হল ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ঠিক রাখা। তাই এখানে আমাদের কিছু করার নেই। যে সব কলেজে এখনও অনেক শিক্ষক নেই, তারা যেন ধারাবাহিক ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়।’’
এদিকে অনুমোদন বাতিল হওয়া ২৫৩টি কলেজের মালিকেরা শনিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন। মালিকেরা সরাসরি, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলেছেন। এর আগে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ে বলেছিলেন, ‘‘পুনর্নবীকরণের জন্য ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন (এনটিসিই) যে শর্ত দিয়েছে, সেই শর্ত পূরণ না হলে পুনর্নবীকরণের জন্য লিঙ্ক খুলে ফর্ম ফিলাপ করতে গিয়ে আটকে যাবে কলেজগুলি। শর্তগুলির মধ্যে অন্যতম হল ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত ঠিক রাখা। তাই এখানে আমাদের কিছু করার নেই। যে সব কলেজে এখনও অনেক শিক্ষক নেই, তারা যেন ধারাবাহিক ভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যায়।’’ বিএড কলেজ মালিকদের অভিযোগ, হঠাৎ করে নতুন নিয়মের ফলে অসুবিধার মুখে পড়েছেন তাঁরা। তা ছাড়া, যে নিয়মের গেরোয় ২৫৩টি কলেজের অনুমোদন আটকেছে, সেই একই শর্তাবলি পূরণ না করেও অনেক কলেজই অনুমোদন পেয়েছে। পাশাপাশি, তাঁদের যুক্তি, যে বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা চলছে, তা নিয়ে উপাচার্য কী ভাবে মন্তব্য করলেন বা সিদ্ধান্ত নিলেন।
তবে আপাতত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অনুমোদন না পেলেও এনসিটিই নিয়ম মেনে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত যথাযথ ভাবে বজায় রেখে আবার আবেদন করলে তারা অনুমোদন পেতে পারে। তবে এই অনুমোদন যদি যথা সময়ে পাওয়া না যায়, তবে যে ছাত্রছাত্রীরা বছরের শেষ সেমেস্টার দিয়ে বেরোবেন, তারা সরকার অনুমোদিত কলেজের শংসাপত্র পাবেন কি না অনিশ্চয়তা দেখা গিয়েছে তা নিয়েও।