বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (Visva Bharati University) রক্ষার দাবিতে পথে নামল নাগরিক সমাজ। অংশ নিয়েছিলেন রাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি জগতের বিশিষ্টরা। মঙ্গলবার তাঁরা শান্তিনিকেতন (Shantiniketan)-এ মিছিল করেন।
এদিনের মিছিলে পা মেলালেন কলকাতার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। মিছিলের ডাক দিয়েছিল স্টুডেন্টস এগেইনস্ট ফ্যাসিজম। এদিন সকালে বোলপুর (Bolpur) স্টেশন থেকে তাঁদের মিছিল শুরু হয়। জাতীয় পতাকা হাতে মিছিল করেন তাঁরা। আয়োজকদের দাবি, বিশ্বভারতীর ঐতিহ্য রক্ষার দাবিতে এই কর্মসূচি নিয়েছেন তাঁরা।
উপাচার্যের পদত্যাগ এবং ছাত্রছাত্রীরাদের সাসপেন্সন তুলে নেওয়ার দাবীতে বাম ছাত্রছাত্রী, বুদ্ধিজীবী, বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, নকশালপন্থী-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সর্মথক অংশ নিয়েছিলেন। পাশাপাশি সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষও মঙ্গলবার মিছিলে যোগ দেন।
এদিন এই মিছিল বোলপুর স্টেশন থেকে শুরু হয়। শান্তিনিকেতন (Shantiniketan)-এর ক্লাব মোড় পর্যন্ত আসে। মিছিলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং বিশ্বভারতী ছাত্রছাত্রীরা মিছিলে যোগ দেয়। নকশালপন্থী নেতা শৈলেন মিশ্র অভিযোগ করেন, উপাচার্য (Vice-Chancellor) একনায়কতন্ত্র চালচ্ছেন। যারা তার কাজের প্রতিবাদ করছে তাদের সাসপেন্ড করা হচ্ছে। এমনকি ছাত্রছাত্রীদেরও সাসপেন্ড করা হয়েছে। আমরা কেন্দ্রের কাছে আবেদন করছি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে সরিয়ে নিতে হবে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় পতাকা হাতে স্টুডেন্টস এগেইনস্ট ফ্যাসিজম মঞ্চের আহ্বানে বিজেপির হাত থেকে বিশ্বভারতীকে রক্ষা করার শপথ নিয়ে নাগরিক মিছিল। ছাত্র-অধ্যাপক-আশ্রমিকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেতা বাদশা মৈত্র, অধ্যাপক মালিনী ভট্টাচার্য, কুন্তল রুদ্র প্রমুখ। মিছিলে উপস্থিত না থাকলেও সমর্থন জানিয়েছেন চিত্রপরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ-সহ বহু বিশিষ্টজন।
আমরা দাবি জানাচ্ছি, উপাচার্যকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। সমস্ত ছাত্র-অধ্যাপকের সাসপেনশন প্রত্যাহার করতে হবে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে অপমান করা চলবে না। বিশ্বভারতীতে সাম্প্রদায়িক মতাদর্শের অনুপ্রবেশ মানা যাবে না।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য অনুসারে,এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন বই পড়ানো হয়। ১৯০১ সালে, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে একটি স্কুল চালু করেছিলেন। বিশ্বভারতী, ১৯১১ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা লাভ করে। বর্তমানে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে এখানে।
শান্তিনিকেতন শান্ত পরিবেশ এবং সাহিত্যের পটভূমির জন্য বিখ্যাত। এই জায়গাটি বীরভূম জেলায় কলকাতা থেকে ১৮০ কিমি উত্তরে অবস্থিত।
ভারতের পুরাতন আশ্রম শিক্ষা ব্যবস্থা অনুসারে এখানে শিক্ষা পরিচালিত হয়। মাঝে মধ্যে এখানে শিক্ষার্থীদের গাছের নীচে মাটিতে বসে পড়াশোনা করতে দেখা যায়। শান্তিনিকেতনের অর্থ শান্তিতে ভরপুর একটি বাড়ি। বিশ্বজুড়ে পর্যটকরা এই জায়গাটিতে আসেন।