শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি ঘিরে তোলপাড় রাজ্য। নিয়োগের দাবিতে মাসের পর মাস লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ তথা স্কুলগুলির শূন্যপদ পূরণের দাবি জানিয়ে চলেছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলিও। তারই মাঝে নতুন এক ছবি দেখা গেল রাজ্যে। এবার শিক্ষকের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল একটি স্কুল, অভিযোগ অন্তত তেমনটাই।
ঘটনাটি হাওড়ার বাঁকড়ার বরকনমাঠ আইডি জুনিয়র হাইস্কুলের। স্থানীয় সূত্রে খবর, পরপর ৪ শিক্ষক অবসর নেওয়ায় ২০২১-এর জানুয়ারি মাসে বন্ধ হয়ে যায় স্কুলের আপার প্রাইমারি বিভাগের পঠনপাঠন। এর ফলে ড্রপ আউটের সংখ্যা বেড়েছে বলেও জানাচ্ছেন প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। আর শুধু তাই নয়, শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শকও। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ফাঁকা স্কুলবাড়ি এখন হয়ে উঠেছে দুষ্কৃতী ও সমাজবিরোধীদের ডেরা।
যেখানে রাজ্যের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে প্রচুর শূন্যপদ, সেখানে শিক্ষকের অভাবে একটি স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্নমহলে। এই বিষয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) বলেন, "আমরা প্রথম থেকেই বলছি শিক্ষার অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সাড়ে তিন লক্ষর বেশি শূন্যপদ আছে স্কুলে, শিক্ষক অশিক্ষক ও গ্রুপ ডি মিলিয়ে। কার্যত বেসরকারিকরণের পথে চলে যাচ্ছে গোটা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। আজকে আমরা আদালতের মামলা দেখছি, বিচারপতির মন্তব্য শুনছি, মামলাকারীদের অবস্থান শুনছি, রাজনৈতিক বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি শুনছি, আন্দোনলনকারী যাঁরা আছেন তাঁদের পাশে বসে কিছু অপ্রাসঙ্গিক রাজনৈতিক শক্তি প্রাসঙ্গিত হওয়ার চেষ্টা করছে, সেটাও দেখছি। সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে যেটা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের স্কুলশিক্ষা কার্যত অবলুপ্তির পথে।"
শমীকবাবু আরও বলেন, "এর জন্য রাজ্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, পর্ষদ, আদালত, মামলাকারী সকলকে নিয়ে একটা জায়গায় আসতে হবে, যাতে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যায়। নাহলে এটা একটা নন-এন্ডিং প্রসেস। অপরাধীদের কঠোরতম শাস্তি হোক, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক। কিন্তু এরাজ্যে যাদের মেধা প্রতারিত হয়েছে, যাদের জীবন থেকে ৫-৭ বছর লুঠ হয়ে গেছে, তারা যেন উপযুক্ত বিচার পায় ও নতুন নিয়োগ শুরু হয় এটাই আমাদের দাবি।" অন্যদিকে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হয় তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) সঙ্গেও। তবে স্থানীয়স্তরে খোঁজখবর না নিয়ে বিষয়টিতে কোনওরকম মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
আরও পড়ুন - সামনেই কার্তিক পুজো, জেনে নিন বাঁশবেড়িয়ার সেরা ১০ থিম