scorecardresearch
 

বিশ্বভারতীতে অশান্তি, TMC-CPIM-পুলিশকেই দায়ী করছেন উপাচার্য

বিশ্বভারতীতে অশান্তি, TMC-CPIM-পুলিশকেই দায়ী করছেন উপাচার্য। যা নিয়ে ফের নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, "বিশ্বভারতীতে যে আন্দোলন চলছে, সেখানে এসএফআই ও টিএমসিপির সদস্যরা রয়েছে। অর্থাৎ এর পিছনে তৃণমূল আর সিপিএমের ইন্ধন আছে।"

Advertisement
সিপিএম-তৃণমূল ও পুলিশকে ফের তোপ বিশ্বভারতীর উপাচার্যের সিপিএম-তৃণমূল ও পুলিশকে ফের তোপ বিশ্বভারতীর উপাচার্যের
হাইলাইটস
  • বিশ্বভারতীতে অশান্তির জন্য দায়ী সিপিএম-তৃণমূল
  • নিষ্ক্রিয় পুলিশও, দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের

ফের বিস্ফোরক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবার আন্দোলন নিয়ে সরাসরি সিপিএম, তৃণমূল ও রাজ্য পুলিশকে নিশানা করলেন তিনি। যা নিয়ে ফের নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। এমনিতেই রবি ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গত কিছু বছর ধরেই নানা কারণে বিবাদে জড়িয়ে খবরের শিরোনামে।তার অন্ত হওয়ার কোনও লক্ষ্মণ আশু নজরে পড়ছে না।

সিপিএম-তৃণমূলকে দায়ী উপাচার্যের

বৃহস্পতিবার বিশ্বভারতীর ছাত্র আন্দোলনে সরাসরি সিপিএম ও তৃণমূলকে দায়ী করলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তিনি বলেন, "বিশ্বভারতীতে যে আন্দোলন চলছে, সেখানে এসএফআই ও টিএমসিপির সদস্যরা রয়েছে। অর্থাৎ এর পিছনে তৃণমূল আর সিপিএমের ইন্ধন আছে"। বুধবার সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরলা হয় সেখানে উপাচার্যকে এই বক্তব্য দিতে শোনা গিয়েছে। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন বাংলাদেশ ভবনে আটকে থাকা আধিকারিকদের শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে এবং অশ্রাব্য গালিগালাজ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, কোনও বিশেষ রাজনৈতিক কারণে পুলিশও বিশ্বভারতীকে সাহায্য করছে না। এতে এই প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বভারতীতে ছাত্র আন্দোলন চলছে

প্রসঙ্গত গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বভারতীতে চলা ছাত্র আন্দোলন সোমবার থেকে তীব্র আকার ধারণ করে। ছাত্র আন্দোলনে স্তব্ধ হয়ে যায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ হয়ে যায় পঠনপাঠন, এদিন যে সব বিভাগে পরীক্ষা ছিল সেগুলিও বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার কলা ভবনে মাস্টার অফ ফাইন আর্টস(জেলারেল) সেমিস্টার-১ এর পরীক্ষা ছিল। সেটি আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীরা গিয়ে বন্ধ করে দেয়।

পরীক্ষা না দিলে ব্যাক

এদিকে পরীক্ষা বন্ধ হতেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয়, পরীক্ষাতে যে  সব ছাত্রছাত্রী অনুপস্থিত থাকবে তাদের ফেল হিসাবে দেখান হবে। মার্কসিটে তাকে “ব্যাক” দেখানো হবে। যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ছাত্রছাত্রীরা। তাদের অভিযোগ গত ১৬ দিন ধরে কর্তৃপক্ষের চাপের কাছে নতিস্বীকার করেনি ছাত্রছাত্রীরা। তাই এবার পরীক্ষাতে “ব্যাক” দেখানো হবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে।

Advertisement

অধ্যাপক আধিকারিকদের বাংলাদেশ ভবনে ঘেরাও

এদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সোমবার বিকালে বাংলাদেশ ভবনে অধ্যাপক, কর্মীদের  একটি বৈঠক ডাকে। সেখানে কর্মসচিব আশিস আগরওয়াল উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ছাত্রছাত্রীরা এসে বাংলাদেশ ভবনের গেট আটকে দেয়। কয়েক জন এর মধ্যে পালিয়ে যেতে পারলেও অধিকাংশ ভিতরে আটকে পড়েন।

সোমবার থেকে অধ্যাপক আধিকারিকদের বাংলাদেশ ভবনে ঘেরাও করে রাখেন বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা। তার মধ্যেই মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল পদত্যাগ করেন। মঙ্গলবার তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন উপাচার্যের কাছে। বুধবার ভোরে সবাইকে ঘেরাওমুক্ত করা হয়।

তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ আন্দোলন

তিন দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বভারতীর পড়ুয়ারা আন্দোলন চালাচ্ছেন। এই আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দাবি-দাওয়া আদায় না হওয়ায় পড়ুয়ারা পরীক্ষা এবং ক্লাস বয়কটের ডাক দেন। কিন্তু তাঁদের দাবি না মেনে, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ গত সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। তাতে বলা হয়, যে সকল পড়ুয়া পরীক্ষা দেবেন না, তাঁদের উত্তীর্ণ করা হবে না। তবে এরপর আন্দোলন আরও জোরদার হয়।

অন্যদিকে উপাচার্যের সরকারি বাসভবন পূর্বিতা ঘেরাও করে “অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ” বা এভিবিপি-র ছাত্রছাত্রীরা। যদিও মঙ্গলবার সকাল থেকে তারা ঘেরাও তুলে নেয়।  কিন্তু সোমবার বিকাল থেকে বাংলাদেশ ভবনে অধ্যাপক,আধিকারিকদের ঘেরাও করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এবং এসএফআই এর কয়েকশো ছাত্রছাত্রী।

সমর্থন এবিভিবিরও

এদিকে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সোমবার থেকে পড়ুয়াদের দাবির সমর্থনে আন্দোলনে নেমেছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাড়ি ঘেরাও করে তারা। উপাচার্যের বাড়ির গেটে ফেস্টুন বেঁধে সেখানেই শুয়ে পরে এবিভিপি সমর্থকরা। এর মধ্যে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রেস রিলিজ করে জানিয়ে দেয়, প্রথম শ্রেনি থেকে অষ্টম শ্রেনি পর্যন্ত পরীক্ষা হবে অনলাইনে। নবম শ্রেনি থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পরীক্ষা হবে অফলাইনে। খুব তাড়াতাড়ি হস্টেল এবং ক্যান্টিল খোলা হবে।

টানা ১৭ দিন ধরে বিশ্বভারতীতে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ।  পড়ুয়াদের দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে হস্টেল খুলতে হবে। অনলাইনে পরীক্ষা নিতে হবে। বিশ্বভারতীর মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার সূচি বদল করতে হবে। আদালতের রায়ে হস্টেল খোলার নির্দেশ দেওয়া হলেও, বাকি দুই দাবি এখনও পূরণ হয়নি। তবে হস্টেল সাময়িক ভাবে খোলা হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে আন্দোলনের তিব্রতা বাড়তেই পরীক্ষা সংক্রান্ত নোটিস  তুলে নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

 

Advertisement