মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোট নিয়ে মন্তব্য করে এবার বিতর্কে জড়ালেন কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের সময় নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় মমতার পায়ে চোটের প্রসঙ্গ টেনে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন একদা তৃণমূলের নেতা শিশির। বললেন, 'ভোট এলেই আহত হন। বিরুলিয়াতে নাকি শুভেন্দু মেরেছে। আরে শুভেন্দু মারলে মমতা বাঁচতেন না।' লোকসভা ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রীর চোট নিয়ে শিশিরের এই মন্তব্য নয়া মাত্রা যোগ করেছে এই পর্বে।
পূর্ব মেদিনীপুরে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়া প্রসঙ্গে শিশির বলেন, 'ভগবান জানে, কী হয়েছে। কপালে রক্ত ছিল। যখনই ভোট আসে তখনই আহত হন।' তারপরেই বিরুলিয়ায় মমতার পায়ে চোটের প্রসঙ্গ টেনে ওই মন্তব্য করেন প্রবীণ রাজনীতিক।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় পায়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী। সে সময় বিরোধীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগও ওঠে। সেই প্রসঙ্গই টেনে মমতাকে নিশানা করলেন শিশির। প্রবীণ সাংসদের মুখে এই ধরনের মন্তব্য 'নির্লজ্জ রাজনীতির একটা উদাহরণ' বলে সরব হয়েছে তৃণমূল।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার কপাল এবং নাকে সেলাই পড়েছে। আগের থেকে ভাল রয়েছেন মমতা। সেই ঘটনার পর সোমবার প্রথমবার প্রকাশ্যে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে দুর্ঘটনার পর সেখানে যান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়া নিয়ে এর আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, 'মাথা ঘুরছে, লো প্রেসার, ধপ ধপ করে পড়ে যাচ্ছে। পড়া শুরু হয়েছে উপর থেকে, নীচ অবধিও পড়া শুরু হবে।' শুভেন্দুর এই মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছিল তৃণমূল। এবার শুভেন্দুর বাবা শিশিরের মন্তব্য এই পর্বে নতুন করে বিতর্ক তৈরি করল।
অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে পড়ে গেলেন, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বিস্তর। এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমে জানান, 'পিছন থেকে ধাক্কা মারার জন্য পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।' এই বয়ান ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যদিও পরে এসএসকেএমের ডিরেক্টর ব্যাখ্যা দেন, 'শারীরিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে পিছন থেকে কেউ ধাক্কা মেরেছেন, এটা বলতে চাইনি। আসলে পড়ে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর মনে হয়েছিল, তিনি কোনও ধাক্কা খেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক সময় এরকম মনে হয়ে থাকতে পারে।' যদিও 'পিছন থেকে ধাক্কা মারা' মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।