রোজভ্যালি কাণ্ডে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও শ্রেয়া পান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআইকে চিঠি লিখবেন বলে জানালেন উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। সোমবার কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস সাংবাদিক সম্মেলনে এই দুজনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন কেন রোজভ্যালি মামলা কেন ওপেন হবে না ? লোকসভা নির্বাচনের আগেই তদন্ত হোক। নির্বাচনের সঙ্গে কোনও তদন্তের যোগ নেই।'
২০১৭ সালে রোজভ্যালিকাণ্ডে গ্রেফতার হন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে ওড়িশার ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। রোজভ্যালির কর্ণধার গৌতম কুণ্ডুর থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া, চিটফান্ড সংস্থার টাকাতে বিদেশ ভ্রমণ ও গাড়ি কেনার অভিযোগ ওঠে সুদীপের বিরুদ্ধে। তদন্ত সংস্থার তরফে এটাও অভিযোগ করা হয় যে সাংসদ প্যাডে সুদীপের করা সুপারিশেই গৌতম কুণ্ডুর ছেলে পার্ক স্ট্রিটে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হয়। পরবর্তী সময়ে সুদীপকে জামিন দেয় ওড়িশা হাইকোর্ট।
অন্যদিকে, রোজভ্যালিকাণ্ডে শ্রেয়া পাণ্ডেকে একসময় তলব করেছিল ED। অভিযোগ, রোজভ্যালির অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়েছে শ্রেয়া পান্ডের অ্যাকাউন্টে। চার্জশিটেও নাম ছিল শ্রেয়ার।
এই বিষয়ে তাপস বলেন, 'সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রেয়া পান্ডের মধ্যে একটা জায়গাতেই মিল আছে। দুজনেই রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে যুক্ত। একজন বেলে আছে। আর একজন চার্জশিটে। সেটাও কিন্তু আমার হাতে আছে। আমি সিবিআইকে এবং ইডিকে চিঠি লিখব। রোজভ্যালি মামলায় কেন ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে না সুদীপকে। ও আমার বাড়িতে ইডি পাঠিয়েছিল, আমারও জানতে ইচ্ছা করে কেন সুদীপ আমার বাডিতে ইডি পাঠাল। আজও জানতে পারলাম না। নির্বাচনের পরে জানার চেষ্টা করব।'
রবিবার মানিকতলা এলাকায় প্রচার করতে গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়েন তাপস রায়। তাঁর অভিযোগ শ্রেয়ার পান্ডের নির্দেশে তৃণমূলের লোকজন এই কাজ করেছে। কেন মানিকতলায় ভোট হচ্ছে না, জানতে চান তাপসের কাছে। তাঁকে কালো পতাকাও দেখানো হয়। মানিকতলা থানায় গোটা ঘটনাটি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাপস। এনিয়ে তিনি বলেন, 'আমার কাছে দাবি জানানো হচ্ছে মানিকতলা উপনির্বাচনের। এখন বিষয়টি হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। এতে আমি কী করব, আমার তো কিছু করার নেই। মানিকতলায় তৃণমূলের কর্মীদের কাছ থেকে অভিযোগ শুনতে শুনতে জেরবার হয়ে গিয়েছি। ওর সম্পর্কে আর কিছু বলতে চাই না। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন প্যারাসাইট পলিটিশিয়ান। একে ধরে, ওকে ধরে, এর মাথায়, ওর কাঁধে চড়ে রাজনীতি করে এসেছে। প্রথমে প্রিয়দা, এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝখানে কিছুদিন প্রণব মুখোপাধ্যায় আর সোমেন মিত্র। জীবনের প্রথম পদ কখনও যুব কংগ্রেসের সভাপতি হয়। ঠিক বাছা বেছেছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সী। আর আমরা সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি। আজকালের মধ্যে দিতে পারি চিঠি। একটা সর্বভারতীয় দলের প্রার্থীকে প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। এটি কি বিরাট বিপ্লব নাকি? আমিও করাতে পারি। কিন্তু আমি করব না।'