শনিবারের পর সোমবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ। তাঁর বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাধানোর অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে bangla.aajtak,in-কে কার্তিক মহারাজ বলেন,'আমি মামলা করব। ওঁর হাতে সিআইডি-পুলিশ আছে, উনি প্রমাণ করুন। এখানে আইসি, এসপি-দের কাছে রিপোর্ট নিন'।
কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্তিক মহারাজকে আক্রমণ করছেন? মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ বলেন,'আমি ওঁকেও (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সমর্থন করেছিলাম। তখন আমি ভালো ছিলাম। এখন হিন্দু সমাজের পাশে দাঁড়িয়েছি বলে খারাপ হয়ে গিয়েছি'। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের যোগ নিয়েও লুকোছাপা করেননি কার্তিক মহারাজ। তাঁর কথায়,'শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা আমার আশ্রমে এসেছেন। আমার সঙ্গে তৃণমূল নেতাদেরও সম্পর্কও ভালো। তৃণমূলের নেত্রী শাওনি সিংহ রায় আমার কাছে এসেছিলেন। বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকারের (ডেভিড) সঙ্গেও আমার যোগাযোগ রয়েছে'।
কার্তিক মহারাজ আরও বলেন,'মুর্শিদাবাদে মসজিদের পাশ দিয়ে হিন্দুরা শোভাযাত্রা নিয়ে যেতে পারে না। এটা নিয়ে বলা যাবে না? মমতার দলের নেতা হুমায়ুন কবির যখন বলেছেন, ৩০ শতাংশ হিন্দুকে গঙ্গায় ডুবিয়ে দেবেন, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন কোনও কথা বলতে পারলেন না?'
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে তাঁর মানহানি হয়েছে বলে চিঠিতে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও সারবত্তা নেই। সম্মানহানির চেষ্টায় অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছেন তিনি। ওই আইনি চিঠিতে আগামী ৪ দিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর বক্তব্যের জন্য জবাব চাওয়া হয়েছে। জবাব না দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানানো হয়েছে চিঠিতে।
সোমবার মমতা কী বলেছেন?
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন 'আমি কী বলেছিলাম? আমি রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে নয়। আমি কেন একটা ইনস্টিটিউশনের বিরুদ্ধে হব? কেন অসম্মান করব! কয়েকদিন আগে মহারাজ অসুস্থ ছিলেন, দেখতে গিয়েছিলাম। সেটা নয়। আমি বলেছি দু'একজনের কথা। গঙ্গাসাগরে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অফিস আছে। আশ্রম আছে। ওরা ভাল। ওরা ভালবাসে। আমি একটি লোকের নাম বলেছিলাম। তাঁর নাম কার্তিক মহারাজ। তিনি আমাদের এজেন্টকে বসতে দেননি। ভোটের আগে মুর্শিদাবাদে যে দাঙ্গা হয়েছে, তার হোতা ছিলেন উনি। আগে অধীর করতেন। এখন বিজেপি করেন। রেজিনগরে ভোটের ২ দিন আগে দাঙ্গা করেছিলেন, সেখানে ওঁর আশ্রম। আশ্রম চালান, আপত্তি নেই। উনি তৃণমূলের এজেন্টদের বসতে দেন না। ওখানে কিছু লোককে খেপিয়েছেন , যাঁরা ছানার ব্যবসায়ী। খবর আমিও রাখি। এলাকায় এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে বিজেপি করে বেড়ান। আপনি করুন। কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে রেখে করুন। লুকিয়ে লুকিয়ে কেন? আমি যা বলি, প্রমাণ ছাড়া বলি না। আমাদের রাজ্যে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেবে না, দাঙ্গা করবে, আমি ছেড়ে দেব!'