লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগরের 'রাজমাতা' অমৃতা রায়কে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আর তাঁর বিরুদ্ধেই এবার সরাসরি আক্রমণে নামল তৃণমূল। কুণাল ঘোষের দাবি, 'কৃষ্ণনগরের রাজপরিবার ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিল... যে সাভারকারের দল গান্ধীকে হত্যা করেছিল তারা ব্রিটিশদের সমর্থনকারী পরিবার থেকেই কাউকে মনোনীত করবে, সেটাই স্বাভাবিক।'
কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের লোকসভা প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। তাঁর বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করা ও 'সুবিধা' গ্রহণের বিনিময়ে পার্লামেন্ট অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল যে, কৃষ্ণনগর থেকে বিজেপির টিকিটে লড়তে পারেন অমৃতা রায়। রাজপরিবারে সদস্য হিসাবে তিনি সেখানে বেশ পরিচিত মুখ। bangla.aajtak.in-এর তরফে সেই সময়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তখন তিনি জানান, এই নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দলের ঘোষণার আগে, তিনিই দাঁড়াচ্ছেন কিনা, তা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। রবিবার দ্বিতীয় দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। আর তাতে দেখা যায়, আগের জল্পনাই সঠিক। কৃষ্ণনগর থেকে অমৃতা রায়কে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির।
এরপরেই তাঁর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে নেমে পড়ে তৃণমূল। কুণাল ঘোষ বলেন, 'ইতিহাস বলে সিরাজউদ্দৌলা যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন, তখন কৃষ্ণনগরের রাজপরিবার ব্রিটিশদের সাহায্য করেছিল৷ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ব্রিটিশ বাহিনীকে তাঁর সেনাবাহিনী দিয়ে সাহায্য করেন। এটা খুবই স্বাভাবিক যে সাভারকারের দল, যারা গান্ধীকে হত্যা করেছিল তারা ব্রিটিশদের সমর্থনকারী পরিবার থেকে কাউকে মনোনীত করবে। আর মহুয়া মৈত্র দেশের জন্য দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছেন।'
কৃষ্ণনগর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য দেশজুড়ে পরিচিত। ১৮ শতকে, কৃষ্ণনগরের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় শতকে তাঁর জ্ঞান ও শাসন পরিচালনার জন্য পরিচিত ছিলেন।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন অমৃতা রায়কে প্রার্থী করার মাধ্যমে কৃষ্ণনগরে কিছুটা হলেও শক্তি বৃদ্ধি পাবে বিজেপির। তৃণমূল কংগ্রেসের মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে প্রায় সমানে টক্কর দেবে গেরুয়া শিবির।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, নদিয়া জেলা নেতৃত্বই প্রথম অমৃতা রায়কে প্রার্থী করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। পরে, তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্ব যোগাযোগ করে। বেশ কয়েক দফার আলোচনার পর ভোটে লড়তে রাজি হন অমৃতা রায়।
মহুয়া মৈত্র ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে জিতেছিলেন। ৬,১৪,৮৭২ ভোট পেয়েছিলেন। অন্য়দিকে বিজেপির কল্যাণ চৌবে ৫,৫১,৬৫৪ ভোট পেয়েছিলেন।